স্বপ্ন উড়ান
শংকর সাহা
সেদিন স্কুল থেকে এসেই মার কাছে ছুটে যায় ঋষি।“মা,ওমা,কোথায় তুমি...”পাশের ঘর থেকে সন্ধ্যাদেবী ছেলের চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে আসে। “ কি হলো ঋষি এমন করে ডাকছিস যে?” মা জানোতো,আজ স্কুলে ভল্টু বলেছিলো ও নাকি কাগজের নৌকো বানানো শিখেছে।আমায় শেখাবে মা?” ছেলের বায়না শুনে সন্ধ্যাদেবী অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে। কাগজের নৌকো! “ বেশ হয়েছে,এখন খেতে বোস।পরে বানিয়ে দেবো ঋষি” ছেলেকে খেতে দিতে দিতে ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে সন্ধ্যাদেবীর। ছোটোবেলায় বাবা পাশে বসে কতই না শেখাতেন কাগজের নৌকো ,তালপাতার ভেঁপু বানানো। আজ সেসব কথা বড়ই মনে পড়ছে তার। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে এলো। ছেলের বায়না যেন থামেনা।রান্না ঘরের সমস্ত কাজ সেরে ঘরে আসতেই ঋষি ছুটে আসে। হাতে তার দুটো সাদা কাগজ।ছেলের আবদার মেটাতে ঋষির হাত থেকে কাগজগুলো নিয়ে নৌকো বানাতে বসে।ঋষি একমনে মার নৌকো বানানো দেখে। হঠাত ঋষি মাকে জিজ্ঞাসা করে,” মা,তুমি বলেছিলে দাদান তোমায় নৌকা কাগজের বানানো শেখাতেন? কিন্তু এখন আমাদের আর কেউ নৌকো বানানো শেখায় না কেন? ছেলের কথা শুনে সন্ধ্যাদেবী স্তম্ভিত হয়ে যায়। “ঋষি আজ যে সমাজটা অনেক আধুনিক হয়ে গেছে বাবা। কে শেখাবে এগুলো?” ঋষি মার হাত থেকে নৌকোটি নিয়ে খেলতে বসে। জানালার পাশ দিয়ে বাইরে একভাবে তাকিয়ে থাকে সন্ধ্যাদেবী। শ্রাবণের শেষ বিকেলে আজ যেন আকাশে ঘন কালো মেঘ জমেছে। বাইরে সজোরে হাওয়া বইছে..
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct