সম্প্রীতি মোল্লা, কলকাতা, আপনজন: চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দারস্থ হলো ঝাড়খন্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ক।শুক্রবার দুপুরে তাঁরা দ্রুত শুনানির আর্জি রেখেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে, আদালত তা গ্রহণ করেছে।পাশাপাশি ধৃত ওই তিন বিধায়ক সিঙ্গেল বেঞ্চে তাঁদের জামিনের আবেদন রেখেছেন। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হলেন ঝাড়খণ্ডের তিন বিধায়ক ইরফান আনসারি, রাজেশ কাছাপ এবং নমন বিক্সাল।এই মামলা করার অনুমতি দিলেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছেন ওই তিন বিধায়ক। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।এদিন মামলাকারীরা দ্রুত শুনানির আর্জিও জানান ডিভিশন বেঞ্চে। উল্লেখ্য , সিআইডি তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ এবং তদন্তভার সিবিআই বা অন্য কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দেওয়ার দাবিতে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ক। এর পাশাপাশি শুক্রবার তাঁরা সিঙ্গেল বেঞ্চে জামিনের আবেদন করেন। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের একক বেঞ্চ আবেদনের শুনানির অনুমতি দিয়েছে। আগামী সোমবার শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে।গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের এজলাসে উঠেছিল ঝাড়খন্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কদের সিবিআই তদন্ত দাবি রেখে মামলাটি।ওইদিন কলকাতা হাইকোর্টের তরফে সিবিআই তদন্তর আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সিআইডি তদন্তে যে স্থগিতাদেশ জারির আবেদন রাখা হয়েছিল তাও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে ওই ঝাড়খন্ডের তিন বিধায়কের গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণে নগদ অর্থ উদ্ধারের ঘটনায় সিআইডি যে তদন্ত করছে, সেই তদন্তের ভার সিবিআই বা অন্য কোনও নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন ওই তিন বিধায়ক।ওইদিন শুনানি পর্বে সেই আবেদন খারিজ করে আদালতের নির্দেশ, রাজ্য পুলিশই ওই ঘটনার তদন্ত করবে। গত বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকার পক্ষের বক্তব্য শোনার পর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে।গত বুধবার জরুরি ভিত্তিতে ঝাড়খণ্ডের ধৃত তিন বিধায়কের আর্জি শুনেছিল কলকাতা হাইকোর্ট । হাইকোর্টের কাছে তাঁদের আবেদন ছিল, -' অবিলম্বে সিআইডি তদন্তে স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। প্রয়োজনে সিবিআই বা অন্য কোনও নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হোক তদন্তভার'। মামলাকারীদের দাবি, -' রাজনৈতিক ভাবে তদন্তকে প্রভাবিত করা হচ্ছে। এফআইআরের কপিও দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্য পুলিশের ওয়েবসাইটেও তা আপলোড করা হয়নি। হিসাব বহির্ভূত টাকা থাকায় কালো টাকা আইন এবং আয়কর আইনের আওতায় পদক্ষেপ করা হোক। সিআইডির এই ঘটনার তদন্ত করার কোনও অধিকার নেই'।প্রতুত্তরে সরকারি আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছিলেন,-' অভিযুক্ত কখনওই ঠিক করে দিতে পারেন না, কোন তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করবে'। ওইদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ভট্টাচার্যের নির্দেশ, -' ধৃত তিন কংগ্রেস বিধায়কের গাড়ি থেকে নগদ অর্থ উদ্ধারের তদন্ত করবে সিআইডি-ই। অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থার হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হবে না। রাজ্য পুলিশের তদন্তে এখনই হস্তক্ষেপ করবে না আদালত'।এর পাশাপাশি তদন্তের উপর স্থগিতাদেশের আরজিও খারিজ করে আদালত।
নিরপেক্ষভাবে, স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে সিআইডি তা ওইদিন জানিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। গ্রেপ্তারি নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের মন্তব্য মামলা হস্তান্তরের জন্য পর্যাপ্ত নয়। সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশে বলা আছে -' অভিযুক্ত কখনও তদন্তকারী সংস্থা নির্বাচন করতে পারে না। অভিযুক্তদের গাড়ি হাওড়ার পাঁচলা থেকে আটক হয়েছে। এরফলে রাজ্য পুলিশের তদন্ত করতে কোনও অসুবিধা নেই। তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশির তরফে যে প্রক্রিয়াগত গাফিলতির অভিযোগ মামলাকারীরা করেছেন, তাও গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দেয় আদালত। বিধায়কদের দাবি, -' এই অভিযোগে একাধিক রাজ্যের যোগ রয়েছে। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ কীভাবে তদন্ত করবে?' রাজ্যের দাবি, -' এফআইআর আপলোড করার জন্য তিনদিনের সর্বোচ্চ সময়সীমা নির্ধারিত আছে। সঙ্গে সঙ্গে এফআইআর আপলোড করা হয়নি বলে মামলা সিবিআই হস্তান্তর করতে হবে, এটা কোনও গ্রহণযোগ্য যুক্তি হতে পারে না। গত ১ লা আগস্ট এফআইআর ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা নির্বাচন করার অধিকার অভিযুক্তের নেই'।উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে হাওড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ককে। একটি কালো গাড়ি করে ঝাড়খণ্ডে যাচ্ছিলেন তাঁরা। তাঁদের গাড়িতে ছিল ৪৯ লক্ষ টাকা।পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কের থেকে হিসাব বহির্ভূত টাকা উদ্ধারের ঘটনায় কলকাতার ব্যবসায়ী মহেন্দ্রকে আটক করেছে সিআইডি। গত বুধবার সকালে তাঁর সল্টলেকের ইএম বাইপাসের বাড়ির সামনে থেকে আটক করে জেরা শুরু করা হয়েছে। বিকানেরের ওই বহুতল থেকে ৩ লক্ষ ৩১ হাজার ৭০০ টাকা এবং ২২৫টি রুপোর মুদ্রা উদ্ধার হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চে ঝাড়খন্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কের সিবিআই তদন্ত এর আর্জি খারিজ করা হয়েছে। সিআইডিতেই আস্থা রেখেছে সিঙ্গেল বেঞ্চ।চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই দ্রুত শুনানি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দারস্থ হলো ঝাড়খন্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ক। আদালত তা গ্রহণ করে থাকে। পাশাপাশি ধৃত ওই ৩ জন বিধায়ক তাঁদের জামিনের আবেদন রেখেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের সিঙ্গেল বেঞ্চে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct