সজিবুল ইসলাম, ডোমকল, আপনজন: ২১ এর ভোটের আগে তৃণমূলের নেতাদের ওরা (বিজেপি) নিয়ে নিয়েছিল। তাতে তৃণমূলের ঘোড়ার ডিমের ক্ষতি হয়েছে। সুতরাং ওরা কী হুমকি দেখাচ্ছে ? তৃণমূলের নেতাদের পাওয়া যাবে না, দেখা যাবে না? ভাই তোমরাই তো নিয়েছিলে। যারা স্পেশাল ফ্লাইট পাঠিয়েছিল, চাটার্ড ফ্লাইটে গিয়েছিল, তারাই এখন বলছে দিদি ফ্লাইট চাই না অটো পাঠান ফিরে যাবো। সুতরাং তৃণমূলের কে কোথায় যাচ্ছে সেটা বিষয় নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের শীর্ষ নেত্রী, তিনি শক্তি ও বাংলার আবাল বৃদ্ধ-বনিতা, তৃণমূলের কর্মীরা হল শক্তি। এটা যদি বিজেপি যাচাই করতে ভুল করে তাহলে বার বার এই ফলই হবে, পরাজয়। রবিবার হাওড়ায় এক অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ওই মন্তব্য করেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ এদিন বলেন, বিজেপি হল সমুদ্রের ধারের বালির ঘরের মতো। সমুদ্রের ধারে বালির ঘর তৈরি করলে দেখা যায়, একটা ঢেউ এলে সেই বালির ঘর ভেঙে যায়। বিজেপি সেই বালির ঘরের মতো। বিজেপি একটা বৈঠক করবে। আবার তৃণমূলের একটা কর্মসূচি হবে, ভোট আসবে আবার চলে যাবে। এটা তো বালির ঘর। বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক বনসলের রাজ্যে আসা প্রসঙ্গে কুণালবাবু বলেন, সাইবেরিয়া থেকে কিছু পাখি বছরের কিছু কিছু সময় আসে। আলিপুর চিড়িয়াখানায় আসে, হাওড়া জেলার সাঁতরাগাছি ঝিলেও আসে। সিদ্ধার্থনাথ সিং বলে একজন এসেছিলেন। তারপর এসেছিলেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয় তিনিও চলে গেছেন। অরবিন্দ মেনন এসেছিলেন চলে গেছেন। এরকম ওদের কেউ আসবেন চলে যাবেন। এসব আসলে ওদের পরিযায়ী কিছু অতিথি শিল্পীর যাতায়াত। কংগ্রেসের জয়রাম রমেশের বক্তব্য প্রসঙ্গে এদিন কুণাল ঘোষ বলেন, অতীত ধুয়ে জয়রাম কতদিন জল খাবেন। এতো সেই জলসাঘর সিনেমার বিশ্বম্ভর রায়ের মতো ব্যাপার হচ্ছে। কংগ্রেসের ঐতিহ্য নেই এটা তো কেউ বলছে না। আমরাও বলছি না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেননি। অভিষেকও বলেননি। আমরা বলছি কংগ্রেস তার দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে কংগ্রেসকে আত্মসমালোচনা করতে হবে শীতঘুম ভেঙে বেরোতে হবে।
কংগ্রেস ব্যর্থ বলেই তো ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় এসছেন। ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় এসছেন। ওরা পঞ্জাবটাও ধরে রাখতে পারেনি। ফলে যে যে জায়গায় কংগ্রেস রয়েছে তার দায়িত্ব বিজেপিকে মোকাবিলা করার। কিন্তু কংগ্রেস সেই জায়গায় ফেল করছে। আমরা সেই কথাটা বলেছি। কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে দেওয়ার কথা আমরা বলিনি। ২০২১ সাল প্রমাণ করে দিয়ে গেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে তৃণমূল কংগ্রেস লড়াইটা দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সম্মিলিত নেতৃত্বে বিজেপির ডেলি প্যাসেঞ্জারিকেও হারিয়ে দেওয়া যায়।রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারির কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে এদিন কুণাল ঘোষ বলেন, যারা মানুষের ভরসায় মানুষের সমর্থন নিয়ে রাজনীতি করে না, যাদের গ্রাউন্ড রিয়েলিটির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই তারা দিল্লির জ্যাঠাদের নাম বলে। তার কারণ এদের নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা নেই, দলের গ্রহণযোগ্যতা নেই। মানুষের সমর্থন নেই। এরা দেউলিয়া। মানুষের উপর ভরসা নেই। মদন মিত্রর উপস্থিতিতে তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কুণাল ঘোষ বলেন, আমি এটাকে দলের বিরুদ্ধে বলে এখনই দেখতে চাইছি না। এটা কারও ব্যক্তিগত মতামত, ব্যক্তিগত আবেগতাড়িত কিছু মন্তব্য। কিন্তু মন্ত্রিসভা তৈরি করেন মুখ্যমন্ত্রী। কাকে কোথায় কখন মন্ত্রিসভায় রাখলে ভালো হয় তা তিনি ভালো বোঝেন। আমার কাকে পছন্দ সেটা প্রকাশ্যে বলা উচিত নয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct