পুজোর মণ্ডপগুলিতে নানা মানুষের ভিড় দেখা যায়। দুর্গাপুজোর মধ্যে রয়েছে ‘বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য’-র ছোঁয়া।’ ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে বাঙালির এই উৎসব বিশেষ তাৎপর্য বহন করে । প্রতিটি জাতিরই বিশেষ সাংস্কৃতিক দিক রয়েছে; যা তার ঐতিহ্যের পরিচয় দেয় । কিন্তু কলকাতার এই দুর্গাপূজাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে কতটা প্রভাব ফেলবে সেটাও পর্যালোচনা করা দরকার । কারণ, সমাজে এর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে । এ নিয়ে লিখেছেন মোসাররাফ হোসেন।
ইউনেস্কোর অস্থাবর সংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় এ বছর স্থান পেয়েছে কলকাতার দুর্গাপূজা। যা বাঙালির কাছে এক গৌরবের বিষয় ।নিঃসন্দেহে এই সম্মান বাংলার মুকুটে নয়া পালক যোগ করল। ধর্ম এবং শিল্পকলার মেলবন্ধনের একটি প্রকৃত উদাহরণ বাংলার দুর্গোৎসব। অজস্র শিল্পী, শ্রমিকদের প্রতিভার দ্বারা এই উৎসব সমৃদ্ধ হয়। জাতি-ধর্ম ও বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে সকলেই উৎসবের দিনগুলিতে সামিল হন। পুজোর মণ্ডপগুলিতে সমস্ত রকমের মানুষের ভিড় দেখা যায়। দুর্গাপুজোর মধ্যে রয়েছে ‘বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য’-র ছোঁয়া।’ ধর্মীয়,সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে বাঙালির এই উৎসব বিশেষ তাৎপর্য বহন করে ।প্রতিটি জাতিরই বিশেষ সাংস্কৃতিক দিক রয়েছে ;যা তার ঐতিহ্যের পরিচয় দেয় ।কিন্তু কলকাতার এই দুর্গাপূজাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে কতটা প্রভাব ফেলবে সেটাও পর্যালোচনা করা দরকার ।কলকাতার দুর্গাপূজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যাপক প্রভাব রয়েছে । তবে ইউনেস্কোর এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি কতটা নতুন প্রভাব ফেলবে অর্থনৈতিক সম্ভাবনায় ! দুর্গোৎসবকে নিয়ে সামাজিক উদ্দীপনা ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রসারতা লাভ করেছে।তাই নতুনভাবে কতটা প্রভাব ফেলবে তা সময় বলবে।যেকোনো উৎসব নির্দিষ্ট অঞ্চলের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে । এক্ষেত্রে কলকাতার দুর্গাপূজাও তার ব্যতিক্রম নয় ।
‘উৎসব’ আমাদের দেশের মানুষের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি-পেশা সব ধরনের মানুষের কাছেই উৎসব একটি প্রত্যাশিত আয়োজন। উৎসবের সাথে অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। উৎসবকে ঘিরে তৈরি হয় বাড়তি চাহিদা। সেই চাহিদার জোগান দিতে বাড়তি সরবরাহের প্রয়োজন পড়ে। বাড়তি জোগান আসে বাড়তি উৎপাদন থেকে। এই অতিরিক্ত উৎপাদনের কাজটি করতে গিয়ে বাড়তি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। এভাবেই অর্থনীতিতে নতুন মাত্রায় গতি আসে।গুরুত্বপূর্ণ উৎসবগুলির মধ্যে ‘দুর্গাপূজা’,ঈদ এবং ‘পহেলা বৈশাখ’ অর্থনীতির ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে । উৎসবগুলোকে কেন্দ্র করে উৎপাদন ও ব্যবসার পূর্বপ্রস্তুতি চাঙ্গা থাকে এবং অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রাণ সঞ্চার করে। তবে ‘করোনা অতিমারি’র কারণে বিগত দুটি বছরে উৎসবকে কেন্দ্র করে বেচাকেনা মন্দ হওয়ায় অর্থনীতিতেও ধ্বস নেমেছে। করোনা অতিমারির সময় মানুষ একটি অচল অর্থনীতিতে উৎসবের দিনগুলো কাটিয়েছি। বাঙালির বড় উৎসব দুর্গাপূজা। এই দুর্গাপূজা অর্থনীতিতে কীরূপ প্রভাব ফেলে তা দেখে নেওয়া যেতে পারে।একটি পূজামণ্ডপে প্রতিমা তৈরি, আলোকসজ্জা, প্যান্ডেল ডেকোরেটর্স ,ঢাকী, থিম শিল্পী এবং অজস্র পণ্য বিক্রেতা সহ পুরোহিতদের খরচ বাবদ দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে দেশের অর্থনীতিতে প্রচুর টাকার লেন দেন হয়ে থাকে।করোনা অতিমারির আগের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গে পুজোর সময় তৈরি হয়েছিল প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকার সৃজনশীল অর্থনৈনীতি ।ফলে পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে দুর্গাপূজার অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে ।সাম্প্রতিক ইউনেস্কোর ‘দুর্গাপূজা’কে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পশ্চিমবাংলা তথা ভারতের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দরজাকে আর একটু প্রশস্ত করলো বৈকি।তবে ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতি ভবিষ্যতে অর্থনীতিকে কতটুকু চাঙ্গা করতে পারবে,তা সময় বলবে ।ঐতিহ্য,সংস্কৃতি,বিভেদের মাঝে ঐক্য, সম্প্রীতিতে সহাবস্থান বজায় থাকুক । যে কোন উৎসবকে কেন্দ্র করে অর্থনীতিরও অগ্রগতি হোক!
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct