সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: কোনো ছাড় নেই বেপরোয়া মোটরবাইক চালকদের। এমনকি, হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালালেও নিস্তার মিলবে না এ বারের পুজোয়। লালবাজার সূত্রের খবর, পুজোর সময়ে বেপরোয়া মোটরবাইকের দুর্ঘটনা রুখতে এ বার বিশেষ দল তৈরি করে রাস্তায় নামল ট্রাফিক পুলিশ।মঙ্গলবার, অর্থাৎ দ্বিতীয়ার বিকেল থেকেই ট্রাফিক পুলিশের ১৬টি দল রাস্তায় নামে বেপরোয়া মোটরবাইকের দাপট ঠেকাতে। ওই তল্লাশি সারা রাত হয়। ট্রাফিক পুলিশের একাধিক অফিসারদের নিয়ে ওই ১৬টি দল তৈরি করা হয়। তারা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, ছুটির দিনে বা ফাঁকা রাস্তায় অতিরিক্ত গতির মোটরবাইকই এখন মাথাব্যথার কারণ পুলিশের। কয়েক বছর ধরে পুজোর ভিড় এড়িয়ে যে সব রাস্তায় রাতে বেপরোয়া গতিতে বা তিন জন সওয়ারি নিয়ে মোটরবাইক ঘুরে বেড়ায়, সেখানেই ওই বিশেষ দল থাকবে। চালকদের বাগে আনতে ট্রাফিক আইন অমান্য করলেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ।
পুলিশের একাংশের মতে, প্রতি বছরই পুজোর সময়ে শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁদের। বড় বড় পুজো মণ্ডপের সামনে দর্শনার্থীদের ভিড় ঠেকিয়ে যান চলাচলের গতি যাতে বজায় রাখা যায়, তার জন্য মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশের বাহিনী। আর এর জেরে যে সব জায়গায় পুজো কম হয়, যেমন ই এম বাইপাস, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড কানেক্টর ও পার্ক সার্কাসের মতো বিভিন্নএলাকায় পুজোয় নজরদারি হয়ে পড়ে ঢিলেঢালা। আর তারই সুযোগ নেন মোটরবাইকচালকদের একাংশ। এমনকি, কম সংখ্যক পুলিশকর্মী থাকার সুযোগ নিয়ে তাঁরা সিগন্যালও মানেন না বলে অভিযোগ। পুলিশ জানাচ্ছে, এ বার সেই জায়গাতেই আঘাত হানতে চাইছে ট্রাফিক পুলিশ। পুলিশকর্তাদের আশা, এই বিশেষ দলের নজরদারির ফলে এ বার বেপরোয়া মোটরবাইক ও গাড়ির দৌরাত্ম্য ঠেকানো সম্ভব হবে।লালবাজার সূত্রের খবর, সোমবার পুজোর আগে বৈঠক ছিল ট্র্যাফিক গার্ডের আধিকারিক এবং এসিদের নিয়ে। সেখানেই পুলিশকর্তারা ট্রাফিক গার্ডগুলিকে নিজেদের এলাকায় বেপরোয়া মোটরবাইক এবং গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে পুজোর দিনগুলিতে কাটা রুটে বেসরকারি বাস চালানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুজোয় যেখানে ভিড় হচ্ছে, সেখানেই শাটল হিসাবে বাস চলাচল করে। এমনটা যাতে না হয়, তা দেখার জন্য বলা হয়েছে। প্রয়োজনে চালকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘ভিড়ে ঠাসা এলাকার মধ্যেই কিছু বেসরকারি বাস বার বার চলাচল করে। যা নিয়মবিরুদ্ধ। তাই কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’ বৈঠকে জানানো হয়, চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল দিয়ে সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টাই উত্তরমুখী গাড়ি চলাচল করবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct