সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে গান্ধীজিকে মা দুর্গার অসুর বানানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার আলিপুরের উত্তীর্ণতে বিজয়া সম্মিলনীতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গান্ধীজিকে মানেন না, এমন কেউ আছেন? অথচ মা দুর্গার পুজোয় সেই গান্ধীজিকে অসুর বানিয়ে দেওয়া হলো! পুলিশকে ধন্যবাদ, তারা বিষয়টি জানামাত্র ওই অসুরের মূর্তি বদলে দিয়েছিলেন। এই কথা জানার পর আমি খুব দুঃখ পেয়েছিলাম। এই মন্তব্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুজোর সময় এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করিনি। কারণ এতে সকলে প্রতিবাদ করতে শুরু করতো। উৎসবের মরশুমে এ নিয়ে অন্য পরিস্থিতি তৈরি হোক তা কখনোই কাম্য ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কেউ যদি গুরুদ্বয়ারে গিয়ে কোন মন্তব্য করেন, কেউ যদি জৈন ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরে গিয়ে কোন মন্তব্য করেন, বা কেউ যদি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী বা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম গুরুকে নিয়ে কোন মন্তব্য করেন কেউ কি মেনে নেবেন, প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর। তার মন্তব্য, কিন্তু হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব সেই দুর্গাপুজোয় যেভাবে গান্ধীজিকে অসুর বানানো হলো তার শাস্তি জনগণ দেবে ,আমরা দেব না। মুখ্যমন্ত্রী দিন বলেন বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে কোন রাজনৈতিক মন্তব্য করতে চাই না। তবে ইদানিংকালে লক্ষ্য করছি, কিছু রাজনৈতিক দল তবে তৃণমূল কংগ্রেস নয়, যারা ডিজিটাল বের করে সেখানে যে ধরনের ভাষা নাটক করে ব্যবহার করা হচ্ছে, মনে হচ্ছে যেন ভাষার তীরন্দাজ। দুর্গা পুজো তে পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকার রোজগার হয়েছে। এই কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন যারা প্রশ্ন করেন ক্লাবগুলিকে কেন সাত হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে তাদের বলি পুজোর ভিড়ে হাঁটতে হাঁটতে ফুচকা বা ঝালমুড়ি কেমন খেলেন? রোল কেমন খেলেন? মনে রাখতে হবে, দুর্গাপূজায় গরীব মানুষদের সব থেকে বেশি কর্মের সুযোগ হয় ।রোজগার বেশি হয় ।এখন দেখবেন কিভাবে মেয়েরাও ঢাক বাজাচ্ছে। ঢাকিওয়ালা থেকে সকল গরিব মানুষ এই সময় রোজগার করার সুযোগ পায়। মনে রাখতে হবে ,এই সময় এমপ্লয়মেন্ট ক্রিয়েট হয়। ধর্ম যার যার উৎসব সবার, এই কথা উল্লেখ করে ,মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ১০০০ ধর্ম আছে ,এক হাজার জাত আছে, কিন্তু সবচেয়ে বড় মিল আছে একটি জায়গায় ,তা হল মানবতা, একতা ও সম্মান -এই তিনটি ক্ষেত্রে। এদিনের এই বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে আমাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক বিবেক গুপ্তা, বিধায়ক দেবাশীষ কুমার, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস ও বাবুল সুপ্রিয় সহ সুব্রত বক্সি, কুনাল ঘোষ এবং কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct