আপনজন ডেস্ক: রবিবার গুজরাতের ভদোদরার মরবি সেতু ছিঁড়ে কমপক্ষে ১৪০ জনেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে। এদের বেশিরভাগই মহিলা এবং শিশু, যারা তাদের ছটপুজো উদযাপন করতে এসেছিল। মর্মান্তিক সেই ঘটনার সাক্ষী বহু মানুষ। কিন্তু সেই মৃত্যু সংখ্যা আরও বেড়ে যেত যদিও না বেশ কয়েকজন সাহসী যুবক মচ্ছু নদীতে ছাঁপিয়ে পড়ে তাদেরকে বাঁচানোর চেষ্টা করতেন। আর এই বাঁচানোর চেষ্টায় কোনও ধর্ম বাধা মানেনি। বরং, নদীতে পড়ে প্রাণ যাওয়া থেকে রক্ষা করাই ব্রত হয়ে ওঠে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও। ছট পুজো দেখতে প্রায় শ পাঁচেক পুরুষ মহিলা শিশু যখন মরবি সেতু ছিঁড়ে মচ্ছু নদী পড়তে থাকনে তখন চুপ করে থাকতে পারেন বেশ কযেকজন মুসলিম যুবক। নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরে প্রায় ৫০ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছেন মরবির বান্দিা হুসেইন পাঠান। তার সঙ্গে নাইম শেখও উদ্ধারে নেমে পড়েন। এছাড়া আরও অনেকে আছেন যাদের নাম অজানা। তারা কোন ধর্মের মানুষ তা বিচার না করে নিজেদের মূল্যবান জীবনের কথা না ভেবে জীবন বাঁচাতে আলাদা সংগ্রামে নেমে পড়েন। আর তা দাঙ্গার ক্ষত ভুলে গুজরাতি সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা প্রশংসায় ভরে গেছে। প্রাণ বাঁচাতে নাইম শেখ তার পাঁচ বন্ধুর সাথে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে একের পর একজনকে বাাঁচানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সাঁতরানোর সময় এক বন্ধু অতিরিক্ত জল খেয়ে ফেলায় প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে নিজেই প্রাণ হারান। নাইম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের (তার বন্ধুরা) মনে শুধু একটাই কথা ছিল- যত বেশি সম্ভব বাঁচানো। ১৫০ বছরের পুরানো ব্রিজের তারগুলি ধসে পড়ার সময়, তৌফিক ভাই এবং হুসেন পাঠান অনেককে ছিঁড়ে যাওয়া সেতুর উপর ঝুলতে দেখেছিলেন। নদীতে ভেসে গিয়ে প্রাণপণ বাঁচাতে সবাই সাহয্যের আর্তি জানান। তখন আর তারা চুপ করে থাকতে পারেননি। এদেরকে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স করে হাসপাতালে নিয়ে যান তৌসিফ ভাই নামে এক মাঝ বয়সি ব্যক্তি। অ্যাম্বুলেন্স চালক হুসেন বেশ কয়েকজনকে সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যেতে সহায়তা করেছিলেন, যদিও তার নিজের চাচাত ভাই এই ট্র্যাজেডিতে মারা যান। স্থানীয় মিলন প্রকাশভাই আহত ও মৃতদের সারারাত হাসপাতালে নিয়ে যেতে সাহায্য করেন। হাসপাতালে এইসব আগতদের নিয়ে যাওয়া হলে কে কোন ধর্মের মানুষ না দেখে সেখানে তাদেরকে গায়ে লেগে থাকা রক্তের দাগ পরিষ্কার করতে থাকেন সমাজকর্মী হাসিনা। অাত্মীয়দের জন্য তিনি মৃতদেহগুলি শনাক্ত করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct