সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: এখনই বঙ্গ বিজেপিতে সভাপতি পদে রদবদল চাইছে না আরএসএস। তাদের লক্ষ্য অতি দ্রুত এই রাজ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন প্রয়োগ করা। আগামী বছর ২০২৩ সালের মধ্যে এই আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ হোক এটি চায় সংঘ। এর জন্য এখন থেকেই সংঘের প্রতিটি সদস্যকে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে এলাকাভিত্তিক নজরদারি শুরু করতে হবে। বৃহস্পতিবার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা সংঘের সদস্য অমিতাভ চক্রবর্তী বাড়িতে আর এস এস নেতৃত্বের বৈঠক ছিল। বিজয়া সম্মিলনী উপলক্ষে এই বৈঠকে আলোচনায় উঠে আসে বঙ্গ রাজনীতি এবং সংঘের আগামী দিন চলার পথের দিশা। বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি এবং প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও রাজ্যে বিজেপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সংঘের সদস্য সতীশ ধন্দ। এছাড়া ছিলেন এ রাজ্যে সংঘের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিত্বরা। বৈঠকে আরএসএসের কেন্দ্রীয় কমিটির বার্তাকে সামনে রেখে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় সংঘ এখনই এ রাজ্যে বিজেপির সভাপতি পদে রদবদল চাইছে না। সংঘের সদস্য নয়, এমন কোন ব্যক্তিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদে আসীন করার বিরোধী আরএসএস। তাদের মূল লক্ষ্য হলো এখনই বিভিন্ন দুর্নীতি কাণ্ডে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করার আগে এই রাজ্যে অতি দ্রুত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বলবৎ করা।
সংঘ চাইছে আগামী বছর অতি দ্রুত রাম মন্দিরের কাজ শেষ করে তার উদ্বোধন করার পরেই সময় নষ্ট না করে নাগরিক সংশোধনী আইন এ রাজ্যে প্রয়োগ করতে হবে। কারণ সংঘ মনে করে ওই আইন প্রয়োগ হলে বর্তমানে রাজ্যের ক্ষমতায় থাকা শাসক দলের ভোট ব্যাঙ্কে বড় ধরনের আঘাত আসবে। যা কিনা আগামী দিন সংঘকে এই রাজ্যে সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে এবং গেরুয়া শিবিরকে শাসন ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হতে মসৃণ পথ করে দেবে। তবে নাগরিকত্ব সংশোধনীয় আইন প্রয়োগ হওয়ার পর এ রাজ্যে বিগত দিনের মতো পুনরায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। তাই এখন থেকেই সংঘের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের এলাকাভিত্তিক নিজেদের সংগঠনকে সেই ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যাতে কোন আইনশৃঙ্খলা অবনতি হলে সংঘের সদস্যরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। শুধু তাই নয় ওই বিজয়ের সম্মেলনীতে সংঘের বক্তারা তাদের বক্তব্যে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি বিভিন্ন দুর্নীতির তদন্তে এ রাজ্যের হেভিওয়েটদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর যদি হেফাজতের নেয়, সেক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে। তাই সংঘ চায় না এই মুহূর্তে হেভিওয়েট দের কেন্দ্রীয় এজেন্সি গ্রেফতার করে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির দরুন তাকে কেন্দ্র করে অযথা সময় নষ্ট হোক। কারণ এর ফলে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন প্রয়োগের পদ্ধতিতে অতিরিক্ত সময় বিলম্বিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যাবে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, ওই রুদ্ধ দ্বার বিজয়া সম্মেলনীতে শুধুমাত্র সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সেখানে উপস্থিত থাকার খবর থাকলেও বাস্তবে তা রূপ নেয়নি। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে বেশ কয়েকদিন থেকে বিজেপি রাজ্য সভাপতিদের রদবদল হবে বলে একাধিক খবর রটতে শুরু করেছে সর্বত্র। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে আসীন হবেন এবং আগামী দিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হবেন মনোজ টিগগা বলে সোশ্যাল প্লাটফর্মে খবর ছড়াতে শুরু করেছে। কিন্তু সেই যাবতীয় জল্পনা কল্পনায় জল ঢেলে দিল বৃহস্পতিবার আরএসএসের বিজয়া সম্মিলনী। সংঘ পরিচালকরা জানিয়ে দিল সবই রটনা। এখনই হচ্ছে না বদল রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct