সম্প্রীতি মোল্লা , কলকাতা, আপনজন: চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে উঠে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা।এই মামলার শুনানি শেষে বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন - ' উপাচার্য পদে বহাল থাকবেন সৈকত মিত্র'। রাজ্যের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন সৈকত মিত্র। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই চলতি সপ্তাহে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টের তরফে। তিন সপ্তাহের মধ্যে সৈকত মৈত্রকে কাজে যোগদানের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ।
গত ২৯ জুলাই উপাচার্যকে অপসারণ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল রাজ্য সরকার। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে নুতন উপাচার্য নিয়োগের কথা জানায় রাজ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সৈকত মিত্র। অবিলম্বে ওই বিজ্ঞপ্তি খারিজ করার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সৈকত মৈত্র। তাঁর আবেদনকেই এদিন স্বীকৃতি দিল হাইকোর্ট । কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি পর্বে সৈকত মিত্রের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, -' রাতারাতি রাজ্য কিভাবে এমন একটি বিজ্ঞপ্তি দিতে পারে? ' প্রতুত্তরে রাজ্যের তরফে উল্লেখ করা হয়, -' ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট, ২০০০ অনুসারে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা আলাদা আইন রয়েছে। আইন অনুসারে উপাচার্যের ২ বছরের বেশি মেয়াদ থাকে না। সেই নিয়ম মেনে সরানো হয়েছিল'। এরপর পুনরায় সৈকত মিত্রের আইনজীবী জানান , -' ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট, ২০০০- এর পর এসেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট, ২০১৭ এসেছে। সেই আইন অনুসারে ২২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, সৈকত মিত্রের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেন?' মামলাকারীর আইনজীবীদের এই যুক্তি মেনে নিয়েই এ দিন সৈকত মিত্রকে পুনরায় নিযুক্ত করার নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ। গত চার বছর ধরে ওই প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে কাজ করেছেন সৈকত মিত্র। ২০২১ সালে তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। এরপর ২৯ জুলাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজ্য সরকার তাঁর অপসারণের নির্দেশ দেয়। সৈকত মিত্র আদালতের দ্বারস্থ হলে রাজ্যের কাছে অপসারণের কারণ জানতে চেয়েছিল আদালত। শুনানি শেষ হওয়ার পর খারিজ করা হল রাজ্যের নির্দেশ। গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে কলকাতার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলেছিল। ওইদিন উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট।
এই নিয়োগ নিয়ে একদিনের মধ্যে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ। ওইদিন কলকাতা হাইকোর্ট এর বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসের নির্দেশ ছিল , -' নতুন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, তা এক সপ্তাহ স্থগিত থাকবে'।পুরনো উপাচার্যকে কেন অপসারিত করা হল, তা মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে আদালতে জানাতে হবে রাজ্যকে'।উল্লেখ্য, গত চার বছর ধরে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে রয়েছেন সৈকত মৈত্র। গত বছর ওই পদে তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি করানো হয়। এই মেয়াদ বৃদ্ধি কালের মধ্যেই গত ২৯ জুলাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন উপাচার্য নিয়োগের কথা জানায় রাজ্য সরকার।ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সৈকত মৈত্র। মামলাকারীর অভিযোগ, -' হঠাত্ করে না জানিয়ে তাঁকে উপাচার্য পদ থেকে সরানো হয়েছে, যা নিয়ম বহির্ভূত'। এই মামলার শুনানিতে ওইদিন নতুন উপাচার্য নিয়োগে রাজ্যের নির্দেশিকায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। পাশাপাশি রাজ্যের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল -' মেয়াদ বৃদ্ধির মধ্যেই কোন কারণে পুরান উপাচার্য কে অপসারণ করা হলো? ' তা মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে রাজ্য কে এই রিপোর্ট জমা দিতে বলে হয়েছিল আদালতের তরফে।এরপর রাজ্যের রিপোর্ট জমা পড়ে। চলে দুই পক্ষের সওয়াল-জবাব। চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের কৌশিক চন্দের এজলাসে এই মামলার রায়দান ঘটে।যেখানে বহাল রাখা হয়েছে উপাচার্য পদে থাকা সৈকত মিত্র কে।জানা গেছে, এই নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল পিটিশন দাখিল করবে রাজ্য।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct