সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: বাংলার বুকে শিক্ষকতার পেশা এখনও হাজারও অভাব, অভিযোগ, দুর্নীতির মধ্যেও সম্মানটা ধরে রাখতে পেরেছে। মানুষ এখনও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শ্রদ্ধার চোখেই দেখেন। কিন্তু শুনলে অবাক হয়ে যাবেন এই শিক্ষক-শিক্ষিকা হওয়ার জন্য বাংলার বুকে ডিএলএড কোর্স করতে কলেজগুলিতে পড়ুয়া পিছু ৫ হাজার টাকা করে নিয়েছিল। যদিও কেন এই টাকা নেওয়া হয়েছিল সে বিষয়ে কোনও কলেজই কোনও যথাযথ ব্যাখা দিতে পারেনি। আর তাঁর জেরেই ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের আধিকারিকদের ধারনা এটা আসলে ছোট আকারের দুর্নীতি, যার পরিমাণ ৩১ কোটি টাকার আশেপাশে। এখন সেই ঘটনার জেরেই ইডির আধিকারিকেরা পৃথক তদন্ত শুরু করেছেন।বাংলায় ডিএলএড কলেজগুলিতে ভর্তির জন্য অফলাইন প্রক্রিয়া চালু আছে। তার জেরে কোন কলেজ কোন পড়ুয়ার কাছ থেকে ঠিক কত টাকা নিচ্ছে তা সবসময় জনসন্মুখে আসে না যদি না কোনও পড়ুয়া তা সামনে আনেন। রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে ইডির আধিকারিকেরা জানতে পেরেছেন ডিএলএড কোর্সে অফলাইনে ভর্তির জন্য কলেজগুলি পড়ুয়াপিছু ৫ হাজার টাকা করে নিত। ইডির তরফে এর আগেই আদালতে তুলে ধরা হয় মানিক ভট্টাচার্যের ছেলের সংস্থার সঙ্গে ৫৩০টি ডিএলএড কলেজকে পরিষেবা দেওয়ার চুক্তির বিষয়টি। প্রতিটি কলেজ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বিনিময়ে কিছুই পরিষেবা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এখন ইডির আধিকারিকদের ধারনা ডিএলএড কলেজগুলিতে ভর্তির ক্ষেত্রে নেওয়া এই বাড়তি ৫ হাজার হিসেব বহির্ভূত টাকা কার্যত মানিকের নির্দেশেই নেওয়া হয়েছে। বাংলাজুড়ে সেই খাতে প্রায় ৩১ কোটি টাকা উঠেছে। এই টাকা কোথায় আর কার কাছে রয়েছে, গোটা বিষয়টির সঙ্গে মানিক নিজে বা তাঁর ছেলের সংস্থা কতখানি জড়িত সেটাই এখন খতিয়ে দেখতে চাইছেন ইডির আধিকারিকেরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct