নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে মাদ্রাসায় ভুতুড়ে শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ভুতুড়ে শিক্ষকদের বহিষ্কারের দাবিতে এবার সরব হল এলাকার অভিভাবক এবং ওই মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা। ভূতুড়ে শিক্ষকদের বহিষ্কারের দাবিতে মাদ্রাসার প্রধান ফটোকে তালা ঝুলিয়ে দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখে শিক্ষকদের বলে জানা যায়।ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার হরিশ্চন্দ্রপুর দু’নম্বর ব্লক এলাকা’র মিলনগড় সাজ্জাদিয়া হাই মাদ্রাসাতে। ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের বিক্ষোভের জেরে সকাল থেকে ওই এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।ঘটনার খবর পেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি দেওদুত গজমের এর নেতৃত্বে এলাকায় ছুটে আসে থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।পুলিশি হস্তক্ষেপেও বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি।শেষ পর্যন্ত মাদ্রাসার ভুয়া শিক্ষকদের ছাত্রছাত্রীরা হাত ধরে টেনে অফিস রুম থেকে বের করতে বাধ্য হয়।বিক্ষোভের জেরে মাদ্রাসায় এদিন পঠন পাঠন কিছুই হয়নি। বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের দাবি অবিলম্বে ওই মাদ্রাসায় নিয়োগ হওয়া ছয় জন ভুতুড়ে শিক্ষককে অপসারণ করতে হবে।না হলে এই বিক্ষোভ অবস্থান অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে।এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে আসেন হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও বিজয় গিরি
এবং কোরিয়ালি চক্রের এস আই মানেরুল ইসলাম।তাঁরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন।এক সপ্তাহের মধ্যে এস আই বিডিও র হাতে ওই ছয় শিক্ষকের কাগজপত্র তুলে দেবেন এবং বিডিও অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক করে বিস্তারিত জানিয়ে দেবেন বলে জানা যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ওই ছয় ভুতুড়ে শিক্ষক হলেন তারিকুল রেজা,ওলিওর রহমান,মাসতারা খাতুন, প্রিয়াঙ্কা কাটারি,সাবিনা ইয়াসমিন ও মোসারফ হোসেন।মোসারফ হোসেন হলেন মাদ্রাসা পরিচালন কমিটির সেক্রেটারী সামসুল হকের ছেলে।২০১৫ সালে ওই মাদ্রাসা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ওই মাদ্রাসায় অবৈধভাবে নিয়োগ হয়।শিক্ষক তারিকুল রেজা হলেন পূর্বের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সাইফুদ্দিন এর শ্যালক।আদালতের নির্দেশে তাঁরা যোগ দিয়েছেন বলে শিক্ষকদের দাবি।স্থানীয়দের অভিযোগ,শুধু ওই ছয় জন নন। এলাকায় অন্তত ২০ জনের কাছ থেকে ৮ থেকে ১০ লক্ষ করে টাকা নেওয়া হয়েছে।তারা মাদ্রাসায় কাজ করেছেন(অরগানাইজ) দেখিয়ে আদালতে মামলা করে ঘুরপথে তাদের কমিটি নিয়োগ করেছে বলে অভিযোগ।এ নিয়ে স্থানীয়রা একাধিকবার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে নথি চাইলেও তা দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া গত ছয় বছর ধরে সেখানে নির্বাচন হয়নি। ফলে ওই কমিটি অবৈধ বলেও বিক্ষোভকারীদের দাবি। সদ্য ভার প্রাপ্ত শিক্ষক ফকরুদ্দিন আল মাহমুদ জানান,৬ আগস্ট সে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের দায়িত্ব পেলেও এখনো পর্যন্ত তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।ভুতুড়ে শিক্ষক সম্পর্কে সে কিছুই জানে না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct