সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: মধু সংগ্রহে ক্ষতি, অপরদিকে পুলিশি অত্যাচার। সবমিলিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মধু সংগ্রহে আসা বসিরহাটের মৌ-পালকরা। উত্তর ২৪ পরগনা থেকে বাঁকুড়াতে মধু সংগ্রহ করতে এসে মধু সংগ্রহ কম হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলার পুলিশদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন মৌ পালকরা । মধু সংগ্রহকারীরা বলেন , সংসার চালাতে মৌমাছির বাক্স নিয়ে আমাদের নানা জেলাতে যেতে হয় ১২ মাসই। যখন যে জেলায় যে ফসল ও শস্যবীজের মরসুম শুরু হয়— বাক্সবন্দি মৌমাছি নিয়ে সেখানে গিয়ে থাকি আমরা । খেতের পাশে বা পুকুরের ধারে সেই বাক্স থেকে মৌমাছিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। শ্রমিক মৌমাছিরা রানি মৌমাছির জন্য ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে আবার যে যার বাক্সে ফিরে আসে।
মূলত আমরা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, জেলার মৌ পালক । নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়ার জেলায় গিয়েথাকি এবং ইউক্যালিপটাস, লিচু, সরষে, ধনে, তিল, থেকে মধুও সংগ্রহ করে থাকি ।আর যাতে আমাদের রাস্তায় যেতে কোনো সমস্যা না হয় তাঁর জন্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৌপালক হিসেবে আমাদের প্রত্যেককে একটি করে কার্ড বানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া কথা নো তোয়াক্কা এক শ্রেনীর রাজ্যপুলিশের । মৌপালকরা বলছেন , এতকিছুর পরেও রাস্তায় যাওয়া-আসার পথে পুলিশি অত্যাচার আমাদের শেষ করে দিচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী - মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া মৌ পালকের কার্ড পুলিশ মোটেও মানছে না । উল্টে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার পরে জোরপূর্বক ভাবে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে নিচ্ছে । না দিলে রাস্তার উপরে গাড়িদাঁড় করিয়ে দিচ্ছে আর বেশিক্ষণ গাড়ি দাঁড় করানো মানেই মৌমাছির মৃত্যু ঘটবে । তাই বাধ্য হয়ে চোখের জল ফেলে উপার্জনের টাকা পুলিশের হাতে তুলে দিতে হচ্ছে আমাদের । মোহম্মদ হাবীবুল্লাহ মন্ডল নামের এক মৌ পালক বলেন, পুলিশরা এই ভাবে টাকা নেওয়া বন্ধ না করলে আমাদের ক্ষুদ্র পরিবারের লোকজনরা না খেতেপেয়ে মারা যাবে। তাই আমরা চাই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সমস্যার কথা একটু ভাবুক। এই কার্ডের পাওয়ার আরও বাড়িয়ে দিক। তাহলে হয়তো কিছু সংখ্যক পুলিশ আমাদের সাথে এই অমানবিক অত্যাচারটা পুরোপুরি বন্ধ করে দেব।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct