নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: পুজোর প্রাক্কালে এলাকা জুড়ে রমরমিয়ে চলছে ভেজাল হলুদের কারবার। সেই হলুদ বিক্রি হচ্ছে হাট থেকে শুরু করে বিভিন্ন দোকানে।রান্নায় ব্যবহার করছে এলাকার বহু মানুষ। প্রশাসনের দৃষ্টি এড়িয়ে কি ভাবে চলছে এই কারবার উঠছে প্রশ্ন? এই ভেজাল হলুদ দেওয়া খাওয়ার খেলে হতে পারে বিভিন্ন ধরনের অসুখ। আশঙ্কা চিকিৎসকদের। ভেজাল হলুদ কারবারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ফের মাথা চারা দিয়ে উঠেছে ভেজাল হলুদের কারবার। সঠিক উপায়ে নিয়ম মেনে প্রস্তুত করা হচ্ছে না সেই হলুদ। ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য এবং রং। এলাকারই হাটে,বাজারে এবং বিভিন্ন দোকানে রমরমিয়ে আবার বিক্রি হচ্ছে সেই হলুদ। এমনকি ঢিল ছোরা দূরত্বে বিহারেও পাচার করে দেওয়া হচ্ছে ভেজাল হলুদ। সেই হলুদ কিনছে এলাকার সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষ থেকে গরিব মানুষেরা। ব্যবহার হচ্ছে রাস্তার ধারের ছোট খাটো বিভিন্ন খাওয়ারের দোকানেও।এদিকে সামনেই পুজো। স্বাভাবিক ভাবেই বাড়বে আরও হলুদের বিক্রি। আর এর ফলে এলাকার বহু মানুষেরই শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে বলে উদ্বেগ চিকিৎসক মহলের। এই ভেজাল হলুদ দেওয়া খাওয়ার খেলে পেটের অসুখ, লিভার জনিত সমস্যা থেকে শুরু করে ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধি পর্যন্ত হতে পারে বলে মত চিকিৎসকদের। এই ভাবে এলাকা জুড়ে রমরমিয়ে ভেজাল হলুদের ব্যবসা চলার পরেও প্রশাসন কেন পদক্ষেপ নিচ্ছে না উঠছে প্রশ্ন? কারণ এর আগেও হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় ভেজাল হলুদের কারবার নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর সম্প্রচারিত হয়েছিল। তারপর বন্ধ হলেও ফের শুরু হয়ে গেছে এই কারবার। হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় এই কারবার চলছে তা কার্যত মেনে নিয়েছে খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের আধিকারিক এবং চিকিৎসকরা। সে ক্ষেত্রে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন? প্রশাসনের চোখের আড়ালে কি ভাবে চলছে এই কারবার? প্রশ্ন তুলছে এলাকার বুদ্ধিজীবী থেকে সাধারণ মানুষেরা।
স্থানীয় বাসিন্দা জাকির আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এই ব্যবসা চলছে।মাঝে বন্ধ হয়েছিল আবার শুরু হয়েছে।গরিব মধ্যবিত্ত মানুষরা বেশি এই হলুদ কিনছে। চাইবো প্রশাসনে এই ব্যবসা বন্ধ করুক। চাঁচল মহকুমার খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক ডক্টর রাহুল কুমার মন্ডল বলেন, এই ধরনের হলুদের ব্যবসার কথা শুনেছি। যেসব জায়গায় অস্বাস্থ্যকর ভাবে রাসায়নিক জিনিস মিশিয়ে খাদ্য বা অন্য কিছু প্রস্তুত হচ্ছে আমরা সেখানে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে কথা বলে আমরা যৌথ অভিযান চালাব। হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডক্টর ছোটোন মন্ডল বলেন, আমাদের কাছে কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি তবে শুনেছি এই কারবারের কথা। ভেজাল হলুদ খেলে মানুষের লিভারের অসুখ থেকে শুরু করে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। এই ব্যবসা বন্ধ হওয়া অবশ্যই উচিত। প্রসঙ্গত ভেজাল হলুদের কারবার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার বিভিন্ন জায়গাতে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। এলাকারই বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চালাচ্ছে এই কারবার। তবে প্রশাসন কেন এতদিন পদক্ষেপ নেয়নি? এই কারবারের পেছনে কি রয়েছে কোন বড় প্রভাবশালীদের মদত? থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন?
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct