আমরা আধুনিক সভ্যতার নাগরিক। এটাকে বিজ্ঞানের যুগ বলা হয়। বর্তমানে মানবসভ্যতার বিরাট পরিবর্তন হয়েছে বাড়ি-গাড়ি ,বিজ্ঞান চিকিৎসা ব্যাবস্থা আধুনিক ও উন্নত মানের। মানুষের চলাফেরা জীবন-যাপন অনেক আরামদায়ক ও সহজ হয়েছে বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে। বিজ্ঞানের ফলে মানব জীবনে যেমন সুফল রয়েছে তেমনিও কুফল অনেক হয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন রকম কসমেটিক ,খাবারে ভেজাল, খাবারের কেমিক্যাল পদার্থ মিশ্রণ , কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ, যানবাহনে বিষাক্ত ধোঁয়া, মোবাইলের রশ্মি সরাসরি মানব প্রভাব ফেলে বিভিন্ন রকম রোগ সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে বিশ্বের সাথে সাথে আমাদের দেশেও উচ্চরক্তচাপও ডায়াবেটিস ক্যান্সার রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
শহর থেকে গ্রামে সর্বত্র উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস খুবই মারাত্মক রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে যতক্ষণ চিকিৎসা চলবে ততক্ষণ সুস্থ থাকবেন এই রোগে ।কিন্তু সব থেকে মারাত্মক হল এই রোগ গুলো থেকে পরে জটিল আকার ধারণ করে আরো অনেক বড় রোগ সৃষ্টি করে। যেমন, উচ্চ রক্তচাপ থেকে ব্রেন স্ট্রোক হয়ে স্নায়ুর চরমভাবে ক্ষতি করে এবং ডায়াবেটিস কিডনি, রক্তের, চোখের , স্নায়ুর সরাসরি ক্ষতি করে। আমাদের মুর্শিদাবাদ জেলাতে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমবেশি এই দুই রোগে আক্রান্ত। পাশাপাশি ক্যান্সারের মতো মারণ রুগী আমাদের জেলায় প্রচুর। এই সমস্ত রোগের চিকিৎসা অনেক দীর্ঘ মেয়াদি এবং ব্যয় বহুল।এই সমস্ত রুগী আমাদের জেলা মুর্শিদাবাদে কয়েক লক্ষ আছে !
উপরিক্তি রোগীরা থেকে যাতে পরবর্তীতে বড় কোনো জটিল সমস্যা না হয় তার জন্য ইউরোলজি, নিউরোলজি, অঙ্কলজি বিভাগের চিকিৎসা খুবই জরুরি।
কিন্তু বড় দুঃখের বিষয় বিশাল বড় একটা জেলা জেলাকে ভেঙে তিনটি জেলা তৈরি হচ্ছে অথচ সেই জেলায় এখনও পর্যন্ত উপরোক্ত পরিষেবাগুলি চালু হয়নি। যে জেলা অন্যান্য জেলা থেকে অনেক পিছিয়ে এখানকার বেশিরভাগ মানুষই দিনমজুর শ্রমিক অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই শোচনীয়। বড় কোনও রোগ হলে বা ক্যান্সারের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ছুটে যেতে হয় কলকাতায়। মুর্শিদাবাদ জেলা কলকাতার দুরত্ব অনেক রেলপথে প্রায় ৫-৯ ঘণ্টা। কলকাতা থেকে আসা যাওয়া করে চিকিৎসা করা খুবই কঠিন। জেলায় একটামাত্র মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশাল সংখ্যক রোগীর চাপ এ ডাক্তারের স্বল্পতার কারণে চিকিৎসা ঠিকমতো পাওয়া খুবই কঠিন। রোগীদের বসার কোনও ব্যবস্থা নেই। পায়ে চোট নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। রোগীর এমন ভিড় এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যাওয়া মুশকিল। একটা বেডে দুটি রুগী থাকে। কোন কোন সময়ে বেডের অভাবে রুগীকে মেঝেতে শুয়ে অক্সিজেন নিতে হয় এই হচ্ছে অবস্থা ।
সেদিন একজন গিয়েছিল পেটে যন্ত্রণা নিয়ে ডাক্তার পেটের ছবি লিখে দিলেন। কিন্তু ছবির ডেট দিয়েছে দুমাস পর।
মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আপনার কাছে সবিনয় আবেদন উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে নিম্নলিখিত পরিষেবাগুলি মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজের মধ্যে দ্রুততার সাথে বাস্তবায়নে আবেদন করছি:
১. কিডনি সংক্রান্ত রোগের জন্য ইউরোলজি পরিষেবা চালু করতে হবে।
২. স্নায়ুর রোগের জন্য নিউরোলজি পরিষেবা চালু করতে হবে।
৩. ক্যান্সার রোগের জন্য অঙ্কোলজি চিকিৎসা পরিষেবা চালু করতে হবে।
৪. চিকিৎসকের পরিমাণ বাড়ানো, রুগীদের বসার জন্য ব্যবস্থা করা।
সিটি স্ক্যানের , ইউ এস জি, রক্ত পরীক্ষা, এম আর আই, এর জন্য আরো বেশি মেশিনে ব্যবস্থা করে
দ্রুত রিপোর্ট প্রদানের ব্যবস্থা করা।
মোহাদ্দেস সেখ
(গ্রামীণ চিকিৎসক)
গ্রাম: মধুপুর, পোস্ট: নাজির পুর।
থানা, রেজিনগর, জেলা: মুর্শিদাবাদ।
পিন ৭৪২১৮৯।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct