ধর্ম যেমন একান্তই ব্যক্তিগত বিশ্বাস তেমনি সবচেয়ে বিতর্কিত একটি বিষয়ও। যেকোন ধর্মই যুক্তি আবেগ ও মিশ্রিত।ইহা সত্য যে ধর্ম এবং সাহিত্য একে অপরের পরিপূরক। ধর্ম যেমন কখনো সাহিত্য বা দর্শন বিহীন হয় না, সাহিত্য দর্শনও কখনো ধর্ম ছাড়া এগোতে পারে না।সাহিত্য দর্শন ছাড়া যেমন সমাজ চলে না একইভাবে ধর্ম ছাড়াও সমাজ চলে না। ধর্মকে বাদ দিয়ে কখনো সুস্থ সমাজ গড়ে ওঠে না। আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন“ধর্ম ছাড়া বিজ্ঞান খোঁড়া, বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম অন্ধ।” এ নিয়ে লিখেছেন সেখ মিসবাহুল আলম।
ধর্ম যেমন একান্তই ব্যক্তিগত বিশ্বাস তেমনি সবচেয়ে বিতর্কিত একটি বিষয়ও।যেকোন ধর্মই যুক্তি আবেগ ও মিশ্রিত।ইহা সত্য যে ধর্ম এবং সাহিত্য একে অপরের পরিপূরক।ধর্ম যেমন কখনো সাহিত্য বা দর্শন বিহীন হয়না,সাহিত্য দর্শনও কখনো ধর্ম ছাড়া এগোতে পারে না।সাহিত্য দর্শন ছাড়া যেমন সমাজ চলে না একইভাবে ধর্ম ছাড়াও সমাজ চলে না। সাহিত্যের মত ধর্মেও প্রতিটা মানুষই কোথাও যেন কাব্য সাহিত্যের বাস্তবিক অথবা কাল্পনিক চরিত্র কাহিনীর মত ধর্মীয় গ্রন্থে কথিত ধর্মীয় গাথা কাহিনীর মধ্যেও মানুষ তাঁর জন্মগত বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশে বা বাস্তব জীবনের সুখ দুঃখ অনুভূতি আবেগ আনন্দ ঈশ্বর বা আল্লাহ বা গড বা পরমাত্মাকে জানানোর মাধ্যমে ভক্তি বা ভালোবাসা বা আত্মার শান্তি খুঁজে পান। নিশ্চিত ধর্ম কোথাও একটা মন বা আত্মার অপূর্ণতা বা শূন্যতাকে পূরণ করে।নচেৎ আধুনিক যুক্তি নির্ভর বিজ্ঞান প্রযুক্তির যুগেও বিশ্বের শতকরা প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষই কেন নিজ নিজ ধর্মে বিশ্বাসী? যতই নাস্তিকতায় বিশ্বাসী মার্কসবাদী কমিউনিস্ট যুক্তিবাদী মুক্তমনা সেক্যুলাররা ধর্মের বিরুদ্ধে যুগ যুগ ধরে কলম চালান না কেন,কার্ল মার্ক্স বা লেনিন থেকে সে যত বড় জ্ঞানীগুণীই হোক না কেন এমন কোন ধর্মবিরোধী সেক্যুলার বাপের ব্যাটা এই ধরণীতে জন্ম নেয়নি যে ইহুদিদের মন থেকে মোজেস বা মুসা(আ:),খ্রিস্টানদের মন থেকে যীশু বা ঈশা(আ:)বা মুসলিমদের মন থেকে মোহাম্মদ(সা:)অথবা হিন্দুদের মন থেকে স্বামী বিবেকানন্দকে বা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মন থেকে গৌতম বুদ্ধকে চিরতরে মুছে দেবে!১৯১৭ সালে রাশিয়ায় বলসেভিক বিপ্লব থেকে শুরু করে বর্তমান একবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত ধর্মবিরোধীরা অনেক অনেক চেষ্টা করেছিল কিন্তু যতবারই চেষ্টা করেছে চেষ্টা ততবারই বিফল হয়েছে।তাইতো উনবিংশ শতাব্দীর বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী নিউটন,আইনস্টাইন,ফ্যারাডে থেকে আজকের আধুনিক বিজ্ঞানের স্টিফেনস হকিংস,বিক্রম সারাভাই বা এপিজে কালামের মত বিজ্ঞানীরাও ঈশ্বর বা আল্লাহ বা গড বলে কেউ একজন সর্বশক্তিমান আছেন বলে বিশ্বাস করতেন যিনি এই নিখুঁত অসীম সৌরজগতের সবকিছুরই সৃষ্টিকর্তা বা নিয়ন্ত্রক।
ধর্মকে কেউ বলবেন আমাদের এটা পরম্পরা,কেউ বলবেন এটা আমাদের সংস্কৃতি বা কেউ বলবে এটা আমাদের পরিচিতি বা ঐতিহ্য।যাইহোক না কেন।একটা সমাজে সব ধরনের মানুষই থাকেন।কেউ আস্তিক কেউ নাস্তিক,কেউ মানেন,কেউ কম মানেন বা কেউ কিছুই মানেনা।কিন্তু ধর্মীয় বিশ্বাস এমন একটা সংবেদনশীল অনুভূতি যা আঘাত প্রাপ্ত হলে মানুষের তৎক্ষণাৎ মন ভেঙ্গে যায়।মানুষের বুকে রক্তক্ষরণ হয়।তাই ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করলে সেই ধর্মের অনুসারীরা বিনা সংকোচে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেন।তাই যে যাই বিশ্বাস করুক না কেন কাউকে আঘাত বা অসম্মান বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে কথা বলা বা যেকোন ধর্মকে যুক্তিহীনতার দুর্বল যুক্তিতে জ্ঞান বিবেক বুদ্ধিহীনের মত ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে কিছু লেখা বা সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা নিতান্তই নির্বোধ দায়িত্বহীনের পরিচয় দেয়।এই বিষয়ে মানবতার সমাধান আল কোরান কোন মুমিন মুসলমানকে অন্য কোন ধর্মের দেবদেবী বা উপাস্য বা তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ উপহাস করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছে।তাতে ঘটনা যাই হোক না কেন যে ৫৫ বয়সী নবী মোহাম্মদের সাথে ৯ বছরেরে আয়েশার বিবাহ বা কোন পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই মাতা মরিয়মের গর্ভে যিশুর জন্ম সংক্রান্ত কাহিনী বা লাঠির আঘাতে লোহিত সাগরে তৈরী রাস্তা পেরিয়ে যাওয়া মুসা নবীর কাহিনী বা হিন্দুধর্মে ৩৩ কোটি দেবদেবীদের কাহিনী বা মহাদেব শিবের লিঙ্গ পূজা জনিত কাহিনী ইত্যাদি! ধর্মকে যারা মানুষে মানুষে লড়াই যুদ্ধের কারণ মনে করেন তারা কি ইতিহাস পড়ে দেখেননি প্রাক ধর্মীয় যুগে কিভাবে হানাহানি,খুন,ধর্ষণ,লুট,ভ্রূণ হত্যা,শিশুহত্যা,অন্যায়,অবিচার,সামাজিক বৈষম্য,শাসকের স্বৈরাচারীতার অস্তিত্ব কি ব্যাপক হারে সমাজে বিরাজমান ছিল এবং যুগ যুগ ধরে ধর্ম গুরুদের লড়াই প্রচেষ্টা ও আন্দোলনে কিভাবে সমাজ অসভ্য থেকে সভ্য হয়েছিল?নিশ্চয় আপনি ধর্মকে কেন্দ্র করে হানাহানি বা কুসংস্কার বা অসাধু ব্যবসার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবেন কিন্তু সরাসরি ধর্ম বা ধর্মকে মেনে চলেন যারা এমন কাউকেই অসম্মান আঘাত করে নয়,উপযুক্ত সম্মান জানিয়েই বিজ্ঞান নির্ভর কুসংস্কার মুক্ত সাথে ধর্ম সাহিত্য দর্শন ইতিহাস সবকিছু নিয়েই একটা সুস্থ্য সমাজ গড়ে উঠতে পারে। ধর্মকে বাদ দিয়ে কখনো সুস্থ সমাজ গড়ে ওঠে না।তাই সর্ব কালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন
“ধর্ম ছাড়া বিজ্ঞান খোঁড়া,
বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম অন্ধ।”
লেখক অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, অপারেশন ১, সাগরদিঘী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, মুর্শিদাবাদ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct