নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, আপনজন: কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ভৎর্সনার মুখে পড়েন বীরভূমের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রী কুমার আরি। গত মঙ্গলবার তাঁর দেওয়া একটি শাংসাপত্র নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আদালত। এজলাসে দাড়িয়েই নতুন শাংসাপত্র লিখতে নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । পাশাপাশি সিএমওএইচকে আর্থিক জরিমানাও করে থাকে হাইকোর্ট। আদালত সুত্রে প্রকাশ, রঘুনাথ ঘোষ ২০১০ সালে রাজনগর আনমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পান। তাঁর দাবি -' বর্তমানে তিনি শারীরিক ভাবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন। নিউরো সমস্যা তার মধ্যে অন্যতম কারণ। এই পরিস্থিতিতে ১০০ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা যাতায়াত করতে তার চাকরি করতে অসুবিধা হচ্ছে । তাই তার বাসস্থান সংলগ্ন বিদ্যালয়ে স্থানান্তরের আবেদন জানান। বিষয়টি নিয়ে ২০১৭ সালের ২০ জুন তত্কালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিটি দিয়ে তার স্থানান্তরের আবেদনও করে থাকেন। কিন্তু কোনও কাজ না হাওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন রঘুনাথ ঘোষ।বিদ্যালয়ে চাকরি সংক্রান্ত স্থানান্তরের নিয়মানুযায়ী শারীরিক সমস্যার কারণে স্থানান্তর চাইলে সেই জেলার সিএমওএইচ- এর শাংসাপত্র লাগে। এই ক্ষেত্রে রঘুনাথ আদালতে শাংসাপত্র পেশ করলেও তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করে থাকে হাইকোর্ট । চলতি সপ্তাহে প্রথম দিকে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় বীরভূমের সিএমওএইচকে ব্যক্তিগতভাবে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
শুনানির সময় বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় ওই আধিকারিককে প্রশ্ন করেন, - "আপনি শাংসাপত্রে মেডিক্যাল পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনও বিষয় উল্লেখ করেননি। শুধুমাত্র উল্লেখ করেছেন রঘুনাথ স্থানান্তরের উপযুক্ত। এটা কি মেডিক্যাল শাংসাপত্র হিসাবে গণ্য হতে পারে? আপনি সরকারি আধিকারিক সেই শাংসাপত্র লিখুন যেটা আপনার আগেই লেখা উচিত ছিল"।বিচারপতির নির্দেশে কোর্ট অফিসার সিএমওএইচ-কে সাদা কাগজ দেন। এজলাসে দাঁড়িয়ে নতুনভাবে শাংসাপত্র লেখেন হিমাদ্রী । বিচারপতির প্রশ্ন - 'রঘুনাথবাবুকে কোনও পরীক্ষা না করেই কেন শাংসাপত্র দিয়ে দিলেন?' এরপর মেডিক্যাল টেস্টের ল্যাব রিপোর্ট চান বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে সেই রিপোর্ট দিতে পারেননি হিমাদ্রী কুমার আরি।বিচারপতি আরও নির্দেশ দেন, -' ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বরের শাংসাপত্র গ্রহণ করছে না আদালত। রঘুনাথ ঘোষের নতুন করে মেডিক্যাল টেস্ট করতে হবে।বীরভূমের সিএমওএইচের নেতৃত্বে গঠিত হবে মেডিক্যাল বোর্ড। সেই বোর্ডই পরীক্ষা করবে। বীরভূমে সেই ব্যবস্থা না থাকলে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ বা এসএসকেএমে ওই পরীক্ষা করতে হবে। এবারের মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দেওয়ার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে বোর্ড কোনওভাবে প্রভাবিত না হয়'। সঠিক মেডিক্যাল সার্টিফিকেট না দেওয়ায় বীরভূমের হিমাদ্রী কুমার আরি কে ২০০০ টাকার জরিমানা করা হয়েছে জরিমানার অর্থ তিনি ব্যক্তিগতভাবে স্টেট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটিকে দেবেন বলে আদেশনামায় উল্লেখ রয়েছে বলে জানা গেছে ।এতে বীরভূমের জেলায় চাঞ্চল্য পড়ে গেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct