এম মেহেদী সানি, কলকাতা, আপনজন: শনিবার প্রকাশিত হয়েছে জুনিয়ার রিসার্চ ফেলো ও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরের সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা ‘নেট’-এর ফল। ইউজিসির ্এই নেট পরীক্ষার আয়োজক ছিল ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি। ইউজিসি নেট-এর ২০২১ সালের ডিসেম্বর ও ২০২২ সালের জুন মাসের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে শুক্রবার তাতে দেখা গেছে, বাংলা বিষয়ে ১০০ পার্সেন্টাইল নম্বর পেয়ে শীর্ষ স্থান দখল করেছেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আফরুজা খাতুন। এর ফলে আফরুজা জুনিয়র রিসার্চ ফেলো ও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরে পদে যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। বাংলা বিষয়ে মোট ৫৪৩১ পরীক্ষার্থীর মধ্যে আফরুজা খাতুনের প্রাপ্ত নম্বর সর্বমোট ১০০ পার্সেন্টাইল। তবে পেপার-১ এ পেয়েছেন ৯৮.৯৫ পার্সেন্টাইল ও পপার-২ এ পেয়েছেন ৯৯.৯৬ পার্সেন্টাইল। আফরুজা খাতুনের বাড়ি কোচবিহার জেলার মাথাভাঙা মহকুমার শীতলকুচি বিধানসভার অন্তর্গত ছোট শালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনস্ত বড় গদাইখোড়া গ্রামে। বাবা হাকিম মিঞা ও মা নুরবানু বিবির দুই কন্যা আফরুজা খাতুন ও মোনালিসা খাতুন। বড় মেয়ে আফরুজা খাতুনের ইচ্ছা ছিল উচ্চশিক্ষা অর্জনের পর অধ্যাপনা করার। তাই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে বাংলা নিয়ে পড়ার পর নেট পরীক্ষায় বসেন। আর তাতেই তার দারুণ সাফল্য এনে দেয়। কোচবিহারের প্রত্যন্ত গ্রাম বড় গদাই খোড়া থেকে উঠে আসা আফরুজা খাতুন ছোটবেলা থেকেই বরাবর মেধাবী।
তার সম্পর্কে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইফুল্লা শামিম আপনজন-কে জানান, যখন আমরা ছাত্রী হিসেবে ওকে সরাসরি পেয়েছিলাম তখন এক চোখে চোখে পড়া যে সমস্ত ছেলে মেয়ে ছিল তাদের মধ্যে কিন্তু ও ছিল না। তবে ব্যবহারে আচারে-আচরণে খুবই ভালো ছিল। যেহেতু কোচবিহারের বাড়ি ছিল ও যখন এমএ পাশ করলো তখন নেট সেট পড়বে বা পিএইচডি করবে এই উচ্চ আকাঙ্ক্ষা ওর বরাবরই ছিল। কিন্তু ওর অর্থনৈতিক অবস্থা এমন ছিল না যে কলকাতায় থেকে পরবর্তী পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতে পারে। ফলত ওকে যখন গ্রামে ফিরে যেতে হল ওর মনটা খুবই খারাপ ছিল। কিন্তু আমরাই বলেছিলাম যাও বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করো আরো ছেলেমেয়েরা আছে যারা বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করে তাদের মত করেই তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের সাহায্য নাও, এখন তে ফোনের যোগাযোগ, ফোনকে ব্যবহার করে যতটা সম্ভব নিজের মতো করে তৈরি হও। তারপর মাঝেমধ্যে যখনই কলকাতা আসতো তখনই দেখা করতো কি করছে না করছে কতোটা অগ্রগতি হয়েছে, তবে ওর উচ্চ আকাঙ্ক্ষা ছিল প্রয়াস ছিল সব মিলিয়ে এই সাফল্য পেয়েছে। এই সাফল্য আমাদের খুবই আনন্দ দিয়েছে। ওর আলোয় আমাদের আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আলোকিত, আমরাও আলোকিত, এটা অনেক ভালোলাগার। তবে এটা আবারও বলছি ও যেটা করেছে কঠিন দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে প্রবল প্রচেষ্টার মধ্যে দিয়ে এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই যে একটা বিরাট সম্ভাবনা ওর মধ্যে ছিল সেই সম্ভাবনা টা বাস্তবায়িত হয়েছে তা নয়। ও কিন্তু সম্ভাবনাটা নিজের প্রয়াস দিয়ে তৈরি করেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct