কারিমুল ইসলাম, কলকাতা, আপনজন: কলকাতার আর.জি.কর হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা নিতে আসা অসহায়, গরীব রোগীদের বা তাদের পরিবারকে দিতে হচ্ছে ‘পার্কিং চার্জ’ এর জন্য প্রতি ঘন্টায় ১০ টাকা। পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম হাসপাতাল আর.জি.কর মেডিকেল হসপিটাল। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ আসেন এই হাসপাতালে। কেউ নিজের জন্য, কেউ বা পরিবারের কারও জন্য এখানে ছুটে আসে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়ার জন্য। কিন্তু সেই অসহায়, গরীব, মধ্যবীত্ত রোগী বা রোগীর পরিবারের কেউ ‘টু হুইলার ‘ গাড়ি আনলে সেই গাড়ি পার্কিং করার জন্য ৬নং গেটের কাছি বেসমেন্টে নতুন একটি পার্কিং স্লট করা হয়েছে, যেখানে গাড়ি রাখলে প্রতি ঘন্টায় ১০ টাকা আর হেলমেটের জন্য অতিরিক্ত ৫ টাকা। হাসপাতাল এরিয়ায় সর্বত্র লেখা “ NO TWO WHEELER PARKING HERE” ফলে সাধারণ মানুষ বাধ্য হচ্ছে বাইক ওই নির্দিষ্ট ‘পার্কিং জোনে’ রাখতে। মনোয়ারা বিবি নামে এক রোগীর পরিবারের লোক জানান, “আমি আমার মা কে ডাক্তার দেখাতে এসেছি, মা অসুস্থ। বাস চাপতে পারবেনা তাই বাইকে নিয়ে এসেছি, সকাল আটটা থেকে এখন সন্ধ্যা ৭ টা এই ১১ ঘন্টায় ১১০ টাকা দিতে হল বাইক পার্কিং এর জন্য।”
একইরকম অভিযোগ প্রায় প্রত্যেকের মুখে।যাদের রোগী ভর্ত্তি আছে তাদের ভোগান্তি আরও বেশী পার্কিং খরচ বাবদ দিতে হচ্ছে শত শত টাকা। যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন, রোগীকে বিনামূল্যে পরিষেবা দিতে, সেখান রাজ্যের বৃহত্তম হাসপাতালে পার্কিং এর নামে এমন টাকা নেওয়া কিভাবে হতে পারে। সবার মনে একটাই প্রশ্ন সরকারি হাসপাতালে এমন চড়া দামে পার্কিং কি আইনসঙ্গত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির অভিযোগ শুধু পার্কিং নয় আরও বিভিন্ন নামে এখানে টাকা নেওয়া হয়, যেমন গাইনি ডিপার্টমেন্টে ডেলিভেরির জন্য কোনো মা ভর্ত্তি হলে ভিজিটিং কার্ড দেওয়ার সময়ই দিতে হয় ১৫০ টাকা, ছেলে হলে মুখ দেখতে ১০০০ টাকা, মেয়ে হলে ৫০০ টাকা, আয়া রাখতে প্রতিদিন দুই শিফটে ৩০০ টাকা। ছুটির সময় আবার আয়াদের এক্সট্রা টিপস। আরও অনেক টাকা।” তবে কি বাইরে সাইনবোর্ড “বিনামূল্যে” আর ভিতরে অন্য কিছু। প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেবে? রোগী ও রোগীর পরিবারকে দীর্ঘ লাইন ঠেলে ডাক্তার দেখাতে হয় উপরন্তু এই টাকা নেওয়া। ভোগান্তি কি শেষ হবে রোগী বা রোগীর পরিবারের?
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct