সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: বাড়ির সামনে পৌঁছে গেছেন পুরসভার কর্মীরা, একটি গাড়ি নিয়ে। আর তারপর বেজে উঠছে কাসর।বাড়ির ভেতর থেকে মিথ্যা বা কোন মহিলা বেরিয়ে এসে ওই গাড়িতে দিয়ে দিচ্ছেন প্লাস্টিকে অথবা চটের থলিতে মোড়া পুজোর ফুল - বেলপাতা। এক অভিনব উদ্যোগ শুরু হয়েছে কলকাতা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ।উদ্যান হোক কিংবা পুকুর পাড়। এক কোণে প্লাস্টিকে মোড়া পুজোর ফুল-বেলপাতা ও অন্যান্য সামগ্রী পড়ে থাকার ছবিটা এ শহরে যত্রতত্র দেখা যায়। বিশেষত গঙ্গা সংলগ্ন এলাকায় এ হেন প্রবণতা বেশিই দেখা যায় শহরবাসীদের মধ্যে। কেউ কেউ তো আবার সেই ফুল-বেলপাতা সটান ছুড়ে ফেলেন গঙ্গার বুকেই। এই সমস্যা মেটাতে বাগবাজার এলাকায়, কলকাতা পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে শুধুমাত্র পুজোর ফুল-উপাচার সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট একটি গাড়ি বরাদ্দ করেছে পুর প্রশাসন। সেই গাড়ির সঙ্গে দু’জন পুরকর্মী স্থানীয়দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুজোর ফুল সংগ্রহ করছেন। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই ওয়ার্ড এলাকায় প্রতিটি গলির জন্য সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। বাসিন্দাদের বলা হয়েছে, বাড়িতে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পুজোর ফুল-বেলপাতা জড়ো করে রাখতে। এর পরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাঁসর বাজিয়ে সেই ফুল সংগ্রহ করে কম্প্যাক্টর যন্ত্রে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, প্রশাসন বার বার জৈব-অজৈব আবর্জনা পৃথক ভাবে পুরকর্মীদের দিতে বলছে। তবে অনেকেরই এখনও পুরনো অভ্যাস রয়ে গিয়েছে।
বাগবাজারের একাধিক ঘাটে পুজোর ফুল যত্রতত্র পড়ে থাকার যে ছবিটা এত দিন দেখা যেত, তার দ্রুত বদল হচ্ছে বলে দাবি পুরসভার। প্রতিমা নিরঞ্জন বা শ্মশানে শেষকৃত্যের কাজে আসা শবযাত্রীরা যাতে নির্দিষ্ট জায়গায় ফুল ফেলেন, সে জন্যে নির্দিষ্ট জায়গা করাও রয়েছে। এ বার গঙ্গার পাড়কেও স্তূপাকৃত ফুল-পাতার আবর্জনা থেকে মুক্ত করতে নজর দিয়েছে পুরসভা।ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপি ঘোষের দাবি, ‘‘গঙ্গার দূষণ ঠেকাতে সকলের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। তাই এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কোথাও যেতে হবে না। পুরকর্মীরাই সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে তাঁদের কাছে গিয়ে পুজোর ফুল সংগ্রহ করবেন। ইতিমধ্যেই ওয়ার্ডে সে কাজ শুরু হয়েছে এবং তাতে ভাল সাড়াও মিলছে।’’ যদিও এর আগে একই ভাবে উত্তর দমদম পুরসভাতেও পুজোর ফুল সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। এমনকি, সেখানে ওই পুজোর ফুল ব্যবহার করে অন্য সামগ্রী তৈরি করারপরিকল্পনাও করেছেন। তবে বাপি জানাচ্ছেন, আপাতত পুজোর ফুল কম্প্যাক্টর মেশিনেই ফেলা ছাড়াঅন্য কোনও পরিকল্পনা নেই। তবে অদূর ভবিষ্যতে সে বিষয়ে পর্যালোচনা করা হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct