আপনজন ডেস্ক: শিশু থেকে বৃদ্ধ— সব বয়সি মানুষ অ্যালার্জি রোগে ভুগে থাকে। অ্যালার্জিতে হাঁচি থেকে শুরু করে খাদ্য এবং ওষুধের মারাত্মক প্রতিক্রিয়া ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যালার্জি সামান্য অসুবিধা সৃষ্টি করে। আবার কারও ক্ষেত্রে জীবনকে বিষিয়ে দেয়। হঠাৎ করে হাঁচি এবং পরে শ্বাসকষ্ট হলে অথবা ফুলের গন্ধ নিচ্ছেন বা গরুর মাংস, চিংড়ি, ইলিশ, গরুর দুধ, বেগুন খেলেই শুরু হলো গা চুলকানি বা চামড়ায় লাল লাল চাকা হয়ে ফুলে ওঠা। এগুলো হলে আপনার অ্যালার্জি আছে ধরে নিতে হবে। প্রশ্ন হল, অ্যালার্জি কী? কেন হয় এবং কীভাবে এড়ানো যায়? আসলে প্রত্যেক মানুষের শরীরে এক একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম থাকে, কোনো কারণে এই ইমিউন সিস্টেমে গোলযোগ দেখা দিলে তখনই অ্যালার্জির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আমাদের শরীর সবসময়ই ক্ষতিকর বস্তুকে (পরজীবী, ছত্রাক, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া) প্রতিরোধের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা করে। এই প্রচেষ্টাকে রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়া বা ইমিউন বলে। কিন্তু কখনো কখনো আমাদের শরীর সাধারণত ক্ষতিকর নয়, এমন অনেক ধরনের বস্তুকেও ক্ষতিকর ভেবে প্রতিরোধের চেষ্টা করে। সাধারণত ক্ষতিকর নয়, এমন সব বস্তুর প্রতি শরীরের এই অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াকে অ্যালার্জি বলা হয়। এর উপসর্গ হচ্ছে— অনবরত হাঁচি, নাক চুলকানো, নাক দিয়ে জল পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কারও কারও চোখ দিয়েও জল পড়ে এবং চোখ লাল হয়ে যায়।
চামড়ার কোথাও কোথাও শুকনো, খসখসে, ছোট ছোট দানার মতো ওঠা। বহিস্থ উপাদান বা অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে ত্বকে প্রদাহ হলে তাকে অ্যালার্জিক কনটাক্ট ডারমাটাইটিস বলা হয়। এর লক্ষণ ও উপসর্গ। ত্বকে ছোট ছোট ফোসকা পড়ে। ফোসকাগুলো ভেঙে যায়। চুয়ে চুয়ে জল পড়ে। ত্বকের বহিরাবরণ উঠে যায়। ত্বক লালচে হয় এবং চুলকায়। চামড়া ফেটে আঁশটে হয়।এ গুলি থেকে রক্ষা পেতে রক্তে ইয়োসিনোফিলের মাত্রা বেশি আছে কিনা, তা পরিক্ষা করে দেখুন। সিরাম আইজিইর মাত্রা,: সাধারণত অ্যালার্জি রোগীদের ক্ষেত্রে আইজিইর মাত্রা বেশি থাকে। স্কিন প্রিক টেস্ট , এ পরীক্ষায় রোগীর চামড়ার ওপর বিভিন্ন অ্যালার্জেন দিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং এই পরীক্ষাতে কোন কোন জিনিসে রোগীর অ্যালার্জি আছে তা ধরা পড়ে। স্পেসিফিক আইজিই টেস্ট , এই পরীক্ষা স্কিন পিক টেস্টেরই অংশ। এ পরীক্ষাটি ডিজিটাল পদ্ধতির, রক্ত নিয়ে করা হয়। বুকের এক্স-রে করুন, হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরু করার আগে অবশ্যই বুকের এক্স-রে করে নেওয়া দরকার যে, অন্য কোনো কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিনা। অ্যালার্জেন পরিহার করুন। যখন অ্যালার্জির সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়, তখন তা পরিহার করে চললেই সহজ উপায়ে অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ওষুধ প্রয়োগে অ্যালার্জি ভেদে ওষুধ প্রয়োগ করে অ্যালার্জির উপশম অনেকটা পাওয়া যায়। অ্যালার্জি দ্রব্যাদি এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিনও অ্যালার্জিজনিত রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct