এম মেহেদী সানি, কলকাতা, আপনজন: দু বছর পর কলকাতার ধর্মতলায় একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে ফের জনজোয়ার দেখা গেল। বৃষ্টিভেজা মঞ্চ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দৃঢ়কণ্ঠে দাবি করলেন, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন বিজেপিকে প্রত্যাখ্যানের নির্বাচন হবে। অন্যান্য দলগুলি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শাসনের বিরুদ্ধে হাত মেলানোর ফলে বিজেপি কেন্দ্র থেকে ক্ষমতাচ্যুৎ হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোর গলায় বলেন, বিজেপি সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি অন্যরা এক হয়ে যাবে। তাই মমতা একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ আগতদের উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলার সব আসনেই জিততে হবে। আর শুধু বাংলাতেই নয়, অসম, ত্রিপুরা, ইউপির মতো অন্যান্য রাজ্যেও আমাদের জিততে হবে। অন্য কয়েকটি রাজ্যে আমরা আমাদের বন্ধুদের জিততে সাহায্য করব। মানুষের বৃষ্টি ২০২৪-এ বিজেপিকে ভাসাবে। ২০২৪ সালে শুধু একটা নির্বাচন হবে না, সেটা হবে প্রত্যাখ্যানের নির্বাচন।
মমতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে অন্যান্য দলগুলির হাত মেলানোর কথা বললেও তার মুখে বিরোধী ঐক্য নিয়ে কোনও শব্দ উচ্চারণ করেননি। কেন্দ্র বিজেপি সরকারকে হঠিয়ে দেশ বাঁচানোর ডাক দিলেও কীভাবে বিরোধীরা জোটবদ্ধ হবে তারও কোনও বার্তা দেননি। ২০১৮ লোকসভা নির্বাচনের আগে ব্রিগেডে অবিজেপি দলগুলো একমঞ্চে সভা করলেও ২০২৪-এর নির্বাচনে সেই ধরনের কোনও জনসভার কথাও বলেননি। বরং, বিরোধীদের প্রতি মমতার অনাস্থাই প্রকাশ পেয়েছে। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের প্রার্থী ও তৃণমূল নেতা যশবন্ত সিনহাকে বিরোধী দরগুলি ঐক্যবদ্ধ হযে ভোট দিলেও উপরাষ্ট্রপতি পদে বিরোধী দলের প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে তৃণমূল। ফলে, বিরোধী দলগুলি বিজেপির প্রতি মমতার প্রকৃতত মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। যদিও শহিদ সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি রান্নার গ্যাস, পেট্রোল, ডিজেল ইত্যাদির মূল্যবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন সামগ্রীতে পণ্য ও পরিসেবা কর বা ‘জিএসটি’ চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সোচ্চার হন।
মমতা এদিন স্লোগান তোলেন, ‘বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও’, ‘সিপিএম হঠাও দেশ বাঁচাও’, ‘গ্যাসের দাম বাড়ছে কেন, বিজেপি জবাব দাও’, ‘রেলে লোক ছাঁটাই হচ্ছে কেন বিজেপি জবাব দাও’, ‘বেকার যুবকদের চাকরি দেওয়া হচ্ছে না কেন বিজেপি জবাব দাও’, ‘চাকরি কাড়া হচ্ছে কেন, বিজেপি জবাব দাও’, ‘বেকারত্ব বাড়ছে কেন, বিজেপি জবাব দাও’ ইত্যাদি। কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে মমতা বলেন, বিজেপি চায় না চাকরি হোক। আমি চাকরি দেব বাংলার লোককে। আমি জানি রাস্তা কীভাবে বের করতে হয়। সিলিকন ভ্যালি হচ্ছে। ৫০ হাজার আইটি জানা ছেলেমেয়ের চাকরি হবে। দেউচা হয়ে গেলে বিদ্যুতের দাম বাংলায় কমে যাবে। ৫০০টি শিল্পপার্ক হচ্ছে। সেই সঙ্গে দলীয় কর্মীদের সতর্কবার্তা দিয়ে মমতা বলেন, চায়ের দোকানে চা খান নিজের টাকায়। আর কারও কাছে দলের নামে চাঁদা তুলবেন না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct