সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: মাতৃত্বের আঁচলে ঢাকা পড়েছে বাংলা। সেই মায়ের নজর থাকে সব দিকে। নিরান্ন মানুষেরাও যাতে মুখে অন্ন পান তার দিকে তিনি নজর রাখেন। গ্রাম থেকে শহরে আসা গরীব মানুষেরাও যাতে দুমুঠো ভাত পান তাও দেখেন তিনি। সেই কারণেই বাংলায় জন্ম নিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনায় ‘মা ক্যান্টিন’। এবার সেই ‘মা ক্যান্টিন’ নিঃশব্দ বিপ্লব ঘটিয়ে দিল দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে। এবারের পুজোর দিনগুলিতে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছে ‘মা ক্যান্টিন’। আর সেই খাবার হল ডিম-ভাত। নবান্ন সূত্রে খবর, পঞ্চমী থেকে শুরু করে লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন পর্যন্ত জেলায় ৮৭টি ‘মা ক্যান্টিন’ থেকে মোট ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৫৯৫ জনকে রান্না করা খাবার দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কলকাতায় খাবার পেয়েছেন ২৯ হাজার ১৮৬ জন। সব থেকে বেশি মানুষ ‘মা ক্যান্টিন’ থেকে খাবার নিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙা পুরসভা এলাকায়। এই সংখ্যা ১৬ হাজার ৪২৩। তারপরেই রয়েছে আসানসোল পুরসভা। সেখানে এই পরিষেবা পেয়েছেন ১১ হাজার ৯৪৯ জন।২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে কলকাতায় প্রথম শুরু হয় ‘মা ক্যান্টিন’। পরে ধাপে ধাপে চালু হয় রাজ্যের ১২৮টি পুর এলাকায়। প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত হাজারো লোকের লাইন পরে মা ক্যান্টিনগুলির সামনে। মেনুতে থাকে একথালা ভাত, তরকারি ও ডিম। মাত্র ৫ টাকার বিনিময়ে এই খাবার পাওয়া যায়। পুজো বাদে অন্যান্য সময় রাজ্যে প্রতিদিন প্রায় ৫২ থেকে ৫৫ হাজার মানুষ খাবার পান ‘মা ক্যান্টিন’ থেকে। এই মুহূর্তে রাজ্যে ২৭৬টি এমন ক্যান্টিন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সম্প্রতি এসএসকেএম হাসপাতালে খুলেছে ‘মা ক্যান্টিন’। অন্যান্য মেডিকেল কলেজ এবং জেলা হাসপাতালেও খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে পুজোর সময়েও নিরলস পরিশ্রম করে মানুষকে রান্না করা খাবার পরিবেশন করেছেন মা ক্যান্টিনের কর্মীরা। কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন পুর এলাকায় তাঁরা পুজোর দিনগুলিতে মানুষকে পেট ভরে ভাত খাইয়েছেন। এই সব মানুষদের মধ্যে বেশিরভাগই আবার প্রবীণ মানুষ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct