আপনজন ডেস্ক: বিংশ শতাব্দীর শুরুতে পারস্যের এই গোঁফ বিশিষ্ট পুরুষালী চেহারার রাজকন্যাই ছিলেন সেই সময়ের সমাজের দৃষ্টিতে সেরা সুন্দরী। এমনকি তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল অনেক পুরুষ। এদের মধ্যে ১৩ জন যুবক প্রত্যাখ্যাত হয়ে আত্মহত্যাও করে। বেশ কয়েক বছর ধরে গোঁফওয়ালা এক মহিলার ছবি ভাইরাল হয়।সেখানে তাকে প্রিন্সেস কাজার নামেই উল্লেখ করা হয়েছিল।ওই মহিলার নাম প্রিন্সেস কাজার। তার প্রকৃত নাম ফাতেমা খানম। তার উপাধি ইসমত উদ-দৌলা। তিনি সংক্ষেপে প্রিন্সেস ইসমত নামেই অধিক পরিচিত। তিনি ছিলেন তৎকালীন পারস্যের কাজার রাজবংশের রাজা নাসিরউদ্দিন শাহ কাজার এবং তার স্ত্রী তাজ উদ-দৌলার দ্বিতীয় কন্যা। কাজার রাজবংশের রাজকন্যা হওয়ার কারণেই তাকে প্রিন্সেস কাজার বলে চেনেন অনেকে। নাসিরউদ্দিন শাহ কাজারের ছেলে মেয়ে ছিল ২১ জন। তাদেরই একজন ছিলেন ইসমত উদ-দৌলা। তার জন্ম ১৮৫৫ অথবা ১৮৫৬ সালে। নাসিরউদ্দিন শাহের সময় পারস্যের আধুনিকায়নের ছোঁয়া লাগে তার রাজ দরবারেও। শাহেনশাহ নাসিরউদ্দিন শাহ কাজার ছিলেন কাজার রাজবংশের সবচেয়ে যোগ্য এবং সফল শাসক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার সময়ে পারস্যের ব্যাপক আধুনিকায়ন হয়। এর ফলে পারস্যে ইউরোপীয়দের প্রভাব-প্রতিপত্তি অনেক বৃদ্ধি পায়। কাজার রাজবংশ ছিল পারস্যের দীর্ঘস্থায়ী রাজবংশগুলোর মধ্যে একটি। তুর্কি বংশোদ্ভূত কাজার গোত্রের এ রাজবংশীয় শাসন স্থায়ী হয় ১৭৮৫ সাল থেকে ১৯২৫ সাল পর্যন্ত। এ রাজবংশের তৃতীয় রাজা ছিলেন শাহেনশাহ নাসিরউদ্দিন শাহ কাজার। পিতা মোহাম্মদ শাহ কাজারের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতা পান। তার শাসনকাল ছিল পারস্যের ইতিহাসের তৃতীয় দীর্ঘস্থায়ী শাসনকাল। ১৮৪৮-১৮৯৬ সালে আততায়ীর হাতে নিহত হন। নিহত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রায় অর্ধ শতাব্দী ব্যাপী তিনি পারস্যের শাসনকর্তা ছিলেন। নাসিরউদ্দিন শাহ কাজারের মেয়ে প্রিন্সেস ইসমতকে সেসময় সবচেয়ে সুন্দরী নারী হিসেবে বিবেচনা করা হত। প্রিন্সেস ইসমতের জীবন ছিল ক্ষনস্থায়ী। মাত্র ৫০ বছর বয়সে ১৯০৫ সালে তিনি মারা যান। প্রিন্সেস কাজারের প্রকৃত ইতিহাস খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। ছবিটি ভাইরাল হওয়ার পরই মানুষ আগ্রহী হয়ে ওঠে প্রিন্সেস কাজারের ব্যাপারে জানতে। কাজার সাম্রাজ্যের উপর ফারসি ভাষায় বেশ কিছু বই আছে। যেখানে নাসিরউদ্দিন শাহের শাসনামল নিয়েও ইতিহাস রচিত হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct