মাহাবুব খান, কলকাতা, আপনজন: মালদার কালিয়াচকের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইমার্জেন্সি ব্লাড সার্ভিসের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি নিয়ে আগামী ১ আগস্ট ডেপুটেশন দেওয়ার কথা নবান্নে। নবান্নের সেই ডেপুটেশনে প্রতিনিধিত্ব করতে ২০ জুলাই মালদার কালিয়াচক থেকে পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করলেন তিন রক্তযোদ্ধা, যারার মানুষের প্রয়োজনে চুটে গিয়ে বিনামূলে রক্তদান করেন। তাদেরই একজন আলমগীর খান। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ কিমি পথ হেঁটে রক্তদান, থ্যালাসেমিয়ার মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে ব্যস্ত। হাঁটার পথে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং নানান বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে কিভাবে এই উদ্দেশ্য সফলতা পাবে। সোমবার আলমগীর খানের যাত্রাপথ এসে পৌঁছায় নদিয়ার পলাশিতে এবং পলাশিতে দুজন স্বেচ্ছাসেবী সঙ্গী পেয়ে যায় ফারুক শেষ এবং কৃষ্ণ বর্মন। পলাশী থেকে তিনজন সচেতনতা বার্তা দিতে দিতে এগিয়ে যায়। এদের মাঝ রাস্তায় যখন রাত হয় তখন স্বেচ্ছাসেবী ভাইদের বাড়িতে রাত্রিযাপন করেন। আবার সকাল হলে পূর্বের দিনের মতন এগিয়ে চলেছে দিনের পর দিন। কালিয়াচকের আলমগীরের সাথে কথা বলে জানা যায় এর আগেও তিনি কালিয়াচক থেকে পায়ে হেঁটে দিল্লি অভিমুখে যাত্রা করেন ২৪ শে মার্চ থেকে ৮ মে পর্যন্ত এবং তার যাত্রাপথ শেষ হয় ১৪৮০ কিমি পথ হেঁটে সচেতনতার বার্তা নিয়ে। আবার তার সহযোদ্ধা স্বেচ্ছাসেবী ফারুক বলেন,আমরা নবান্নে ডেপুটেশন দেওয়ার জন্য যে যাত্রা শুরু করেছি সেটা শেষ হবে ১লা আগস্ট। তারা নবান্নে গিয়ে ডেপুটেশন দেবেন রক্ত যোদ্ধাদের মিলিত বিভিন্ন আবেদন নিয়ে।
সেইসব দাবিগুলির অন্যতম হল:
১. রক্তদান শিবির করতে যে খরচা হয় তার সমস্ত দায়িত্ব ব্লাড ব্যাংক এ নিতে হবে নচেৎ ২৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা করতে হবে ডোনার মাথাপিছু।
২. ৬মাস এ একবার,মেডিক্যাল অফিসার, সিএমওএইচকে নিজের জেলার রক্তযোদ্ধাদের নিয়ে আলোচনা সভা করতে হবে।
৩.কম্পোনেন্ট ইউনিট প্রতিটি ব্লাড ব্যাংক এ করতে হবে।
৪.রক্ত নিয়ে কালোবাজারি বন্ধ করতে হবে,সেদিকে নজর দিতে হবে।
৫.বহু ব্লাড ব্যাংক বিনা রেকুইজিশন এ রক্ত জোগাড় করতে বলে,এটা বন্ধ করতে হবে।
তারা আরো জানান, এরপর থ্যালাসেমিয়া রোগীদের নিয়ে কিছু দাবি রয়েছে। থ্যালাসেমিয়া মুক্ত রাজ্য গড়ে তুলতে কিছু পরিকল্পনা নেওয়অাহয়েছে। সেগুলি বাস্তায়নের জন্য সরকারি সহযোগিতা চাওয়অ হবে। তার মধ্যে অন্যতম হল: ১. পাঠ্যপুস্তকের একটি অধ্যায় থাকবে সেখানে অবশ্যই শিশুদের শেখানো হবে রক্তদান মহৎ কাজ শুধু না একটি মানুষের জীবনদান আর থ্যালাসেমিয়া রোগের উৎপত্তি আর সাবধানতা।
২. মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে ঠিক যেমন রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামুলক ঠিক একই ভাবে থ্যালাসেমিয়া টেস্ট বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৩.বিয়ের সময় আইনত ভাবে ম্যারেজ রেজিস্ট্রির সাথে থ্যালাসেমিয়া টেস্টের রিপোর্ট বাধ্যতামূলক করা হোক।
উল্লেখ্য, গত ২০ জুলাইয়ের নবান্নের যাত্রা পথ শেষ হবে ১লা আগস্ট। আলমগীর তথা তার সঙ্গী কৃষ্ণ বর্মন ও ফারুক শেখকে এই মহৎ কাজের জন্য প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা এবং সাধারণ মানুষজন। কৃষ্ণ বর্মন জানান-১লা আগস্ট বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সদস্য আমাদের এই নবান্নে ডেপুটেশনে যোগ দেবেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct