সম্প্রীতি মোল্লা, আসানসোল, আপনজন: শনিবার দুপুরে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল আদালতে পেশ করা হয় হালিশহর পুর চেয়ারম্যান রাজু সাহানি কে।এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আবেদন কে মান্যতা দিয়ে ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ জারি করে থাকে আসানসোল আদালত।চিটফান্ড কান্ডে গত শুক্রবার সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রাজু সাহানি। এদিন ধৃত কে আসানসোল আদালতে তোলা হয়েছিল। আগামী ৮ ই সেপ্টেম্বর পুনরায় ধৃত কে তোলা হবে আসানসোল আদালতে। শনিবার আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী এজলাসে জানান , -' জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় কোন রকম সহযোগিতা করেন নি রাজু সাহানি। যে কারণে তাঁকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে'।পাশাপাশি , ধৃতের আইনজীবীর দাবি, -' রাজু সাহানির পরিবারের সকলেই ব্যবসা করেন। তাই তাঁদের বাড়িতে ওই টাকা থাকা অবাক হওয়ার কিছু নয়'।আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ফের আদালতে তোলা হবে ধৃত কে। গত শুক্রবার হালিশহর পুর চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে নগদ ৮০ লক্ষ টাকা, আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ উদ্ধারের পর রাজু সাহানিকে গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। শুক্রবার রাতেই তাঁকে কলকাতায় নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হয়। এরপর শনিবার ভোরে সেখান থেকে রাজুকে আসানসোলের উদ্দেশ্যে আনা হয়। গাড়িতে তোলার আগে অবশ্য রাজু দাবি করেন,-' 'চিটফান্ডের সঙ্গে আমি যুক্ত নই। শীঘ্রই আপনারা সব বুঝতে পারবেন।' এর পাশাপাশি নগদ টাকা, আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজ উদ্ধারের ঘটনাকে 'ভুল' বলেও দাবি করেন রাজু। এরপর শনিবার বেলা বারোটা নাগাদ আসানসোল আদালতে তোলা হয় হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যানকে। সওয়াল জবাব শেষে ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। জানা গেছে,অংশুমান রায় দায়িত্ব ছাড়ার পর হালিশহর পুরসভার মুখ্য প্রশাসক হয়েছিলেন রাজু সাহানি। এবার পুরভোটের পর পুরচেয়ারম্যান হন। তার আগে থেকেই অবশ্য সিবিআই চিটফান্ড মামলায় রাজু সাহানির উপর নজরদারি চালাচ্ছিল বলে প্রকাশ।
'বর্ধমান সন্মার্গ ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন' নামে ওই চিটফান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ দায়ের হয় গত ২০১৪ সালে। পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটি থানায় অভিযোগ জমা পড়েছিল। কোটি কোটি টাকা তছরূপের ঘটনায় ২০১৮ সালে সিবিআই তদন্ত শুরু করে থাকে। চার্জশিটও জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গত বছর ১২ ডিসেম্বর তৃণমূল নেতা তথা বর্ধমান পুরসভার পুরপ্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায় গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। যদিও বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত। এই মামলাতেই এবার সিবিআইয়ের জালে পড়লেন রাজু সাহানি। একদা দাপুটে সিপিএম নেতা তথা কাউন্সিলর লক্ষ্মণ সাহানির ছেলে রাজু সাহানি। হালিশহরের লালকুঠিতে তাঁর পৈতৃক বাড়ি। লোহার ছাঁট এবং পাটের ব্যবসা করতেন। তবে মাত্র কয়েক বছরেই নাকি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যান রাজু সাহানি । হালিশহরে গঙ্গার ধারে হাইনেস্ট গেস্ট হাউস, নিউটাউনে ফ্ল্যাট এবং সিটি সেন্টারের কাছে বাড়িও রয়েছে। তাঁর বাড়ি থেকে সিবিআই ৮০ লক্ষ টাকা, প্রায় ৩ কোটি টাকার সম্পত্তির দলিল, থাইল্যান্ডে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে সিবিআই ।আগামী ৮ সেপ্টেম্বর অবধি সিবিআই হেফাজতে থাকছেন রাজু সাহানি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct