আপনজন ডেস্ক: কংগ্রেস নেতা শশী থারুর মঙ্গলবার বলেছেন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দু ঋষি সুনাকের ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়া থেকে ভারতের শিক্ষা নেওয়ার আছে। হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ বা জৈন নয় এমন কেউ কি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারে, সেই জিজ্ঞাস্য রেখে শশী থারুর ‘দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের’ ক্ষমতায়নের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তার যুক্তি খাড়া করেন। তিনি বলেন, আমরা কি এখনও এমন একটি দিন কল্পনা করতে পারি - আমাদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় হিন্দু, জৈন বা শিখ বা বৌদ্ধ নয় এমন কেউ আমাদের জাতীয় সরকারের (প্রধানমন্ত্রী হিসাবে) নেতৃত্ব দিতে পারে? বিজেপি এর থেকে অনেক পিছনে রয়েছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক যে হিন্দুধর্মের একজন অনুসারী ছিলেন তা উল্লেখ করে থারুর বলেন, কীভাবে ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল হিন্দুদের ‘পশুতান্ত্রিক ধর্মের একটি পশুবাদী মানুষ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। থারুর আরও বলেন, ‘আপনি কি কল্পনা করতে পারেন যে, একজন খ্রিস্টান বা মুসলিমকে ভারতের জন্য একজন উপযুক্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিজেপি মেনে নেবে? তিনি জানান, ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি, যারা হিন্দুত্ববাদ বা ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদকে তার মতাদর্শ হিসাবে সমর্থন করে, তাদের কোনও মুসলিম সাংসদ নেই। অথচ, সোনিয়া গান্ধি জন্মসূত্রে ইতালীয় ও খ্রিস্টান হলেও তিনি কংগ্রেসের জযের পর তাকেই প্রধানমন্ত্রী করার পথ প্রশস্ত ছিল। কিন্তু তিনি মনমোহন সিংকে সেই পদে বসিয়ে নিজে সরে দাঁড়ালেন। সেই সময় বিজেপি সুষমা স্বরাজ যিনি পরবর্তীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রী হয়েছিলেন, তিনি হুমকি দিয়েছিলেন যদি সোনিয়া গান্ধি প্রধানমন্ত্রী হন তবে তিনি মাথা ন্যাড়া করে দেবেন। যদিও কংগ্রেস বলেছে শশীর থারুরে বক্তব্য দলের নয়। এটি তার একান্ত ব্যক্তিগত।
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘ইংল্যান্ড একজন হিন্দু, লাল চামড়ার নয়, এমন কাউকে প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু ভারতের সংসদে বিজেপি-র তরফে কোনও মুসলিম সদস্যও নেই। শিখ প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। মুসলিম রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। আদিবাসী রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। কিন্তু ক্ষমতার প্রধান জায়গায় একজন মুসলিম নেই। বিজেপি-র এ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত, জাত, ধর্ম নয়, যোগ্যতা দেশ চালানোর শেষ কথা। এমনকি সোনিয়া গান্ধীকে নিয়ে সুষমা স্বরাজ, উমা ভারতীরা বলেছিলেন উনি প্রধানমন্ত্রী হলে মাথা মুড়িয়ে নেবেন। “আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের স্বীকার করা দরকার - এবং আমি ব্রিটিশ বর্ণবাদের সমালোচক হয়েছি - যে তারা বর্ণবাদের ইতিহাসের পরে তাদের নেতা হিসাবে বাদামী চামড়ার হিন্দু হিসাবে অভিষিক্ত করার জন্য বেছে নিয়েছে। তারা তাদের সবচেয়ে খারাপ বৈশিষ্ট্যগুলি ছাড়িয়ে গেছে,” তিনি বলেন। ঋষি সুনাক “এমন একটি জাতিসত্তা থেকে এসেছেন যা অতীতে ব্রিটিশরা নিকৃষ্ট বলে মনে করত”, মিঃ থারুর আরও যোগ করেন, যেদিন মিঃ সুনাককে লিজ ট্রাসের উত্তরাধিকারী হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছিল, যাকে মাত্র ছয় সপ্তাহ পরে পদত্যাগ করতে হয়েছিল কারণ যুক্তরাজ্যমূল্য-বৃদ্ধি সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল। “আমি আনন্দিত যে আমরা এটি উদযাপন করছি কারণ আমি আশা করছি যে এটি আমাদের নিজের দেশের প্রতিফলন ঘটাবে,” মিঃ থারুর বলেন, “ঋষি সুনাকের বিজয় থেকে আমরা যা শিখতে পারি তা হ’ল জাতি অবশ্যই একটি ফ্যাক্টর তবে একমাত্র নয়। তিনি আরও বলেন, ‘বিজেপি অযৌক্তিক আচরণ করছে, যখন তারা দাবি করে যে ব্রিটিশরা যেখানে পৌঁছেছে, সেখানে আমরা ইতিমধ্যে পৌঁছে গেছি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct