সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: ফসলের জমি দেখতে গিয়ে অন্যের জমির আলে থাকা বেআইনি বিদ্যুৎবাহী তারের বেড়ায় বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার ভিমারডাঙ্গা গ্রামে। মৃত্যুর পর ওই যুবকের মৃতদেহ লোপাটের চেষ্টাও হয়। জমি থেকে মৃতদেহ টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে প্রায় দু কিলোমিটার দূরের জঙ্গলে পুঁতে ফেলা হয়। তবে শেষ রক্ষা হল না। গ্রামবাসীরাই আজ সকালে জঙ্গলের মধ্যে পুঁতে রাখা মৃতদেহের সন্ধান পায়। পরে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ মাটি খুঁড়ে মৃতদেহটি উদ্ধারের পাশাপাশি ঘটনায় যুক্ত থাকার সন্দেহে দুজনকে গ্রেফতার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার ভিমারডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা অলোক ঘোষ অন্যান্য দিনের মতো গ্রামের অদূরে থাকা জমির ফসল দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। দীর্ঘ সময় পর তিনি বাড়িতে ফিরে না আসায় খোঁজ শুরু করেন গ্রামের লোকজন। এইসময় ভিমারডাঙ্গা গ্রাম লাগোয়া একটি জমির আলে অলোক ঘোষের পায়ের জুতো ও তাঁর সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। ওই জমির আলে বুনো শুকরের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য জমির মালিক বেআইনি ভাবে বিদ্যুতবাহী তারের বেড়া দিয়ে রাখায় স্থানীয়দের সন্দেহ দানা বাঁধে। এরপরই স্থানীয়দের নজরে পড়ে ওই জমির আল থেকে কোনো একটি ভারী বস্তু টেনে হিঁচড়ে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাওয়ার দরুণ ভেজা মাটিতে তৈরী হওয়া সন্দেহজনক দাগ। সেই দাগ ধরে প্রায় দু কিলোমিটার যাওয়ার পর পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে প্রবেশ করে স্থানীয়রা দেখেন জঙ্গলের ভেতর এক জায়গায় সদ্য মাটি খোঁড়া রয়েছে। উপরে কোনোক্রমে গাছের ডাল, মাটি ও শুকনো পাতা দিয়ে কিছু ঢাকা দেওয়া রয়েছে। মাটি ও শুকনো পাতা সরাতেই অলোক ঘোষের মৃতদেহ চোখে পড়ে স্থানীয়দের। এরপর বিষ্ণুপুর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি সরিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। স্থানীয়দের অভিযোগ অন্যের জমির আলে বেআইনি ভাবে দেওয়া বিদ্যুৎবাহী তারে বিদ্যুৎ পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু হয় অলোক ঘোষের। পরে প্রমাণ লোপাটের জন্য ওই জমির মালিক মৃতদেহটি জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে পুঁতে ফেলে। ঘটনার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ ওই জমির মালিক স্থানীয় মড়ার গ্রামের বাসিন্দা সাকির আলি খান ও তাঁর কাকা সিরাজুদ্দিন খানকে গ্রেফতার করেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct