পৃথিবীর অন্যতম জীববৈচিত্রের আধার বা আঁতুরঘর হল সুন্দরবন, সুন্দরবন যেমন পরিবেশগত দুর্যোগের হাত থেকে সংশ্লিষ্ট বিস্তীর্ণ এলাকাকে রক্ষা করে চলেছে, তেমনি জলবায়ু গত ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রেও এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সুন্দরবন মানেই অগণিত গাছপালা, কীটপতঙ্গ, প্রজাপতি, পশুপাখি, ও সরীসৃপ সমৃদ্ধ এক অজানা জঙ্গলমহল। সুন্দরবন মানেই নোনা জল, কদামাটিতে ঘন হয়ে থাকা হেতাল, সুন্দরী, গরান, প্রভৃতি ম্যানগ্রোভ গাছ। তাই আর্ন্তজাতিক ম্যানগ্রোভ দিবস।
পৃথিবীর অন্যতম জীববৈচিত্রের আধার বা আঁতুরঘর হলো সুন্দরবন, সুন্দরবন যেমন পরিবেশগত দুর্যোগের হাত থেকে সংশ্লিষ্ট বিস্তীর্ণ এলাকাকে রক্ষা করে চলেছে, তেমনি জলবায়ু গত ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রেও এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সুন্দরবন মানেই অগণিত গাছপালা, হরেক রকম কীটপতঙ্গ, প্রজাপতি, পশুপাখি, ও সরীসৃপ সমৃদ্ধ এক অজানা জঙ্গলমহল। সুন্দরবন মানেই নোনা জল, কদামাটিতে ঘন হয়ে থাকা হেতাল,সুন্দরী, কেওড়া, গর্জন, বাইন, গরান, প্রভৃতি ম্যানগ্রোভগাছ, নানান ছোট বড় নদী, খারি, চারিদিকে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য ব দ্বীপের সমারোহ। ৫৬ টি ব দ্বীপ রয়েছে এই অসাধারণ বনাঞ্চলে। ৪২৬৪ বর্গ কিমি জুড়ে এর বিস্তার। এর মধ্যে ২৫৮৫ বর্গ কিমি সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ। রয়েল বেঙ্গল টাইগার হলো সুন্দরবনের রাজা। প্রসঙ্গত বলা যায় সুন্দরবন বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে আমাদের যে রকম রক্ষা করে, তেমনি আমাদের দায়িত্ব সুন্দরবনকে বাঁচানো। প্রকৃতপক্ষে এই বন মানে নিছক গাছ পালা নয়, বরং উদ্ভিদ, প্রাণী, কীটপতঙ্গ ও জীব অণুজীবের একটি জটিল ও স্পর্শকাতর পরিবেশ ব্যবস্থা। সুন্দরবনের এই স্পর্শ কাতরতার ব্যাপারে আমাদের আরো সংবেদনশীল হতেই হবে। দক্ষিণ অঞ্চলেও এই প্রাকৃতিক প্রাচীর রক্ষাকবচ হয়ে আগলে রাখবে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে। তাই সেই উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করেই আগামী ২৬ সে জুলাই আন্তর্জাতিক ম্যানগ্রোভ দিবস উদযাপন করা হয়ে থাকে। ইউ নেস্কো ২০১৫ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে ম্যানগ্রোভ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রতি বছর ২৬ শে জুলাই এই দিনটি পালন করে থাকে । সেই ভাবনা কে সাথে নিয়েই এই বছর প্রতিবারের ন্যায় পূর্বাশা ইকো হেল্পলাইন সোসাইটি সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গায় সপ্তাহব্যাপী দশ হাজার ম্যানগ্রোভ চারা লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, পাশাপাশি সুন্দরবন অঞ্চলের মহিলাদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে ২০০ জন মহিলাকে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করবার বিষয়টি কেও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, ম্যানগ্রোভ রোপন ও বাঘের দ্বারা আক্রান্ত পরিবারের সদস্যদের চোখের স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চশমা প্রদান করবার বিষয়টিও রয়েছে,তবে এবারে এই সংস্থার ম্যানগ্রোভ দিবস উদযাপনের অন্যতম মূল স্লোগানটি হলো “ লাগালে চারা,মিলবে পোনা” আজ্ঞে হ্যাঁ, সুস্থায়ী ভাবনা এবং বাস্তুতন্ত্রের পুনরুদ্ধারে ১০০ জন সুন্দরবনের মানুষকে মিষ্টি জলের মাছের পোনা বিতরণ করা হবে। পশ্চিমবঙ্গের একাধিক এনজিও, পরিবেশ প্রেমী এবং সমাজসেবী সংস্থার প্রতিনিধিরা উক্ত দিনের এই মহৎ কর্মযজ্ঞে উপস্থিত থাকবেন। শুধু তাই নয় সুন্দরবন অঞ্চলের মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে সেই শুভদিনে তাদের হাতে সেলাই মেশিন প্রদান করা হবে। উক্ত দিনের এই মহৎ কর্মযজ্ঞে উপস্থিত থাকবেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন বরিষ্ঠ অধ্যাপক ড: মলয় মুখোপাধ্যায়, সুন্দরবন গবেষক কানাইলাল দাস, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্য বন পাল ড: প্রনবেশ সান্যাল এবং আরো বিশিষ্ট গুণী জন ও পরিবেশ প্রেমী মানুষ জনেরা।এই প্রসঙ্গে পূর্বাশা ইকো হেল্পলাইন সোসাইটির কর্ণধার, সুন্দরবনের ভূমিপুত্র ,ম্যানগ্রোভ ম্যান উমাশঙ্কর মন্ডল জানান “ এবারে আমাদের সংস্থা এবং অন্যান্য বিভিন্ন পরিবেশ প্রেমী, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মিলে আন্তর্জাতিক ম্যানগ্রোভ দিবস পালন করতে চলেছি। এবারে সহনশীল উন্নয়নের উদ্দেশ্যে ম্যানগ্রোভ চারা রোপণ কারি সকল মানুষকে আমরা মাছের চারা তুলে দেবো। যাতে করে তারা ভবিষ্যতে এই মাছ চাষ করে স্বনির্ভর হতে পারে। এছাড়া বাঘের দ্বারা আক্রান্ত স্বামী ও স্বজন হারা মহিলাদের সেলাই মেশিন প্রদান করার একটা পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি মেডিকেল ক্যাম্প ঘন ঘন আয়োজন করার ভাবনাও আমরা ভেবে রেখেছি। সর্বোপরি আমরা সকলে সমবেতভাবে এই কাজটি করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছি।”
সজল মজুমদার
(লেখক শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক)
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct