আপনজন ডেস্ক: নিয়োগ দুর্নীতিকে ঘিরে যখন বাংলাজুড়ে শোরগোল পড়েছে সেখানে বার বার প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য সরকার কেন টেটের আয়োজন করছে না নতুন করে। সেই প্রশ্নের জেরেই পুজোর আগে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে চলতি বছরেই টেট পরীক্ষা আয়োজনের কথা ঘোষণা করা হয়। এর জন্য গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ১১ ডিসেম্বর এই পরীক্ষা অনুষ্ঠীত হতে চলেছে। সেই পরীক্ষা নিয়ে গতকাল বুধবার নতুন করে এক বিজ্ঞপ্তি দেয় পর্ষদ। সেখানে বলা হয়, যাঁরা এলিমেন্টারি এডুকেশনে দু’বছরের ডিপ্লোমা বা চার বছরের ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হয়েছেন, তাঁরাও এই পরীক্ষায় বসতে পারবেন। এর সঙ্গে যুক্ত হবেন, রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (আরসিআই) অনুমোদিত স্পেশাল বিএড কোর্সে ভর্তি হওয়া প্রার্থীরা। এবার এই বিজ্ঞপ্তি ও সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন ১০ জন চাকরিপ্রার্থী।চলতি বছরের টেটে কয়ক লক্ষ যুবক যুবতি পরীক্ষা দিতে বসবে বলে মনে করা হচ্ছে। উপরন্তু গতকাল পর্ষদ থেকে নতুন করে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে সেখানে আরও যুবকযুবতীকে পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দিয়েছে পর্ষদ। তার জেরে আরও ৫০ হাজার যুবক-যুবতী পরীক্ষা দিতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এই বাড়তি অংশের পরীক্ষায় বসা আটকাতেই এদিন কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পর্ষদের তরফে ২৯ সেপ্টেম্বর যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল সেখানে বলা হয়েছিল শুধুমাত্র বিএড পাঠরতরা এই পরীক্ষায় বসতে পারবে। কিন্তু বুধবার পর্ষদ নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায় যাঁরা এলিমেন্টারি এডুকেশনে দু’বছরের ডিপ্লোমা বা চার বছরের ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হয়েছেন, তাঁরাও এই পরীক্ষায় বসতে পারবেন। এর সঙ্গে যুক্ত হবেন, রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (আরসিআই) অনুমোদিত স্পেশাল বিএড কোর্সে ভর্তি হওয়া প্রার্থীরা। এনসিটিই-এর নিয়ম মেনেই এই সংশোধনী এনেছে পর্ষদ। কিন্তু এই বিজ্ঞপ্তি নিয়েই আপত্তি তুলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
মামলাকারীদের দাবি, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বিএড উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। বিএড ডিগ্রিধারীরা এই নিয়োগে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যর বেঞ্চে এদিন প্রাথমিক ভাবে এই মামলার কথা শোনা হয়। আর সেখানেই বিচারপতির মন্তব্যে ধরা পড়ে এই ধরনের মামলায় ঠিক কোন কোন ধরনের অসুবিধা সৃষ্টি হতে পারে। বিচারপতি বলেন, ‘পর্ষদের পক্ষে তো খুব সমস্যা, কোন পদক্ষেপ করলেই মামলা হচ্ছে।’ অর্থাৎ পর্ষদ টেটের আয়োজন করলেও মামলাকারীদের মামলায় তা আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যদিও আগামী সোমবার মূল মামলার শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। তবে, একটা বিষয় নিয়ে এখনও ধন্দ রয়েছে। প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে গ্র্যাজুয়েশনের নম্বরে তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিকে ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, ৪৫ শতাংশ নম্বর থাকলেই তাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে, টেট-এ বসার ক্ষেত্রে সেই ছাড় দেওয়া হয়নি। প্রার্থীদের দাবি, অবিলম্বে এই ছাড় সহ সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি দিক পর্ষদ। এ নিয়ে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের প্রতিক্রিয়া এদিন না মিললেও ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, স্বাভাবিক নিয়মেই এই ছাড় পাবেন প্রার্থীরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct