এম মেহেদি সানি, কলকাতা, আপনজন: সোমবার দুপুরে নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, বুধবার মন্ত্রিসভায় রদবদল তিনি করবেন। সেই রদবদলই হল বুধবার বিকেলে। রাজ্যের অপসারিত মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সংক্রান্ত কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই মমতা চাইছিলেন, ‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তি’র লোকজনকে সরকার পরিচালনায় নিয়ে আসতে। তবে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সাধন পান্ডে মারা গিয়েছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে। তাঁদের দফতরগুলো প্রায় খালি পড়ে রয়েছে। আমার পক্ষে এতগুলো দফতর একা দেখা সম্ভব নয়। তাই মন্ত্রিসভায় একটা ছোট রদবদল করছি।’’ এই রদবদলে ৯জন মন্ত্রী হলেও নতুন মুখ সাতজন। মন্ত্রিত্ব হারালেনও কয়েকজন। তারা হলেন হুমায়ুন কবীর, সৌমেন মহাপাত্র, রত্না দে নাগ এবং পরেশ অধিকারী। উল্লেখ্য, স্কুলে নিজের মেয়ের শিক্ষককে কেন্দ্র করে বিতর্কে জড়িযে পড়েছিলেন পরেশ অধিকারী। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তার মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি যায়। সেসময় হাইকোর্ট মন্তব্য করেছিল, মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো উচিত পরেশ অধিকারীকে। তাই তার মন্ত্রিত্ব যাওয়া নিশ্চিত ছিল বলা যায়। তবে, মন্ত্রিসভার রদবদলের পর স্পষ্ট হয়ে উঠল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাবিতরাই মূলত অগ্রাধিকার পেলেন। ফিরহাদ হাকিমের পরিবহণ দফতর কেড়ে নেওয়া সেক্ষেত্রে ইঙ্গিতবহ। ফলে গুরুত্ব কমল তার।
অনদিকে, মন্ত্রিসভার রদবদলে বেশি গুরুত্ব পেল অন্য দল থেকে আসায় প্রাক্তনীরা। বিশেষ করে বাবুল সুপ্রিয়র কথা বলা যেতে পারে। আসানসোলের দুবারের বিজেপি বিধায়ক যিনি চরম মুসলিম বিদ্বেষী বলে পরিচিত ছিলেন তিনি বিজেপির সাংসদ পদ ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়ে বালিগঞ্জ বিধানসভা থেকে জিতেছেন। প্রাক্তন সেই বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে তৃণমূল ‘পুরস্কৃত’ করল রাজ্যের তথ্য প্রযুক্তি ও পর্যটন মন্ত্রী করে। আর ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী করা হল। এছাড়া হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তাজমুল হোসেনও প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক যাকে ক্ষুদ্র, অতি ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নতুনদের মধ্যে মমতার কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী, মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায় চৌধুরী (স্বাধীন দায়িত্ব), পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, সেচ ও জলপথ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, স্বনির্ভর ও স্বনিযুক্তি মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, স্কুল শিক্ষা মন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মন। আর ফিরহাদের আবাসন দফতর দেওয়া হয় অরূপ বিশ্বাসের হাতে। আর পরিষদীয় ও কৃষি মন্ত্রী করা হয়েছে প্রবীণ বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct