সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চণ্ডীপুর থানার দিবাকরপুর পঞ্চায়েতের প্রথমখণ্ড জালপাই গ্রামে বিশ্বম্ভরদের বাড়ি। একডাকে সবাই চেনেন তাকে। তবে তিনি বর্তমানে কলকাতায় থাকেন। পার্থ শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীনই তাঁর নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কর্মরত বিশ্বম্ভরের স্ত্রী রিনা, দুই ভাই বংশীলাল ও দেবগোপাল প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পান। তালিকা এখানেই শেষ নয়। তাঁর মাসতুতো ভাই পূর্ণ মণ্ডল, মাসতুতো বোন গায়ত্রী মণ্ডল, মেসোমশাই ভীষ্মদেব মণ্ডল, মাসতুতো জামাই সোমনাথ পণ্ডিত, শ্যালক অরূপ ভৌমিক, শ্যালিকা অঞ্জনা মণ্ডল, প্রতিবেশী অমলেশ রায়ও একই বছরে একসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেয়েছেন। আর তাই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত। জানা যায়, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে তিনি এ বিষয়ে হলফনামা জমা দিয়েছেন। সোমবার এর শুনানি হতে পারে। তবে আইনজীবীদের ধারণা, পার্থ গ্রেফতারের পরে বিষয়টি আরও গুরুতর হয়ে উঠতে পারে।
বিশ্বম্ভরের আত্মীয় পরিজন ঠিক যেন ফুলে ফেঁপে উঠে বহুদূর ছড়িয়ে পড়েছে। অর্জন করেছে নামডাক। সেজভাই বংশীলাল বর্তমানে চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষও। এলাকায় দাপুটে তৃণমূল নেতা হিসাবেও পরিচিত। তিনি এবং মেজভাই বাবুলাল গ্রামের বাড়িতেই থাকেন। আর ছোটভাই দেবগোপাল চণ্ডীপুর বাজারে অন্য বাড়িতে থাকেন। বিশ্বম্ভরের বাবা পান্নালাল মণ্ডল ছিলেন সিপিএম নেতা। হাইস্কুলের শিক্ষকতার পাশাপাশি পান্নালাল আবার দিবাকরপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধানও ছিলেন। বংশীলাল অবশ্য তৃণমূলে যোগ দিয়ে ২০০৮ সালেই পঞ্চায়েতে লড়েছিলেন। তবে পরাজিত হন। ২০১৮ সালের ভোটে পঞ্চায়েত সমিতিতে জিতে বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষে হন তিন। তার আগেই ২০১৪ সাল নাগাদ প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকের চাকরি পেয়েছিলেন তিনি।একই পরিবারে এত জন সদস্যের স্কুল শিক্ষকের চাকরি পাওয়া ঠিক যেন কাকতালিও ব্যাপার! অবশ্য কাকতালীয় নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ? বংশীলালের জবাব, ‘‘যোগ্যতা প্রমাণ করেই চাকরি পেয়েছি। আইনিভাবে লড়ব। আদালতেই সব প্রমাণ দেব।’’ রমেশ মালিক নামে প্রাথমিক শিক্ষক পদের এক চাকরিপ্রার্থী হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct