সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: সাড়ে আট ঘণ্টার ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর সিজিও কমপ্লেক্সের বাইরে এলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘড়ির কাঁটা তখন প্রায় ছটা ছুঁই ছুঁই। পশ্চিম পানে ঢলে পড়েছে সূর্য। কয়লাকাণ্ডে তৃণমূল সাংসদকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে দিনভর। জেরা পর্ব শেষে বাইরে বেরিয়ে অভিষেক বলেন, ‘’এই নিয়ে তৃতীয়বার জেরার মুখোমুখি হলাম আমি। আমি নোটিশ পেয়েছি। তিনবার আমি, তিনবার আমার স্ত্রী জেরায় হাজিরা দিয়েছে। মোট ৬০ ঘণ্টারও বেশি জেরা করা হল। কিন্তু নিট ফল জিরো।’’ তিনি আরও বলেন, ‘’আমি কাউকে কোনও দোষারোপ করছি না। ইডি, সিবিআই আধিকারিকরাও নিজেদের চাকরি করছেন। অভিষেক এবার ক্ষোভের সুরে বলেন, যারা ক্যামেরার সামনে নির্লজ্জের মতো টাকা নিয়েছে, তাদের কাউকে ডাকা হচ্ছে না। আর যাদের বিরুদ্ধে কিছু নেই তাদের হেনস্থা করা হচ্ছে বারবার।’’
জেরা পর্ব শেষ হতেই সরব তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। বলেন, ‘’আমি তিন বার গিয়েছি, দরকার পড়লে আরও ৩০ বার যাব। আমি মাথা নত করার ছেলে নই। যদি কেউ ভাবে আমি কারও ছেলেকে কিছু বলেছি বলে ইডি-সিবিআইয়ের জুজু দেখাবে আর আমি ঘরে বসে যাব, তাহলে ভুল ভাবছেন। দিল্লির জল্লাদদের কাছে মাথা নত করব না।’’ ফের জয় শাহকে আক্রমণ তৃণমূল সাংসদের। তিনি বলেন, ‘’আগে নিজের ছেলেকে দেশপ্রেম শেখান। জাতীয় পতাকা হাত না দিয়েও বিসিসিআই সেক্রেটারি থাকব, ছেলে ভাবছে। আর বাবা ভাবছে, বিরোধীশূন্য করে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকব।’’অমিত শাহকে জোরালো কটাক্ষ অভিষেকের, ‘’বাংলার মানুষকে দেশপ্রেম শেখাবেন না। তাদের রক্তে দেশ স্বাধীন হয়েছে। নিজের ছেলেকে জাতীয় পতাকার মর্যাদা শেখান। রাজনৈতিকভাবে লড়তে না পেরে ইডি-সিবিআই ব্যবহার করে গ্রেফতার করতে চাইছে।’’অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঙ্কার, ‘’আমি তো দুবছর আগেই স্টেটমেন্ট দিয়েছি। এই কয়লা কেলেঙ্কারির সঙ্গে কোনও যোগসূত্র পেলে, ৫ পয়সার দুর্নীতি পেলে আমাকে ডেকে পাঠাতে হবে না। আমাকে সরাসরি স্টেজ তৈরি করে ফাঁসি দিয়ে দেবেন। আমি আজও নিজের জায়গা থেকে নড়ছি না।’’ দীর্ঘক্ষন জেরার মুখোমুখি হবার পর কোনরকম ক্লান্তি ছাড়াই সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে গাড়িতে চেপে নিরাপত্তার ঘেরাটপে রওনা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct