আপনজন ডেস্ক: সন্ত্রাসী অভিযোগে দীর্ঘ পাঁচ বছর জেল খাটার পর উত্তরপ্রদেশের বরেলি আদালত ২০১৪ সালে বেকসুর খালাস ঘোষণা করে চাঁদ মুহাম্মদ (৫৩)কে। বেকসুর খালাস হয়েও এখনও চাঁদ মুহাম্মদ তার ‘সন্ত্রাসী’ তকমা দূর করতে পারছে না। যদিও তিনি সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে যাতে তিনি সন্ত্রাসী তকমামুক্ত হন। একবার তার গায়ে ভুয়ো ‘সন্ত্রাসী’ ছাপ পড়ায় কোথাও চাকরিও পাচ্ছেন না। এখনও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে কটূক্তি থেকে মুক্তিও পাননি। এ নিয়ে চাঁদ মুহাম্মদের খেদোক্তি,জঙ্গি তকমার জন্য আমি নতুন করে আমার জীবন শুরু করতে পারিনি, কারণ আমার বন্ধু বান্ধব এবং আত্মীয়রা এখনও পুলিশের পদক্ষেপের ভয়ে আমার সাথে যোগ দিতে চায় না। চাঁদ বলেন, আমি চাকরি করতে চাই, কিন্তু কেউ আমাকে চাকরি দেবে না। আমার সুনাম নষ্ট হওয়ার জন্য আমাকে কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। জানা যায়, ২০০৯ সালে, বরেলি শহরের প্রেমনগর থানার পুলিশকিলা নদীর কাছে জুয়া খেলা লোকদের ধরতে অভিযান চালায়। পুলিশকে দেখেই নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু হয় তিন জনের। পুলিশের বিরুদ্ধে মামলায় চাঁদ সাক্ষী থাকলেও তার জবানবন্দি রেকর্ড হওয়ার আগেই তাকে থানায় ডেকে ‘জঙ্গি’ হিসেবে আটক করা হয়।
চাঁদ মুহাম্মদ জানান, ২০০৯ সালের ১৩ অক্টোবর পুলিশ গ্রেফতার করার পর তাকে মাঞ্জার তৈরি একটা জায়গায় নিয়ে বোমা বাঁধার সরঞ্জাম মজুতের অভিযোগ আনে। সেই সঙ্গে বলে পাকিস্তানের জঙ্গি শিবির থেকে নাকি প্রশিক্ষণ নিয়েছি। টিভিতে তা প্রচার হতে তবেই প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনরা জানতে পারেন। পুলিশের অভিযোগ ছিল, চাঁদের কাছে রামপুর সিআরপিএফ ক্যাম্পের একটি মানচিত্রও উদ্ধার করা হয়েছে ৷ পাশাপাশি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকেও আক্রমণ করার পরিকল্পনা ছিল তাঁর ৷ কিন্তু আদালত খতিয়ে দেখে চাঁদ মুহাম্মদ লিখতে-পড়তে পারেন না, তিনি নিরক্ষর। তাই বরেলি আদালত তাকে বেকসুর খালাস দেয়। চাঁদ মুহাম্মদ জানান, বারে বারে নির্দোষ বললেও তাকে নির্যাতনও করা হয়। বাধ্য হয়ে পুলিশকে চাঁদ মুহাম্মদ বলেন, তাকে বরং গুলি করে মারা হোক। সেই যন্ত্রণা এখনও তাকে কুরে কুরে খাচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct