আপনজন ডেস্ক: পুজোর অনুদান নিয়ে রাজ্যকে হলফনামা পেশের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আসন্ন দুর্গাপূজোয় ৪৩ হাজার পুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা গড়ে সরকারি অনুদান বিষয়ক মামলার শুনানি চলে। এদিন ডিভিশন বেঞ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে এই সরকারি অনুদান দেওয়ার বিষয়ে রাজ্যের হলফনামা তলব করেছে।
গত সপ্তাহে কলকাতার এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে ৬০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কেন এই অনুদান দেওয়া হচ্ছে, বঞ্চিত রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ পাওনা কে বঞ্চিত করে ? মামলাকারীরা এই প্রশ্ন তুলেছেন দাখিল মামলা গুলিতে। এদিন কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের কাছে পুজোয় কেন দেওয়া হচ্ছে সরকারি অনুদান,সেই হলফনামা চাইলো আগামী ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। এদিন রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়, -'অনুদানের ব্যাপারে এখনও কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি'। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে এই অনুদান দেওয়া নিয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ।পুজো কমিটিগুলিকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে । সোমবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলে।এদিনের শুনানিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের কাছে অনুদান দেওয়ার কারণ জানতে চায়। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতকে জানান, - 'এই বিষয়ে এখনও সরকারের তরফে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। একটি ঘোষণার ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়েছে। তাই এই মামলা খারিজ করা হোক'। মামলাকারীদের অন্যতম বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এদিন এজলাসে পাল্টা প্রশ্ন তোলে বলেন, - 'রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রী এই ঘোষণা করছেন। এরমধ্যে টাকা বিলি শুরু হয়ে যাবে না এর নিশ্চয়তা কোথায়?' ঠিক এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে কাছে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ জারি করে থাকে । আগামী ৫ সেপ্টেম্বর আদালতে হলফনামা জমা দিতে হবে রাজ্যকে। প্রসঙ্গত , গত সপ্তাহে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের অনুমোদিত ৪৩ হাজার পুজো কমিটিগুলিকে ৬০ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। যা নিয়ে প্রশ্ন তোলে নানান মহল।বিশেষত রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ডিএ পাওনা না মিটিয়ে কেন এত দান খয়রাতি? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধী দল গুলি।সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আসন্ন দুর্গাপুজোর অনুদান সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলে। এদিন আদালতের শুনানির শুরুতে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, -' সরকারের কোনও বিজ্ঞপ্তি নেই পুজো অনুদান নিয়ে। তাই জনস্বার্থ মামলার কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই।শুধুমাত্র ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার উপর দাঁড়িয়ে মামলা হয় না' ।যদিও মামলাকারীদের অন্যতম বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ''প্রতিবছর এভাবে ঘোষণা করে জানিয়ে দেওয়া হয় পুজো অনুদান। পরে তাঁর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর যদি বিজ্ঞপ্তি হয়, তাহলে সরকারের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।''এরপরই রাজ্যের হলফনামা চায় আদালত তাও আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে।
পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির ডিভিশন এদিন এজলাসে জানায়, -' আগেকার পুজো অনুদান বা চলতি বছরের পুজো অনুদান সংক্রান্ত তথ্য জানাবে রাজ্য।আগামী ৫ সেপ্টেম্বর মধ্যে হলফনামা দিতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct