আপনজন ডেস্ক: পাইলস হল পায়ুপথের জটিল রোগগুলোর একটি।এই রোগে রোগীরা সাধারণত পায়ুপথ দিয়ে রক্তক্ষরণ, পায়ুপথ ফুলে যাওয়া, ব্যথা অনুভব করা, পায়ুপথ দিয়ে পাইলস বেরিয়ে আসা, মলদ্বারের চারপাশে চুলকানো বিভিন্ন উপসর্গের কথা বলে থাকেন। উপসর্গগুলো দীর্ঘমেয়াদে জিইয়ে রাখলে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এ কারণে পাইলসের চিকিৎসায় অস্ত্রোপচার অনেক সময় জরুরি হয়ে উঠে। তবে অনেক ক্ষেত্রে মলদ্বার না কেটেও অনেক সময় অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে বলে জানান এক দল চিকিৎসকরা। পাইলস পায়ুপথ দিয়ে বেরিয়ে আসে কিনা তার ওপর নির্ভর করে পাইলসকে চার মাত্রায় বিভক্ত করা হয়ে থাকে এবং পাইলস চিকিৎসা বহুলাংশে এ মাত্রা বিভেদের ওপর নির্ভরশীল। পায়ুপথে শুধু রক্তক্ষরণ প্রথম ডিগ্রি/মাত্রা পাইলসের বৈশিষ্ট্য, এ মাত্রার পাইলস কখনই পায়ুপথ দিয়ে বেরিয়ে আসে না। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় মাত্রা পাইলস পায়ুপথ দিয়ে বেরিয়ে আসে মলত্যাগ করার সময়ে কিন্তু মলত্যাগ সম্পন্নের পর দ্বিতীয় মাত্রার ক্ষেত্রে নিজ হতেই মলদ্বারের ভেতরে চলে যায় এবং তৃতীয় মাত্রা পাইলসের ক্ষেত্রে রোগীকে অঙ্গুল দ্বারা চাপ দিয়ে আবার মলদ্বারের ভেতরে প্রতিস্থাপন করতে হয়। চতুর্থ মাত্রার পাইলস সব সময়ই পায়ুপথের বাইরে অবস্থান করে। প্রথম মাত্রা এবং প্রথমাবস্থায় দ্বিতীয় মাত্রা পাইলস চিকিৎসা।ইনজেকশন ও ব্যান্ড লাইগেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। সেই সঙ্গে খাদ্য অভ্যাস এবং জীবনধারা পদ্ধতি পরিবর্তন করে নরম কিন্তু শক্ত অথবা পাতলা নয় এমন মল ত্যাগ করার অভ্যাস করা। উপরিউক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে প্রথম মাত্রা এবং প্রথমাবস্থায় দ্বিতীয় মাত্রা পাইলসের চিকিৎসা সম্ভব হতে পারে। ১৯৯৩ সালে ইতালির প্যালেরমো বিশ্ববিদ্যালয়ের শল্যবিভাগের অধ্যাপক ডা. এন্টোনিও লংগো নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে মলদ্বারে ক্ষত না করে, চর্ম অথবা মাংস না কেটে পাইলসের অত্যাধুনিক অপারেশন আবিষ্কার করেন। এই অত্যাধুনিক পদ্ধতি ‘স্ট্যাপলেড হেমোরহাইডেক্টটমি’ অথবা ‘স্ট্যাপলেড হেমোরহাইডোপেক্সি’ নামকরণে ভূষিত। এটি একটি অস্ত্রোপচার পদ্ধতি যা অস্বাভাবিকভাবে বর্ধিত হিমোরোডিয়াল (পাইলস) টিস্যু অপসারণ করে, তারপরে অবশিষ্ট হেমোরোডিয়াল (পাইলস) টিস্যুকে তার স্বাভাবিক শারীরিক অবস্থানে ফিরিয়ে আনে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct