সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: বর্ণ বা জাতি ভেদের মতো প্রথাগুলি এবার ভুলে যাওয়ার সময় এসেছে। অতীতেত এই প্রথাগুলি এখন ভুলে যাওয়া উচিত বলেই এবার মন্তব্য করলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত । শুক্রবার নাগপুরে একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন আরএসএস প্রধান। সংঘ প্রধানের মতে, বৈষম্য সৃষ্টি করে এই ধরণের প্রথাকে ত্যাগ করা উচিত। নাগপুরের ভাগবত বলেন, “ বর্ণ এবং জাতি প্রথা ভুলে যাওয়া উচিত। আজ কেউ এই প্রথা নিয়ে প্রশ্ন করলে সমাজের যাঁরা ভালো চান তাঁদের বলা উচিত বর্ণ এবং জাতি প্রথা অতীতের বিষয়, এই নিয়ম ভুলে যাওয়া উচিত।” অতীতের ভুল স্বীকারের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই বলেও এদিন মন্তব্য করেন আরএসএস প্রধান। বুধবার আরএসএস-এর বিজয়া দশমীর অনুষ্ঠান থেকেও সৌভ্রাতৃত্বের পক্ষেই বার্তা দিয়েছেিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। সংঘের বিরুদ্ধে বারবার বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস সহ বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বুধবার ভাগবত বলেছিলেন, সংখ্যালঘুদের কোনও ভাবেই বিপদে ফেলতে চায় না সংঘ। ভবিষ্যতেও এমন ঘটনা হবে না বলে সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করেন ভাগবত। সংঘ সৌভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও শান্তির পক্ষে বলেই ওই অনুষ্ঠান থেকে ঘোষণা করেন ভাগবত।সংখ্যালঘুদের বার্তা দিতে গত কয়েক মাসে একের পর এক পদক্ষেপ করেছেন আরএসএস প্রধান। অগাস্টে দেশের পাঁচ মুসলিম বুদ্ধিজীবীর সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি। বৈঠকের পর সংবাদ মাধ্যমকে কুরেশি জানান, দেশের বাড়তে থাকা অসাম্যের পরিবেশ নিয়ে তাঁদের কাছে চিন্তা প্রকাশ করেছেন ভাগবত। এই বৈঠকের পরেই গত মাসে দিল্লির একটি মসজিদে যান রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান। কথা বলেন অল ইন্ডিয়া ইমাম অর্গানাইজেশনের প্রধান ইমাম উমর আহমেদ ইলিয়াসির সঙ্গে। বৈঠকের পর যিনি ভাগবতকে ‘রাষ্ট্রপিতা’ বলে ব্যাখ্যা করেন।নাগপুরে আরএসএস এর অনুষ্ঠান থেকে ‘ধর্মের ভিত্তিতে জনসংখ্যার ভারসাম্য গুরুত্বপূর্ণ’ এমন মন্তব্যও করতে শোনা যায় মোহন ভাগবতকে। তিনি বলেন, “জনসংখ্যার নীতি চিন্তাভাবনা করেই নেওয়া উচিত। এই নীতি সকলের ওপর সমানভাবে প্রযোজ্য হওয়া দরকার। ধর্মের ভিত্তিতে জনসংখ্যার ভারসাম্য বজায় না থাকলে ভৌগোলিক সীমারেখার বদল ঘটবে।” সংঘ প্রধানের এই মন্তব্যে বিতর্কেরও সৃষ্টি হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct