আপনজন ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশ সরকার এক নির্দেশ জারি করে বলেছিল, সে রাজ্যের মাদ্রাসাগুলিকে নিয়ে সমীক্ষা রিপোর্ট করার। সেই রিপোর্ট সম্পর্কে সম্প্রতি সাহারানপুর জেলা সংখ্যালঘু কল্যাণ আধিকারিক ভরত লাল গৌর জানিয়েছেন, সাহারানপুরে মোট ৭৫৪টি মাদ্রাসা সরকারি ভাবে নিবন্ধিত রয়েছে। যদিও ওই জেলায় সরকারের কাছে নিবন্ধিভুক্ত হয় এমন মাদ্রাসার সংখ্যা ৩০৬টি। তার মধ্যে রয়েছে দারুল উলুম দেওবন্দের মতো প্রখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই তথ্য প্রকাশের পর মাদ্রাসা সমীক্ষার নামে প্রকৃত কী রহস্য তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে সংখ্যালঘু মহলে। এ নিয়ে সংখ্যালঘু মহল থেকে বলতে শোনা যায়, আসলে সব বেসরকারি মাদ্রাসাকে সরকারি নিবন্ধমুক্ত করতে চায়। এর ফলে, তারা পাঠন পাঠন সম্পর্কে সরকারি নির্দেশিকা মানতে বাধ্য হবে। যদিও সমীক্ষায় সাহারানপুর জেলায় যে ৩০৬টি বেসরকারি মাদ্রাসার উল্লেখ করা হয়েছে তার সব কটি একেবারে পুরোপুরি ইসলামি মাদ্রাসা। এই সব মাদ্রাসায় মাওলানা, মুফতি, ক্বারী, কুরআনে হাফিজ হওয়ার জন্য পড়াশুনা করানো হয়। সেই পাঠ্যসূচিতে কি কি আছে সরকার জানে না। এবার উত্তরপ্রদেশ সরকার ওই সব মাদ্রাসাগুলিতে বিজ্ঞান, অঙ্ক প্রভৃতি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। প্রয়োজনে অর্থ সাহায্য করার পরিকল্পনা যোগী সরকারের। এর ফলে, এই দারুল উলুম দেওবন্দের মতো মাদ্রাসাগুলোকে তখন আইনের বেড়াজালে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। তারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল উত্তর প্রদেশের সংখ্যালঘু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দানিশ আজাদ আনসারির মুখে। এ বিষয়ে দানিশ আজাদ আনসারি বলেন, অস্বীকৃত মাদ্রাসাগুলির জরিপ পরিচালনা করার জন্য সরকারের লক্ষ্য হল সমস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য সামগ্রিক কল্যাণ নীতি বিকাশে সহায়তা করা। তিনি বলেন, সরকারের কল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধা তারা পেতে চায় কি না, সেটা মাদ্রাসার ব্যাপার। রাজ্য মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য তাদের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি বলেন, ‘সমীক্ষাটি সরকারকে শিক্ষার্থীদের সঠিক সংখ্যা খুঁজে বের করতে সহায়তা করবে, যাতে আমরা তাদের কল্যাণের জন্য একটি সামগ্রিক নীতি তৈরি করতে পারি। বর্তমানে উত্তর প্রদেশের ১৬,৫১৩ টি স্বীকৃত মাদ্রাসায় ২০ লক্ষ শিক্ষার্থী রয়েছে এবং ৭,৫০০ টি অতিরিক্ত অস্বীকৃত মাদ্রাসায় প্রায় ১৫ লক্ষেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। সকল মুসলিম শিশুকে বড় হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। তাদের ইসলাম ও ধর্মীয় পাঠ্য অধ্যয়নের সমস্ত অধিকার রয়েছে, তবে কম্পিউটার, বিজ্ঞান এবং অন্যান্য বিষয়ও শেখানো দরকার। তাদের ব্যক্তিত্বের উন্নয়ন এবং নতুন বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হওয়া সরকারের লক্ষ্যের অংশ,” মন্ত্রী যোগ করেন। জেলা সংখ্যালঘু কল্যাণ আধিকারিক ভরত লাল গৌর শনিবার পিটিআইকে জানিয়েছেন, সাহারানপুরে মোট ৭৫৪টি মাদ্রাসা নিবন্ধিত রয়েছে। জেলায় অস্বীকৃত মাদ্রাসার সংখ্যা ৩০৬টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজ্যের মাদ্রাসাগুলির উপর সমীক্ষার অংশ হিসাবে এই তথ্য সরকারের সাথে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct