নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, আপনজন: কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চে বুধবার প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় স্টেটাস রিপোর্ট ও ফরেন্সিক রিপোর্ট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।এদিন মুখবন্ধ খামে এই রিপোর্ট পেশ করা হয় এজলাসে । এই রিপোর্ট দেখে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে জানান ,- 'অকল্পনীয় দুর্নীতি, যা সাধারণ মানুষকে শিহরিত করবে।' টেট নিয়োগ মামলার স্টেটাস রিপোর্ট পেশ করে থাকে সিবিআই। এদিন এজলাসে সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়, -'তদন্ত সুনির্দিষ্ট পথেই এগোচ্ছে। পরীক্ষা না দিয়েই নিয়োগপত্র দিয়ে চাকরিতে ঢোকানো হয়েছে অনেককে। দ্রুত তদন্ত শেষ হবে'। এই রিপোর্ট খুলে পড়েন বিচারপতি,এরপর বলেন, 'প্রাথমিক নিয়োগে অকল্পনীয় দুর্নীতি হয়েছে। সাধারণ মানুষকে শিহরিত করবে এই দুর্নীতি।'শুনানিতে এর আগেই সিবিআই জানিয়েছিল, -'বহু লোক ব্ল্যাঙ্ক ওএমআর শিট জমা দিয়েও চাকরি করছে। যে সব নথি ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়, সেইসব নথি জাল বলে রিপোর্ট এসেছে। এদিন আদালতে ওএমআর শিটের ফরেন্সিক রিপোর্ট পেশ করা হয়। তবে দিল্লি সিএফএসএল এর সেই রিপোর্টে ওই কাগজ কবে তৈরি করা হয়েছে? তার স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলেনি বলে জানা গেছে । গত ২০১৪ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। ২০১৫ সালে টেট পরীক্ষা হয় এবং ২০১৬ সালে মেধাতালিকা প্রকাশিত হয়। অন্যদিকে, ২০১৭ সালে অ্যাডিশনাল একটি মেধাতালিকা প্রকাশিত হয়েছিল। দ্বিতীয় নিয়োগ তালিকায় অনিয়ম হয়েছে এই অভিযোগ এনে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন একজন। এর আগে টেট মামলায় ২৬৯ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দেহরক্ষী বিশ্বম্ভর মণ্ডলের দশ আত্মীয়ের চাকরির নথি মামলাকারীর আইনজীবীরা পরীক্ষা করবেন বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত । এদিন সিবিআই এই রিপোর্ট জমা দিয়েছে আদালতে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বোর্ড মিটিংয়ের সমস্ত কাগজ পত্র সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠিয়ে তা পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সংক্রান্ত রিপোর্টই মুখ বন্ধ খামে জমা দিয়েছে সিবিআই।তবে শুধু এই একটি রিপোর্ট নয়, আরও একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে সিবিআই। সিবিআই জানিয়েছে, নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে, অনেকে পরীক্ষা না দিয়েও চাকরি পেয়েছে। তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে। শীঘ্রই সমাধান সূত্র মিলবে। এদিকে মামলকরীর আইনজীবীর দাবি, -' বোর্ডের বিশেষজ্ঞ কমিটির যে বৈঠক হয়েছিল সেই বৈঠকে উপস্থিত দু'জন সদস্য যে হলফনামা জমা দিয়েছে তাতে দু রকম তথ্য আছে।জানান হয়েছে, সমস্ত প্রার্থী যারা ওই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছিল তাদের সকলকে ওই এক নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আবার অন্য এক হলফনামায় এও বলা হয়েছে, যারা আবেদন করবেন শুধুমাত্র তাদেরই ওই এক নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল'। এরফলে ওই বৈঠক হয়েছিল কিনা? তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এই প্রসঙ্গও রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে বলে জানায় সিবিআই । আগামী ৪ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct