আপনজন ডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের খারগোন জেলার শিল্পাঞ্চলের নিমরানিতে মব লিঞ্চিংয়ের ঘটনা সামনে এসেছে, যার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। জানা গিয়েছে, চার দিন আগে একটি কারখানার বাইরে এক যুবককে চোর সন্দেহে বেধড়ক মারধর করে সেখানকার লোকজন। মুখে দাড়ি থাকায় তার ধর্ম পরিচয়ও জিজ্ঞেস করা হয়। সে নিজেকে হিন্দু বলে পরিচয় দিলেও তার জামা কাপড় খুলে লিঙ্গ দেখে পরীক্ষা করা হয় সে কোন ধর্মের। যদিও মারধরের প্রকোপে তাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ কর্মকর্তারা চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তাছাড়া দেরিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা পুলিশকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ আগস্ট রাতে নিমরানি নর্মদা ফুড প্রসেসিং কোম্পানিতে ড্রামারের কাজ করা এক যুবককে লোকজন চুরির আশঙ্কায় নির্মমভাবে মারধর করে। আদিত্য (চিকু) নামে নিহত যুবকের ভাই অভিযোগ করেন, কযেকজন এসে সোশ্যাল মিডিয়া ভিডিও পোস্টে তার ভাইয়ের মারধরের দৃশ্যের কথা জানায়। তিনি বলেন, আমি যখন জানতে পারলাম অভিযুক্তরা রীতেশ শর্মা, রামনিবাস চৌধুরী, বাবলু দাউদে, চেতন পাতিল এবং নর্মদা ফুড প্রসেসিং কোম্পানির অন্যান্য কর্মচারী। তখন তাকে ও তার পরিবারকেও হুমকি দিয়ে বলা হয় থানায় গেলে মেরে ফেলা হবে। তারপর খালতাকা থানায় এফআইর দায়ের করতে গেলে তা নেওয়া হয়নি বলে তার অভিযোগ।
এ ব্যাপারে নিহতের মা অভিযোগ করে বলেছেন, আমার ছেলে ড্রামারের কাজ করত। সে খালঘাট ঢোল বাজাতে গিয়েছিল। সেখান থেকে এসে শটকাট রুট ধরে বাড়ি ফিরছিল। যখন কারখানার কাছে আসে তখন তার সঙ্গে কয়েকজনের বচসা হয়। সে সময় সেও মদ পান করছিল। তখন বেশ কয়েকজন তাকে তাকে মারধর করে এবং তার জামাকাপড় কেড়ে নেয়। তার অন্তর্বাস খুলে দেখে তিনি মুসলিম না হিন্দু। যদিও সে জানিয়েছিল তিনি একজন হিন্দু। তার পরেও তাকে মারধর করতে থাকে বলে অভিযোগ করেন। এমনকী পুলিশের সামনেও তার ছেলেকে মারা হয় বলে অভিযোগ জানান। তবে, ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একদল জনতা দাড়িওয়ালা ব্যক্তিকে লাঠি দিয়ে মারছে। ভিডিওতে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে, যে ব্যক্তিকে হত্যা করেছে তাকে বারবার তার নাম জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, তাকে একটি বিশেষ ধর্মের লোক বলে হত্যার কথাও বলা হয়। এই ঘটনায় খারগোনের পুলিশ সুপার ধরমবীর সিং বলেন, এক যুবককে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি তার নজরে আনা হয়েছে। স্থানীয় ফাঁড়ির ইনচার্জকে সাময়িক সাসপেন্ড করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct