আপনজন ডেস্ক: বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় তিন লাখের মতো বিষাক্ত সাপের কামড়ের শিকার হয় এবং এদের ১০ শতাংশ মারা যায়। বিষাক্ত সাপের কামড় থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী।সর্পবিষ পলিপেপটাইড, প্রোটিন বিনষ্টকারী ও অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থের যৌগবিশেষ। সাধারণভাবে নির্দিষ্ট প্রজাতির সাপের বিষ নির্দিষ্ট ধরনের হয়ে থাকে। সাপে কামড়ালে দংশিত স্থানে কোনোরূপ চিহ্ন নাও থাকতে পারে। চামড়ার রং পরিবর্তন, কালচে হওয়া, ব্যথা, দ্রুত ফুলে যাওয়া, ফোস্কা পড়া, পচন ও দংশিত স্থান হতে ক্রমাগত রক্তপাত। এর ফলে সেই ব্যক্তির মধ্যে থাকবে ঘুম ঘুম ভাব।থাকবে অস্বাভাবিক দুর্বলতা। চোখের পাতা ভারী হওয়া বা বুজে আসবে। জিভ জড়িয়ে আসা, কথা বলতে অসুবিধা হওয়া। ঢোক গিলতে অসুবিধা, খাওয়ার সময় নাক দিয়ে জল চলে আসা। হাঁটতে অসুবিধা, হাত-পা অবশ ভাব। ঘাড় দুর্বল, মাথা হেলে যাওয়া। শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা। কালো রঙের প্রস্রাব।এর প্রাথমিক চিকিৎসা হল, রোগীকে আশ্বস্ত করা যে তার কোন ভয় নেই। সব ঠিক হয়ে যাবে। দংশিত অঙ্গ এমনভাবে বাঁধতে হবে যেন অনেক বেশি শক্ত অথবা ঢিলা না হয়। রোগীকে নিথর ও নিশ্চল হয়ে শুয়ে যেতে হবে, যাতে আক্রান্ত অঙ্গ নাড়াচড়া না হয়। নাড়াচাড়া করলে মাংসপেশির সংকোচনের ফলে বিষ দ্রুত রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে গিয়ে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। দংশনকৃত জায়গা একবার ভেজা কাপড় দিয়ে কিংবা জীবাণুনাশক লোশন দিয়ে ক্ষতস্থান মুছে নিতে হবে। ব্যান্ডেজ দিয়ে ক্ষতস্থান ঢেকে রাখতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দংশিত অঙ্গ থেকে আংটি, চুড়ি, তাবিজ, তাগা, খুলে ফেলতে হবে।
দংশিত অঙ্গ ফুলে গেলে পরবর্তী সময়ে এগুলো খুলতে অসুবিধা হবে। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। রোগীকে কাত করে রাখতে হবে। কেউ যদি সাপ মেরে থাকে, হাসপাতালে যাওয়ার সময় শনাক্তকরণের জন্য তা নিয়ে যেতে হবে। ব্যথা উপশম করার জন্য অ্যাসপিরিন দেওয়া যাবে না। সর্বোপরি সাপের বিষের প্রতিষেধক ওষুধ অ্যানটিভেনিন ব্যবহারের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গ্রহণ করেন। হাত-পা অত্যধিক ফুলে যাওয়াসহ দংশনের স্থানে পচা ঘায়ের চিকিৎসায় কোনো কোনো সময় সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct