সম্প্রীতি মোল্লা, কলকাতা, আপনজন: গত শুক্রবার থেকে ইডির বড়সড় অভিযান বাংলা জুড়ে। এরপর গ্রেপ্তার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।তারপর ব্যাংকশাল আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এসএসকেএমে মন্ত্রী। এরেই মাঝে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির দ্রুত আর্জি পেশ কলকাতা হাইকোর্টে।সেখানে অর্থাৎ হাইকোর্টের নির্দেশে মন্ত্রী কে এসএসকেএম থেকে ওড়িশার ভুবনেশ্বরে এইমসে পরীক্ষানিরীক্ষা। সর্বশেষ ১০ দিনের ইডি হেফাজতে মন্ত্রী পার্থ চট্টপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।জমজমাট রাজ্যের রাজনৈতিক কচকচানি। এরেই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য কে সামনে রেখে কলকাতা হাইকোর্টে আদালত অবমাননার পিটিশন দাখিল। তবে মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরী এই পিটিশন খারিজ করে দেন।এসএসকেএম হাসপাতাল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। তবে সেই মামলা গ্রহণ করল না কলকাতা হাইকোর্ট । এদিন এই মামলার শুনানি পর্বে বিচারপতি বিবেক চৌধুরী বলেছেন -' বিচারব্যবস্থার শিরদাঁড়া এত দুর্বল নয়, যে কেউ কিছু বললেই তাতে আঘাত লাগবে।আমি মনে করছি না আদালতের অবমাননা হয়েছে'।পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিত্সা নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছিল ইডি। ইডির আবেদন কে মান্যতা দিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ওড়িশার ভুবনেশ্বর এইমস হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশেই পার্থ চট্টপাধ্যায় কে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ভিনরাজ্যে। এই ঘটনায় গত সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, -' আমার লজ্জা লাগছে যে ওরা বলছে চিকিত্সার জন্য এইমসে নিয়ে যেতে হবে। এসএসকেএম ভারতে এক নম্বর। তাছাড়া এখানে মেডিক্যাল কলেজ, বাঙুর, শম্ভুনাথ পণ্ডিত, সাগরদত্তের মতো হাসপাতাল রয়েছে। রাজ্য সরকারের এত ভাল ভাল হাসপাতাল থাকতে কেন কেন্দ্রীয় সরকারের হাসপাতালে যেতে হবে?' এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য আছে কিনা? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের কারণেই আদালর অবমাননার মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। তবে মঙ্গলবার বিচারপতি বিবেক চৌধুরী জানিয়ে দিয়েছেন - ' এটি কে আদালত অবমাননা মনে করচায়না। আদালতের কোনও নির্দেশ নিয়ে যদি চ্যালেঞ্জ করা হয় সেটা আলাদা করে ভেবে দেখার মতো। তবে এসব নিয়ে আদালত ভাবছে না' ।
গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে আদালত অবমাননা হয়েছে বলে মামলা করার আবেদন করেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি।এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এদিন বিচারপতি বলেন, - ''ওই মন্তব্যের কেন প্রতিবাদ করব? আমি সত্যতাকে বিশ্বাস করি, তাই রাতে নিশ্চিন্ত হয়ে ঘুমাতে পারি।''ওই মঞ্চে হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন। তিনি তো কোনও প্রতিবাদ করলেন না?, 'আমি মনে করি বিচারব্যবস্থা এত ঠুনকো নয় যে ওই মন্তব্যে ভেঙে পড়বে।'' এর পাশাপাশি বিচারপতি আরও জানান, - 'আদালতের রায় নিয়ে বাইরে কে কী বললেন তা নিয়ে তিনি চিন্তিত নন। রায়ের বিরুদ্ধে চললে তিনিও আইনি পথেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। আদালতের বাইরে করা এই মন্তব্যকে অবমাননা বলে ধরছি না। তাছাড়া ওই মন্তব্যের জেরে রায়ের কিছু এসে যাবে না।' কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবীদের একাংশ জানাচ্ছেন - আদালতের রায় নিয়ে অসন্তোষ থাকলে আপিল পিটিশন দাখিল করা যায়, তবে এভাবে জনসম্মুখে কোন কিছু না বলায় ভালো। শুধু শুধু বিতর্ক তৈরি হয়'।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct