রাজু আনসারী, অরঙ্গাবাদ, আপনজন: ঐতিহাসিক ‘মুর্শিদাবাদ’ জেলার নাম অক্ষুণ্ণ রেখে জেলা ভাগ, মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় ও আহিরনে অবস্থিত আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, কোর্সের সংখ্যা বৃদ্ধি, জঙ্গিপুর সংসদীয় এলাকায় মেডিক্যাল কলেজ ও আইন কলেজ প্রতিষ্ঠা করা সহ নানাবিধ দাবি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করল ছাত্র সংগঠন এসআইও। শনিবার মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে আয়োজিত এই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এসআইও'র রাজ্য শিক্ষাঙ্গন সম্পাদক আব্দুল ওয়াকিল, উত্তর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ইত্তিহাদ আলম, সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, জামায়াতে ইসলামী হিন্দের সহকারী জেলা সভাপতি আব্দুল্লাহিল কাফি সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। জেলাভাগের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানালেও মুর্শিদাবাদ জেলার নাম অক্ষুণ্ণ রেখে জেলা ভাগের দাবি জানান এসআইও নেতৃত্ব। শিক্ষাঙ্গন, শিক্ষাক্ষেত্র ও শিক্ষক নিয়োগ সহ যাবতীয় দুরাবস্থার সমাধান করে অবিলম্বে শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করার দাবি তোলা হয় সাংবাদিক সম্মেলন থেকে। পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়েও সরব হন ছাত্র সংগঠন এসআইও'র নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের জেলা সভাপতি ইত্তিহাদ আলম রাজ্য সরকারের জেলা ভাগ সংক্রান্ত ঘোষণা নিয়ে বলেন, রাজ্য সরকারের জেলা ভাগের সিদ্ধান্তকে স্বাগত। কিন্তু 'মুর্শিদাবাদ' নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাস ও ঐতিহ্য। জেলার নামের সাথে ঐতিহ্যবাহী 'মুর্শিদাবাদ' নামকে মুছে দিলে উপেক্ষা করা হবে ইতিহাসকে। তাই নতুন জেলার নামের সাথে যুক্ত থাকুক ঐতিহাসিক 'মুর্শিদাবাদ' নাম। জেলার শিক্ষাসংক্রান্ত সমস্যার কথা উল্লেখ করে ইত্তেহাদ আলম বলেন, আমাদের জেলা নানা রকম শিক্ষা,বেকারত্বসহ একাধিক সমস্যায় জর্জরিত। জেলায় বিভিন্ন শিক্ষা সংক্রান্ত সমস্যার মধ্যে গার্লস কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ, আইন কলেজের ঘাটতি রয়েছে। তাই আমাদের দাবি হল, গার্লস কলেজ নেই সেই সমস্ত বিধানসভা এলাকায় গার্লস কলেজ প্রতিষ্ঠাতা,প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় একটি মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠাতা,প্রতিটি মহকুমায় আইন কলেজ প্রতিষ্ঠাতা করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামী হিন্দের মুর্শিদাবাদ জেলার সহকারী জেলা সভাপতি আব্দুলাহিল কাফি বলেন , শিক্ষা ব্যবস্থার যে ভয়ঙ্কর বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মুর্শিদাবাদ। দীর্ঘ দিন নিয়োগ না হওয়া, সীমাহীন দুর্ণীতির কারণে এবং সর্বশেষ উৎসশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে মুর্শিদাবাদের প্রান্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা চরমভাবে ভেঙে পড়েছে।আমাদের দাবী যে অবিলম্বে উৎসশ্রী প্রকল্প সাময়িক বন্ধ করে দ্রুত স্বচ্ছ শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ করা হোক।' এইদিন সাংবাদিক সম্মেলন থেকে রাজ্যের শিক্ষাঙ্গন সম্পাদক আব্দুল ওয়াকিল করোনা পরবর্তী সময়ে রাজ্যজুড়ে স্কুলছুট বৃদ্ধির জন্য সরকারি উদাসীনতাকে তিনি দায়ী করেন। তিনি আরো বলেন, শিক্ষাঙ্গনে ধর্মীয় বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠেছে। হিজাব পরার জন্য নার্সিং পড়ুয়ারা মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে। তিনি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিকাঠামোর ভগ্নপ্রায় দশার জন্য সংখ্যালঘু দপ্তরের সমালোচনা করেন। রাজ্য সভাপতি সাবির আহমেদ শিক্ষা আন্দোলনের সূচনা করে বলেন, শিক্ষা আন্দোলনের ১৩দফা দাবি দাওয়া পূরণে আগামী ২৫ শে আগস্ট বিধানসভা অভিযানের ডাক দিয়েছে সংগঠন। ওইদিন দুপুর ১টা কলেজ স্কোয়ারে জমায়েত করে বিধানসভার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবে মিছিল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct