সন্ন্যাসী কাউরী, পাঁশকুড়া, আপনজন: অসহায় বাবার অভাবী মেয়ে সালেহা খাতুন। বাড়ি পাঁশকুড়া ব্লকের নারান্দায়। সাত ভাই বোনের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় বৃদ্ধ বাবাকে। বৃদ্ধ বাবার নামমাত্র রোজগারে দুবেলা দু মুঠো পেট পুরে খেতে পায় না সালেহা। এক টুকরো ঘরে সাত ভাই বোনকে থাকতে হয় খুব কষ্ট করে । যে মেয়ের দুবেলা দু মুঠো ঠিকঠাক খাবার জোটে না। মাথা গোজার তেমন ঠাঁই নেই। সেই মেয়ে আজ পেয়েছে সুখের সংসার। গত শুক্রবার এক ব্যবসায়ী ছেলের সাথে বিয়ে হয় সালেহার। মেয়ের বিয়ে কিভাবে হবে, বিয়ের খরচ জোগাড় হবে কোথা থেকে সে নিয়ে এতটুকু চিন্তা করতে হয়নি, সালেহার বাবা শওকত আলিকে । এই বিয়ের সমস্ত কিছুর আয়োজন করেন এক শিক্ষক পরিবার। প্রধান শিক্ষক গোলাম মুস্তাফা, তার দাদা আব্দুল মাজেদ এবং বন্ধু শেখ রেজাউল । তারাই কাঁধে তুলে নেয় সালেহার বিয়ের দায়িত্ব। মেয়ের গয়না শাড়ি নিমন্ত্রিত অতিথিদের খাওয়া-দাওয়া সহ যাবতীয় খরচ বহন করেছে তাঁরা। সালেহার বিয়ে দিয়ে স্বামীর ঘরে পাঠিয়েছে এই তিনজন। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও শিক্ষক গোলাম মোস্তাফার স্ত্রী শান্তি বিবি এবং বৌদি ফেরদৌসী বিবি নিজের হাতে কনের সাজে সাজিয়েছেন সালেহাকে । সমস্ত আচার মেনে বিয়ে অনুষ্ঠান করা, খাওয়া দাওয়া সালেহার শ্বশুরবাড়ি যাওয়া পর্যন্ত তারা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে করেছেন। গোলাম মোস্তাফা বলেন , কোনো ভালো করলে নিজের মনের মধ্যে একটা তৃপ্তি পাওয়া যায়, শান্তি পাওয়া যায় সেটা আমি আজ পেয়েছি। মেয়েটি সত্যি খুব ভালো । অসহায় মেয়েটি বেশির ভাগ সময় আমাদের বাড়িতে কাটাতো। খুব অভাবের মধ্যে জীবন কাটানোর পর যে একটা ভালো পরিবারের ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে। তাতে আমরা খুব খুশি। খুশি সালেহাও। অভাবের সংসারে বড়ো হয়ে ওঠা সালেহা , নিজের বিয়ে হবে কিনা জানত না । শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার সময় শান্তি ও ফিরদৌসীদের জড়িয়ে ধরে কেঁদে ভাসিয়েছেন। কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ওই শিক্ষক পরিবারের সদস্যদের প্রতি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct