মোল্লা মুয়াজ ইসলাম, বর্ধমান, আপনজন: ভালোবাসা কোন বাঁধ মানে না। নারী পুরুষ জাতি ধর্মের ঊর্ধ্বে দেশ কালের গণ্ডি ছাড়িয়ে মানুষের অকৃত্রিম ভালবাসার এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ভারতবর্ষের পশ্চিমবাংলা রাজ্যের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ থানার আরাডাঙ্গা গ্রামের নজরুল ইসলাম। দারিদ্র্য কখনো ভালোবাসার অন্তরায় হতে পারে না তার জ্বলন্ত প্রমাণ তিনি । দেশ ভাগ হয়ে হয়েছিল ১৯৪৭ সালে , ভারতকে টুকরো করে গড়ে উঠে পাকিস্তান । ভারতের সাহায্য নিয়ে বাংলাদেশ রাষ্টের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান। দেশ ভাগ হয়েছে ঠিকই কিন্তু কোলকাতায় পড়াশুনা করা অসংখ্য গুনো মুগ্ধ রেখে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু । এই পশ্চিমবাংলায় তার অন্যতম নিদর্শন হতদরিদ্র নজরুল ইসলাম খান। তার মিষ্টির দোকানের নাম ‘ বঙ্গবন্ধু মিষ্টান্ন ভান্ডার’ পশ্চিমবঙ্গ বঙ্গে যা এক বিরল দৃষ্টান্ত। নজরুল ইসলাম বলেন বঙ্গবন্ধু তার কাছে আবেগ , একজন হিরো তিনি যেমন দেখতে ছিলেন তেমনি তার বক্তব্য তাকে খুবই আকর্ষণ করত। বঙ্গবন্ধু যখন খুন হয়ে যান তখন তার বাড়িতে হাড়ি চড়ে নি ।
মানুষ যে এত হিংস্র হতে পারে তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি । বর্তমান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি তার আছে অকৃত্রিম ভালবাসা। উন্নততর বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম কারিগর হাসিনাকে সালাম জানিয়েছেন । নজরুল ইসলাম বলেন তিনি নিজো হাতের তৈরি মিষ্টি খাওয়াতে চান বঙ্গবন্ধু কন্যাকে । কিছুদিন আগে বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় পশ্চিম বাংলার পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের আরাডাঙ্গার এই মিষ্টির দোকানের ছবি ভাইরাল হয় । পরবর্তীকালে বাংলাদেশের বহু বিশিষ্ট এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ছবিটি পোস্ট করতে থাকেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় বিশিষ্ট গবেষক জাহাঙ্গীর আলমের চোখে পড়ে যিনি সুদূর বাংলাদেশের ময়মনসিংহের বাসিন্দা। তিনি পূর্ব বর্ধমানের বিশিষ্ট সাংবাদিক মোল্লা শফিকুল ইসলামের সাহায্য চান ।পরবর্তীকালে শফিকুল সাহেবকে নিয়ে সেই মিষ্টির দোকানে পৌঁছে যান। মিষ্টির দোকানের মালিক নজরুল ইসলাম খানকে ফুলের তোড়া উত্তরীয় এবং একটি গাছের চারা উপহার দেন জাহাঙ্গীর আলম। বাংলাদেশের অতিথীদের কাছে সম্মানিত হয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন নজরুল ইসলাম। বঙ্গবন্ধুর দেশের মানুষ এর কাছে এই সম্মান তিনি চিরকাল মনে রাখবেন বলে জানান । বঙ্গবন্ধুর নামে একটি গাছ রোপন করেন জাহাঙ্গীর আলম এবং নজরুল ইসলাম খান। জাহাঙ্গীরের কাছে আকুল আবেদন যদি সম্ভব হয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তথা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যার সঙ্গে একবার দেখা করার সুযোগ পেলে তিনি নিজেকে ধন্য মনে করবেন। জাহাঙ্গীর সাহেব বলেন তিনি চেষ্টা করবেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনার । ভালোবাসার এক অনন্য নজির নজরুল ইসলাম যিনি তার প্রিয় পুত্রের নাম ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নামে রেখেছেন। যদিও সেই প্রিয় পুত্রকে নিজের কাছে রাখতে পারেননি। রোজকারের তাগিদে তাকে সুদূর উত্তরপ্রদেশের লখনোই পাঠাতে হয়েছে । জ্যেষ্ঠ পুত্রের নাম রাখেন মুজিবুর রহমান খান। তার একান্ত ইচ্ছা ভারত বাংলাদেশের মৈত্রী যেন অটুট থাকে জাতি ধর্ম বর্ণের ঊর্ধ্বে মানুষের মানুষের যেন ভালবাসা বজায় থাকে। তার দুই ছেলে কাছে নেই ,বয়স সমস্যা ,ঘরে অভাব তবু বঙ্গ বন্ধুর নামের দোকানের ঝাঁপ বন্ধ করতে চাননা নজরুল ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct