সেক আনোয়ার হোসেন, তমলুক, আপনজন: অবসর বলে কোনও শব্দ নেই তাঁর অভিধানে তাই সরকারিভাবে অবসর গ্রহণের পর আজও শিক্ষাব্রতে অবিচল তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বাড়খোষখানার বাসিন্দা বছর ৬৪-এর তৃপ্তি বক্সী। স্থানীয় খোষ্টিকরী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন তিনি। সেখান থেকে ২০১৮ সালে অবসর গ্রহণ করেন। সরকারি নিয়ম মতে ও বয়সের কারণে তিনি বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা, তাঁর মেধা বন্টনের অবসর হয় তো জীবনের শেষ বিন্দু পর্যন্ত চলবে। কিন্তু তারপরও তিনি এখনও ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবসর হয় না, এই বিশ্বাস থেকেই বিদায় সংবর্ধনা গ্রহণ করলেও কথা দিয়েছিলেন,অবসর নেওয়ার পরেও পড়ুয়াদের টানে বিদ্যালয়ে আসবেন।যেমন কথা তেমন কাজ।
তার ঠিক পর দিন থেকেই এখনও পর্যন্ত নিয়ম করে রোজ বিদ্যালয়ে আসেন তৃপ্তিদেবী বলেন, বাড়িতে বসে থাকতে ইচ্ছে হয় না। শিক্ষকতা নেশার মতো। পড়ুয়াদের সঙ্গে থাকতে ভাল লাগে। শরীর সুস্থ থাকলে এভাবেই নিয়ম করে বিদ্যালয়ে আসব।’নিয়মমাফিক রোজ সাড়ে ১০ টার মধ্যে বিদ্যালয়ে পৌঁছে যান তিনি। তারপর সারাদিন ক্লাস নিয়ে বিকেলে ফিরে যান বাড়ি। আজও সেই নিয়মের কোনও পরিবর্তন হয়নি। তৃপ্তিদেবীকে ধরে বিদ্যালয়ে এখন পাঁচ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। শিশুশ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া করে বিদ্যালয়ে। পড়ুয়ারা জানিয়েছে, অবসর নিলেও পড়ানোতে কোনও ঢিলেমি নেই তাঁর। বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা বলে, দিদিমণি আমাদের ভীষণ ভালবাসেন। খেলাচ্ছলে পড়ান। বুঝতে অসুবিধা হয় না আমাদের।’ অবসরের পর বিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ সাম্মানিক অর্থ দিতে চাইলেও কোনও টাকা নেন না তৃপ্তিদেবী। তাতে শ্রদ্ধা ও ভালবাসার সঙ্গে যা মেনেও নিয়েছে বিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ।অবিবাহিতা তৃপ্তিদেবীর বাড়িতে রয়েছে ছোট বোন ও ভাইয়ের পরিবার। তাঁকে বিদ্যালয়ে আসতে উৎসাহ দেন তাঁরা সকলেই।বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সোমা সাঁতরা বলেন, ‘তৃপ্তি ম্যাডামের এই নিঃস্বার্থ শিক্ষাদান আমাদের কাছে দৃষ্টান্ত।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct