আপনজন ডেস্ক: জানলে অবাক হবেন, গরম ভাতের চেয়ে নাকি বাসি ভাতেই থাকে বেশি পুষ্টিগুণ। এমনই মত পুষ্টিবিদদের। গবেষণায় দেখা গেছে বাসি ভাতে নানা ধরনের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা পুষ্টিকর খনিজ পদার্থ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, জিংক, ফসফরাস, ভিটামিন বি ইত্যাদি। ১০০ মিলিগ্রাম সাধারণ ভাতে আয়রনের পরিমাণ থাকে ৩.৫ মিলিগ্রাম। কিন্তু ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে তৈরি পান্তা ভাতে এর পরিমাণ বেড়ে গিয়ে হয় ৭৩.৯ মিলিগ্রাম। ক্যালসিয়ামের পরিমাণও অনেক বেড়ে যায়। ১০০ মিলিগ্রাম সাধারণ ভাতে যেখানে ক্যালসিয়াম থাকে ২১ মিলিগ্রাম, সেখানে পান্তা ভাতে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৮৫০ মিলিগ্রাম। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাসি ভাতে থাকা পুষ্টিকর পদার্থগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরের হাড়গুলোকে শক্ত রাখে ক্যালসিয়াম। শরীরে নিঃসৃত এনজাইমকে সক্রিয় করতে সাহায্য করে ম্যাগনেসিয়াম। বাসি ভাতে প্রচুর পরিমাণে বিটা-সিটোস্টেরল, কেম্পেস্টেরোলের মতো মেটাবলাইটসও থাকে, যা শরীরকে প্রদাহ বা যন্ত্রণা থেকে রক্ষা করে। এসব কোলেস্টোরেল কমাতেও এসব সাহায্য করে। বাসি ভাতে ল্যাকটিক এসিড ব্যাকটেরিয়া আছে যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। সাধারণত টকদইয়ের মধ্যে এই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। অর্থাৎ বাসি ভাত খেলে শরীরে প্রোবায়োটিকও মিলবে। প্রোবায়োটিকের কারণে অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। ফলে পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকে ও হজমশক্তি বাড়ে। বিপাকক্রিয়া উন্নত হওয়ায় ওজনও কমতে শুরু করে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ভাতের ফারমেন্টেশন হলে সেখানে অ্যালকোহলের উপাদান তৈরি হয়। ওই বাসি ভাত খাওয়ার পর শরীর আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে ঘুম পেতে পারে। সাধারণত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের মতো অণুজীবের প্রজনন ক্ষেত্র হয়ে ওঠার ভয়েই বিশেষজ্ঞরা পানতা বা বাসি ভাত খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেন। তাই রান্না করার এক ঘণ্টার মধ্যে পাত্রটি ঠান্ডা করে একটি বক্সে ফ্রিজে রাখুন। অবশ্যই এয়ার টাইট পাত্রে ভাত রাখতে হবে। রান্না করা ভাত কখনো ঘরের তাপমাত্রায় ২ ঘণ্টার বেশি সময় রেখে দেবেন না। আর অবশ্যই ফ্রিজ থেকে বের কারার পর ঘরের তাপমাত্রায় আসার আগেই ভাত খেয়ে নিতে হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct