কুতুব উদ্দিন মোল্লা, ক্যানিং, আপনজন: দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ক্যানিং ও জয়নগর থানার অন্তর্গত সংযোগকারী পিয়ালী নদী ধোসা ব্রীজ এলাকায় জয়নগর-ক্যানিং সংযোগকারী পিয়ালী নদীর ব্রীজ থেকে পা পিছলে পড়ে নদীর জলে তলিয়ে নিখোঁজ হলেন এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার রাতে এমন ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। নিখোঁজ ব্যাক্তির নাম আসান মিস্ত্রী(৪১) স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে ক্যানিংয়ের হাটপুকুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভলেয়া গ্রামের বাসিন্দা আসান মিস্ত্রী। এদিন বিকালে বাড়ি থেকে ধোসা বাজারে গিয়েছিলেন বাজার করতে। বাজারহাট করে রাতে বাড়িতে ফিরছিলেন। সেই সময় পিয়ালী নদীর উপর পুরাতন ব্রীজ দিয়ে হেঁটে ফিরছিলেন। আচমকা পা পিছলে পিয়ালী নদীর জলে পড়ে তলিয়ে যায়। রাতের অন্ধকারে ধোসা ফাঁড়ির পুলিশ ও স্থানীয় মানুষজন নিখোঁজ ব্যাক্তির খোঁজে পিয়ালী নদীতে তল্লাশি অভিযান শুরু করে।
নদীতে প্রবল স্রোত আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য রাতের অন্ধকারে উদ্ধার কাজে ব্যাঘাত ঘটে।বুধবার সকালে নিখোঁজ ওই ব্যক্তির খোঁজে আবারও নদীতে তল্লাশি শুরু হয়।প্রশাসনের তরফ থেকে নদীতে নামানো হয় ডুরুরির দল। তবে বুধবার বিকাল পর্যন্ত নিখোঁজ ব্যক্তির কো হদিশ না মেলায় শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবারের লোকজন। উল্লেখ্য জয়নগর ও ক্যানিং সংযোগকারী পিয়ালী নদীর উপর ব্রীজ। এই ব্রীজ দিয়ে প্রতিদিনই হাজার হাজার সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীরা মালপত্তর নিয়ে যাতায়াত করেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ২০১২ সালে ভগ্ন ব্রীজের পাশেই একটি ব্রীজ তৈরী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সরকারী উদ্যোগে। ব্রীজ টি তৈরী হয়ে গেলেও যাতায়াতের রাস্তা ঠিকভাবে তৈরি না হওয়া সমস্যায় রয়েছেন সাধারণ মানুষ।যদিও নতুন ব্রীজ দিয়ে ছোট যানবাহন এবং সাধারন মানুষ যাতায়ার করেন।এছাড়াও অধিকাংশ সময়ে সাধারণ যাত্রীরা ভগ্ন ব্রীজ দিয়েই যাতায়াত করেন।এই ভগ্ন ব্রীজ দিয়ে যাতায়াতের সময় প্রায়ই দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে।ব্রীজ দিয়ে যাতায়াতের সময় নদীর জলে পড়ে গিয়েছেন অনেকেই। তার মধ্যে ব্রীজ থেকে পড়ে নদীর জলে তলিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন দুজন।দুজনার বাড়ি ক্যানিং থানার অন্তর্গত । দুজনার নাম আরমান শেখ ও মইনুদ্দিন। যাদের মরদেহ পরে নদীর জল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ প্রশাসন। আবারও যাতে করে কোন প্রকার দুর্ঘটনা না ঘটে তারজন্য বুধবার সকালে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে ভগ্ন ব্রীজটি পুরোপুরি বন্ধ করা উদ্যোগ গ্রহন করে ব্রীজের দুই প্রান্তে পাকা দেওয়াল তৈরী করার কাজ শুরু করা হয়।এমন সময় স্থানীয় বেশ কিছু ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষজন পুলিশের কাজে বাধা দেয়।তাদের দাবী ঘুরপথে নতুন ব্রীজ দিয়ে যাতায়াত করা সম্ভব নয়।পুরাতন ব্রীজটি বন্ধ করা যাবে না। প্রয়োজনে সংস্কার করে দেওয়া হোক।প্রবল বাধার সম্মূখীন হয়ে প্রশাসন পিছু হটে। আবারও ভগ্ন ব্রীজ দিয়েই শুরু হয় ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল।অন্যদিকে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন স্থানীয় মানুষের একাংশের দাবী ‘যে ভাবে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে,পুলিশ প্রশাসন ব্রীজ টি বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়ে ভালোই করেছিল। বেশ কিছু ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষ নিজেদের স্বার্থের জন্য পুলিশ কে বাধা দেয়। ফলে আগামী দিনে আরো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে কে নেবে তার দায় ভার?বিপদে পড়বেন সাধারণ মানুষ’।এছাড়াও প্রশাসনের নিষেধাঞ্জা থাকা সত্বেও জোরপূর্বক ভগ্ন ওই ব্রীজ দিয়ে সাধারণ মানুষ যাতায়াত করার ফলে বারে বারে এমন দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে এবং আগামী দিনেও ঘটবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct