রাজু আনসারী, অরঙ্গাবাদ, আপনজন: আবারও মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙন। মঙ্গলবার সকাল থেকে সামসেরগঞ্জের প্রতাপগঞ্জ এলাকায় ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে পাঁচটি বাড়িঘর। তলিয়ে গিয়েছে বেশ কয়েক বিঘা জমিও। আশঙ্কায় বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র পালাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যে কোনো মুহূর্তে তলিয়ে যেতে পারে বাসুদেবপুর থেকে কাকুরিয়া হয়ে ধূলিয়ান যাবার অন্যতম রাস্তা। তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় একটি কালি মন্দির। নতুন করে গঙ্গা ভাঙন নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আপাতত যার যা সামগ্রী আছে তা নিয়ে কোনরকমে পালানোর চেষ্টা করছেন তারা। বছরের পর বছর ভাঙনের আতঙ্ক যেন পিছুই ছাড়ছে না সামশেরগঞ্জের গঙ্গা তীরবর্তী এলাকার মানুষদের।ভাঙনের ত্রাসে চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ গ্রামবাসীদের।
ভাঙন এক জ্বলন্ত সমস্যা সামসেরগঞ্জে। চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন ওই পরিবারগুলি যারা এই ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সারা জীবনের সমস্ত সহায়-সঞ্চয় হারিয়ে কেঁদে ভাসাচ্ছেন বাড়ির মহিলারা। চারিদিকে শুধুই ধোঁয়াশা দেখছেন অসহায় হয়ে পড়া ওই জমি ও বাড়ির মালিকেরা। চোখের সামনেই সারা জীবনের সঞ্চয়ে বহু কষ্টে তৈরী করা ঘরবাড়ি ও জমি-জায়গা তলিয়ে যেতে দেখার কষ্ট তারা ছাড়া আর কেউ বুঝবেন না। আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা নিয়ে আর কতদিন বাঁচবেন। পরিবার পরিজন নিয়ে যাওয়ার পথ কোথায়। এইসব প্রশ্ন আর হতাশা জন্মেছে নদী পারের বাসিন্দাদের মনে। গঙ্গা ভাঙনের কবলে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কার্যত রাতের ঘুম বন্ধ হয়েছে এলাকাবাসীর। ভাঙনে অসহায়দের দুর্দশা কাটাতে অবিলম্বে ভাঙন প্ৰতিরোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। অবিলম্বে গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধানের দাবিতে সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রতাপগঞ্জ এলাকায় ভাঙনে তলিয়ে যায় ঘরবাড়ি। তিল তিল করে গড়ে তোলা বাড়ি আজ গঙ্গা গর্ভে। কোথায় যাবে কোনো আশ্রয় স্থল নেই। এদিকে বিকেলে গঙ্গা ভাঙনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন যান সামসেরগঞ্জের বিডিও কৃষ্ণ চন্দ্র মুন্ডা, সামশেরগঞ্জ থানার ওসি বিজন রায়, বিধায়ক আমিরুল ইসলাম সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। বিডিও কৃষ্ণ চন্দ্র মুন্ডা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আপাতত স্কুলে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তাদের খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কে জানানো হয়েছে। এদিন ভাঙনের কবলে পড়ে কার্যত কান্নায় ভেঙে পড়েন স্থানীয় প্ৰধান ভিগুরাম সরকার। কাউকে জানিয়ে কোনোরকম কাজ হয়নি বলেই দাবি তার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct