পশ্চিমাদের আধিপত্য বিস্তৃতির দিন শেষলগ্নে: টনি ব্লেয়ার
যুদ্ধের নতুন ক্ষেত্র সন্ধানে আমেরিকা?
ফৈয়াজ আহমেদ
প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও ইরাক যুদ্ধের অন্যতম খলনায়ক টনি ব্লেয়ার বিশ্বব্যবস্থার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, পশ্চিমাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য যুগের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। যা বিশ্ব দ্বিমেরূকরণ, সম্ভবত বহু মেরূকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ডিচেল ফাউন্ডেশন ইভেন্টের বার্ষিক সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। যা institute for global change website এ প্রকাশ করা হয়েছে। ব্লেয়ার উল্লেখ করেন রাশিয়া নয়, একবিংশ শতাব্দীতে সবচেয়ে বড় ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন আসবে চীন থেকে। বেইজিংকে বিশ্বের দ্বিতীয় পরাশক্তি হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, নিকট ভবিষ্যৎতে রাশিয়া, চীন এবং ইরান বিশ্বস্ত মিত্র হিসেবে গড়ে উঠবে। যা আগামীতে পলিমার বিশ্ব রাজনীতিতে বড় প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কার্যত সাম্প্রতিক বহুবিধ কারণে চীন-তাইওয়ান উত্তেজনার পারদ যেকোনো সময়ের চেয়ে গুরুতর। যে আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে আমেরিকার নিম্ন পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি প্যালোসি তাইপে সফরের মধ্যে দিয়ে। যেখানে চীনের তীব্র আপত্তি থাকা সত্ত্বেও বেইজিংয়ের কথায় কর্ণপাত করেননি প্যালসি। যা চীন সরকার সহজভাবে গ্রহণ করেনি। বর্তমান তাইওয়ান দ্বীপকে কেন্দ্র করে আমেরিকা-চীনের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা যেকোনো সময়ের চেয়ে প্রবলতর। যা আগামীতে এশিয়া অঞ্চলে আরেকটি যুদ্ধ তৈরির পূর্ব মঞ্চ হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। এই পরিস্থিতিকে এশিয়া কেন্দ্রিক আমেরিকার New Strategic War হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে । এরই মধ্যে ওয়াশিংটন-বেইজিং ক্রমান্বয়ে সামরিক বাজেট বৃদ্ধি করে চলেছে। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার তথ্য মতে, ২০২২ সালে আমেরিকার সামরিক বাজেট ৭৭০ বিলিয়ন ডলার। অপরদিকে, চীনের বাজেট ২৩০ বিলিয়ন ডলার। যা ২০১২ সালে ছিল ৯১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত একদশকে চীন সামরিক বাজেট ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। ভবিষ্যতে এ বাজেটের আকার আরো বৃদ্ধি পাবে তা এক ধরনের নিশ্চিত। শুধু তাই নয় বেইজিং ২০২৭ সালের মধ্যে পূর্ণ সামরিক ক্ষেত্রে সক্ষমতা অর্জন এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ আধুনিকায়ন করার ঘোষণা দিয়েছে। এ বিষয়ে চীনের সামরিক শক্তিবিষয়ক ভারতীয় গবেষক প্রভীন সাহনী বলেন, বেইজিংয়ের সামরিক সক্ষমতা প্রবর্ধনের পেছনে ১৯৯১ সালে আমেরিকার ইরাক যুদ্ধের সম্পৃক্ততা রয়েছে। কার্যত বেইজিং ১৯৯৫-৯৬ সাল থেকে হরমুজ প্রণালিতে ছোট আকারে সামরিক মহড়া শুরু করলে সময়ের পরিক্রমায় এখন যুদ্ধ প্রস্তুতির মহড়া হিসেবে রূপ নিয়েছে। পিছিয়ে নেই তাইওয়ান। রয়টার্সের তথ্য মতে আমেরিকার কাছ থেকে ১.১ বিলিয়ন ডলার সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের দ্বারপ্রান্তে তাইপে। এখন শুধু কংগ্রেসের বিলটি পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। মোদ্দা কথা, তাইওয়াকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে সামরিক প্রতিযোগিতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। যার পেছনে আমেরিকার প্রভাব লক্ষণীয়। এতে ওই অঞ্চলটিতে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানিতে লাভবান হবে ওয়াশিংটন। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ানোর ঘোষণা যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
নিঃসন্দেহে তাইওয়ানের সঙ্গে আমেরিকার নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। যদিও তাইপকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি ওয়াশিংটন। অর্থাৎ এক চীন নীতিকে অস্বীকারও করেনি হোয়াটহাউস। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, হরমুজ প্রণালি থেকে আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক কীভাবে অত্যন্ত গভীরে তার মূল শিকড় প্রোথিত রয়েছে! মূলত, ১৯৭৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের শাসনকালে সামরিক চুক্তির মাধ্যমে তাইওয়ানের আমেরিকার সম্পর্ক নিবিড় হতে শুরু করে। যা এখন সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এছাড়াও আমেরিকার বুলি আওড়ানো নীতি মানবাধিকার, গণতন্ত্র, স্বশাসন রক্ষায় একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। যার ফলে তাইওয়ানকে সামরিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে আমেরিকা। শুধু তাই নয়, গণতন্ত্র রক্ষা ও চীনের যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ওয়াশিংটন। মোদ্দা কথা, বেইজিংকে টক্কর দেওয়ার দৌড়ঝাঁপে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আমেরিকার ভূমিকাই মুখ্য। চীনের সঙ্গে তাইওয়ান ঐতিহাসিক সম্পর্ক বিদ্যমান। যা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ১৯৪৫ সালে জাপান আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হলে তাইওয়ান দখল করে নেয় চীন প্রজাতন্ত্র। কিন্তু চীনে কমিউনিস্ট এবং গণতন্ত্রপন্থি দলের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। কার্যত এই যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ১৯৪৯ সালে চিয়াং কাইশেক গণতান্ত্রিক দল চীন থেকে বিচ্ছিন্ন তাইওয়ান দ্বীপে আশ্রয় নেয়। স্মরণযোগ্য, ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ছোট্ট দ্বীপটি গোটা চীনের প্রতিনিধিত্ব করেছিল।
তাইওয়ানের লক্ষ্য ছিল একটা স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু ১৯৭১ সাল পরবর্তী তাদের সেই দিবাস্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়ে এক চীন নীতেই তুষ্ট থাকতে হয়। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, ২০০৪ সালে প্রথম তাইওয়ান এক চীন নীতি অগ্রাহ্য করে পুনরায় স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা ব্যক্ত করে। ফলে বেইজিংয়ের সঙ্গে তাইপের দ্বৈরথ সৃষ্টি হয়। যা সময়ে অসময়ে বাড়তে থাকে সামরিক উত্তেজনা। সাম্প্রতিক আমেরিকার কর্তাদের তাইওয়ান সফর চীনের জন্য আগুনে ঘি ঢেলে দেওয়ার শামিল। যা এক চীন নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছে দেশটি । বলা বাহুল্য, বেইজিং কখনো তাইওয়ানের ওপর নিজস্ব ভূখণ্ডের অধিকার ছেড়ে দেবে না। সেইসঙ্গে তাইপের স্বাধীনতাকে কখনো মেনে নেবে না তা নিশ্চিত। বরং তাইওয়ানকে অবশ্যই এক চীন নীতি অনুসরণ করেই তুষ্ট থাকতে হবে। অন্যথায় এর ব্যত্যয় ঘটলে যুদ্ধ-সংঘাত অনিবার্য। মোট কথা, চীন-তাইওয়ান যুদ্ধের মানদণ্ড নির্ভর করবে অর্থাৎ আগামীতে তাইপের স্বাধীন হওয়ার অগ্রযাত্রা কতদূর এগিয়ে নেবে তার ওপর। নির্দ্বিধায় বলা যায়, বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় Economic connectivity সঙ্গে প্রতিটি দেশ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অর্থাৎ কোনো কারণে একটি দেশ নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হলে তার বিরূপ প্রভাব অধিকাংশ দেশের ওপর বর্তায়। রাশিয়া ওপর অগণিত নিষেধাজ্ঞা প্রকৃষ্ট উদাহরণ মাত্র। কার্যত, বিশ্ব অর্থনীতিতে আমেরিকার পর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন। শুধু তাই নয়, ক্রয়ক্ষমতার দিক থেকে ওয়াশিংটনকে ছাড়িয়ে গেছে বেইজিং। ২০২১ সালের তথ্য মতে, আমেরিকার জিডিপির পরিমাণ ২৩.১৮ ট্রিলিয়ন ডলার। যেখানে চীনের পরিমাণ ৩১.৮৫ ট্রিলিয়ন ডলার। এ কথা দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, নিকট ভবিষ্যৎতে ওয়াশিংটন-বেইজিং দ্বন্দ্ব কিংবা সামরিক সংঘাত বিশ্বকে কৃত্রিম দুর্যোগের মাঝে ফেলে দেবে। যার ফল হবে অনুমানের চেয়ে ভয়ানক। এরই মধ্যে আমেরিকা-চীন অভিন্ন ইস্যু যেমন সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সহযোগিতা বন্ধ করে দিয়েছে। যা আগামীতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কাজ করার ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা পরিলক্ষিত হবে। বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় ভূ-রাজনীতির চিত্র দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। যেখানে এশিয়া অঞ্চলে আমেরিকা তাইওয়ানকে চীনের বিরুদ্ধে নতুন যুদ্ধ ক্ষেত্রের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অতিসূক্ষ্মভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, আমেরিকা ইউক্রেনকে যেমন রাশিয়ার বিরুদ্ধে কূটচাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। ঠিক তেমনি, তাইপেকে চীনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ওয়াশিংটন। প্রসংগক্রমে বলতে হয়, বর্তমান ইউরোপের দুরবস্থার কারণে প্রধানত আমেরিকা দায়ী। যেখানে দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ অগণিত সমস্যা পাস কাটিয়ে বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে ইউরোপ। অথচ তীব্র বৈদ্যুতিক সংকটের কারণে টাই পরিধানকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এমনকি ইউরোপের ফিলিং স্টেশনে নেই পর্যাপ্ত জ্বালানি, স্টোরে নেই প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য। গ্যাস সংকটের কারণে ইউরোপ আজ দিশাহারা। ক্ষণিক সময়ের জন্য ইউরোপ হয়তো ভুলে গেছে-গ্যাস, জ্বালানি চাহিদার সিংহভাগ পূরণ করে থাকে রাশিয়া। তবে সময়ের পরিক্রমায় নিজেদের ভুল বুঝতে পারলেও বড্ড দেরি করে ফেলেছে ইউরোপ। যার মাশুল গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
আমেরিকার আগামীর রাজনৈতিক ভাবনা এশিয়া কেন্দ্রিক আবর্তিত হচ্ছে। যেখানে তারা ওই অঞ্চলে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র রপ্তানি করতে চাইবে। অপরদিকে, চীনের অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তার দমিয়ে রাখতে সদা প্রস্তুত আমেরিকা। গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ওয়াশিংটন ২০১১ সালের পর থেকে নতুন করে প্রত্যক্ষভাবে কোনো যুদ্ধ কিংবা সামরিক অভিযানে সম্পৃক্ত হয়নি। বরং পরোক্ষভাবে নিজের স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত ছিল। ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি জোটের কাছে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র রপ্তানি, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানকে দমিয়ে রাখতে ইসরাইলকে সর্বাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ, সিরিয়া যুদ্ধে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ মাত্র। অর্থাৎ প্রত্যক্ষ যুদ্ধে না জড়িয়ে পরোক্ষভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে যুদ্ধ ক্ষেত্রকে জিইয়ে রেখেছে আমেরিকা। যার সর্বশেষ উদাহরণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কিয়েভকে বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহযোগিতা প্রদান। এখন প্রশ্ন হচ্ছে নিকট ভবিষ্যৎতে আমেরিকার বন্ধুপ্রতিম তাইওয়ানে চীনের হুমকি মোকাবিলায় ওয়াশিংটন কী প্রতক্ষ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে! আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকা সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে তাইওয়ানকে সর্বোচ্চ সামরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে তা নিশ্চিত। তবে নিকট ভবিষ্যৎতে সময় বলে দেবে চীন-তাইওয়ানের দ্বৈরথ কোথায় গিয়ে পৌঁছবে! প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার নিঃসন্দেহে একজন দূরদর্শী নেতা। তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে পড়ন্ত বিকালে অকপটে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, যে পশ্চিমাদের আধিপত্য বিস্তৃতির দিন শেষলগ্নে। যেখানে বিশ্বব্যবস্থায় দ্বিমেরূকরণ, সম্ভবত বহু মেরূকরণের দিকে ধাবিত হচ্ছে। স্পষ্ট করে বলতে গেলে, আমেরিকা বিশ্বে একক শান্তি প্রতিষ্ঠা করার দিন অস্তমিত। যেখানে চীন, রাশিয়া, তুরস্ক, ইরান, ভারতের মতো দেশগুলোর নবশক্তির জাগরণ ঘটেছে। বলা বাহুল্য, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার যেমন অকুণ্ঠিত সমর্থন দিয়েছে বেইজিং। ঠিক তেমনি, ভবিষ্যৎতে চীন-তাইওয়ান সংঘাতে বেইজিংকে একনিষ্ঠ সমর্থন দেবে মস্কো। কিন্তু তাইওয়ানের পাশে আমেরিকা প্রত্যক্ষ ভূমিকায় উত্তীর্ণ হবে কি না তা অনিশ্চিত। বাস্তবতার নিরিখে, তাইওয়ানকে অবশ্যই আমেরিকার নতুন যুদ্ধ তৈরির পাতা ফাঁদ পরিহার করে কৌশলী হতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে তাইওয়ানকেও ইউক্রেনের মতো দুর্বিষহ ভাগ্যবরণ করতে হতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct