সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে নাপিতকে ডেকে নিজের ফ্রেঞ্চকাট দাঁড়ি কাটালেন। সিলেট পরিবেশে ধীরে ধীরে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে বর্তমানে জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দু'দিন হাসপাতাল-সহ টানা ১৪ দিন ইডি হেফাজতে কাটিয়েছেন পার্থ। ফলে তাঁর ফ্রেঞ্চ কাট দাড়ি ওই সময়ে অনেকটাই বেড়েছিল। তাঁর ট্রেডমার্ক ফ্রেঞ্চ কাট দাড়ির পরিবর্তে গালভর্তি খোঁচা খোঁচা দাড়ি গজিয়ে গিয়েছিল। গত দুসপ্তাহ তাঁর যে মানসিক অবস্থা ছিল তাতে দাড়ির দিকে নজর দেওয়ার কোনও সুযোগ বা মানসিক পরিস্থিতি ছিল না। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে জেলের জীবনযাত্রায় ততই মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন একদা প্রভাবশালী প্রাক্তন মন্ত্রী। মঙ্গলবার সকালে ব্রেকফাস্টের পর দাড়ি কাটার অনুরোধ করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সেই অনুরোধ অনুযায়ী এলেন জেলের নাপিত। সূত্রের খবর, নাপিত তাঁর কাছে জানতে চান ক্লিন সেভ করে দেবেন কিনা। তবে পার্থ জানিয়ে দেন, না, আগে যেমন ছিল তেমনই কাট হবে।জেলে এসে খাওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন পার্থবাবু। নিরামিষ একেবারেই খেতে পারেন না। মাছ, মাংস ছাড়া তাঁর চলে না। রোজ তাঁকে আমিষ দেওয়া হোক এমনটাই চাইছিলেন। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলের রুটিনের বাইরে কিছ করা যাবে না। কোনও বাড়তি সুযোগ দেওয়া যাবে না। জেলের নিয়ম অনুয়ায়ী একদিন মাংস, একদিন মাছ, একদিন ডিম এবং একদিন সয়াবিন দেওয়া হয়।
এদিকে, সূত্রের খবর জেলে বসেই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে আইনি সাহায্য দিতে চেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিজের আইনজীবীদের অর্পিতাকে আইনি সাহায্য দেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু ৫০০ মিটার দূরে থাকা অর্পিতা সেই সাহায্য নিতে অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে, আলিপুর জেলে গিয়ে জেলবন্দিদের কাছে এখন সেলিব্রিটি অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। যাকে একসময় সিনেমার পর্দায় দেখেছেন তিনি এখন জেলে তাদের কাছাকাছি। বর্তমানে তিনি রয়েছেন ২ নম্বর ওয়ার্ডে ২০ জন বন্দির সঙ্গে। জেলের আদব কায়দা এখনও বুঝে উঠতে পারেননি অর্পিতা। তাই তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসছেন অন্য বন্দিরা। কেউ তার কাপড় কেচে দিচ্ছেন, কেউ কম্বল বিছিয়ে বিছানা করে দিচ্ছেন, কেউ খাবার এনে দিচ্ছে। জেলের নিরামিষ খাবারে একেবারেই মানিয়ে নিতে পারছেন না অর্পিতা। তবুও চেষ্টা করে চলেছেন মানিয়ে নেওয়ার। সোমবার জেলে অর্পিতার সঙ্গে দেখা করেন তাঁর আইনজীবীরা। অর্পিতা তাঁদের জানিয়েছিলেন, চিকেন, মটন, মাছ বা ডিম কিছুই তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না। জেল সূত্রের খবর, কোন দিন বন্দিদের কী খাবার দেওয়া হবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকে। তাই রুটিন বদল করা সম্ভব নয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct